আলোচনা সভায় বক্তারা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২০ মে ২০২৩ ১৬:০৬ পিএম
আপডেট : ২০ মে ২০২৩ ১৭:৪১ পিএম
বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আপনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ও শান্তির দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভা। প্রবা ফটো
১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে নির্বাসিত করা হয়েছিল। ১৯৮১ সালের ১৭ মে শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মাধ্যমে বাংলাদেশে পুনরায় মুক্তিযুদ্ধের চেতনা প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের আয়োজনে শনিবার (২০ মে) সকাল ১১টায় রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে ‘আপনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন, আমাদের ফিরিয়ে দিয়েছে বঙ্গবন্ধুর উন্নয়ন ও শান্তির দর্শন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি অধ্যাপক আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সভাপতিত্বে অতিথিদের মধ্যে ছিলেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী। আলোচনা সভায় মূল নিবন্ধ পাঠ করেন অধ্যাপক মুনতাসীর মামুন।
আবদুর রাজ্জাক বলেন, ’১৭৫৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির লন্ডনে একটি অফিস ছিল। সেই অফিসের মাত্র দুটি জানালা ও একটি দরজা ছিল। ১৮৫৭ সালে সেই অফিস ইংল্যান্ডের সবচেয়ে বড় অফিসে পরিণত হয়। তারপর পাকিস্তানিদের শোষণের ইতিহাস তো সবারই জানা।’
তিনি বলেন, ’বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন আমাদের বাঙালি জাতির অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। তিনি একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গঠন করেছিলেন। দেশের অর্থনীতি, রাস্তা-ঘাট, মানুষের মাথাপিছু আয়, সংবিধানসহ সবক্ষেত্রে অবদান রেখে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর মতো করেই আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়েছেন। তিনি ফিরে না এলে আজকের বাংলাদেশ আমরা পেতাম কি না, সেই প্রশ্ন থেকেই যায়। তিনি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও নীতিকে ধারণ করে দেশকে বর্তমানে বিশ্বের কাছে উন্নয়নের রোল মডেলে পরিণত করেছেন।‘
মন্ত্রী আরও বলেন, ’আজকেও বাংলাদেশ ও প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে।’
মুনতাসীর মামুন বলেন, ’বিশ্লেষণ করে আমি দেখেছি, আওয়ামী লীগের দুঃসময়ে যারা পাশে থাকে সুসময়ে তাদের আওয়ামী লীগের পাশে রাখা হয় না। তাহলে তো ষড়যন্ত্র হবেই।’
তিনি বলেন, ’শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরে এলেন, তখন রাজনীতিতে যুক্ত না থাকলেও এটা বুঝেছিলাম মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের চাকা আবারও চলবে। তিনি দেশে ফিরে এসেছিলেন বলেই স্বাধীনতার ও বাংলাদেশের চেতনা আবারও জাগ্রত হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ’উন্নয়ন টিকে থাকে তখনোই যখন সাংস্কৃতিক উন্নয়ন ঘটে। সাংস্কৃতিক উন্নয়ন যুগের পর যুগ সমাজকে আলোকিত করবে। তাই সত্যিকারের উন্নয়ন ঘটাতে হলে সাংস্কৃতিক জিডিপির উন্নয়ন ঘটাতে হবে।’
ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, ’ইতিহাস কারও পক্ষে বলে আবার কারও বিপক্ষে বলে। ইতিহাসের নায়ক যারা তারা সব বাধা পেরিয়ে নিজেকে সেই অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যান। আর যারা ইতিহাসের খলনায়ক, তারা সর্বদা আস্তাকুঁড়ে পড়ে থাকে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার করা হয়েছে, কিন্তু যারা এই ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত তাদের বিচার কিন্তু করা হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ’শেখ হাসিনা যখন দেশে ফিরে এলেন তখন প্রকৃতি ও মানুষ সাদরে গ্রহণ করে নিয়েছিল। তিনি সারা বাংলা ঘুরে ঘুরে মানুষের অধিকার ও বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার চেয়েছেন। শেখ হাসিনা তার কয়েকটি কাজের জন্য তিনি ইতিহাসে জায়গা করে নিয়েছেন। তার মধ্যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, বাংলাদেশের অভাবনীয় উন্নয়ন ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে পুনরায় পুনর্বাসন করা উল্লেখযোগ্য।‘
ড. আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ’প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে রাজনীতি করে যাচ্ছেন। সে কারণেই তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশে ফিরে প্রথম বক্তৃতায় বলেছিলেন, ‘আমি আপনাদের সামরিক শাসন থেকে মুক্তি দিতে এসেছি, আওয়ামী লীগের সভাপতি হতে আসিনি।’ নানা চড়াই-উতরাই পার হয়ে শেখ হাসিনা সঠিক পথ হেঁটে যাচ্ছেন। তাই সবাইকে আগামীতে গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে থাকতে দেশের মানুষকে শেখ হাসিনার পাশে থাকতে হবে।’
আলোচনা সভায় বঙ্গবন্ধু পরিষদসহ বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন।