× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নির্বাচনী বছরে আগেভাগেই বই ছাপাতে চায় এনসিটিবি

সেলিম আহমেদ

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ১০:২৮ এএম

আপডেট : ২৭ এপ্রিল ২০২৩ ১২:০১ পিএম

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের বছর আগেভাগেই পাঠ্যবই ছাপার কাজ শেষ করতে চায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)। চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের প্রথম সপ্তাহে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজন করতে চায় নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরিকল্পনা মতো ওই সময়ে নির্বাচন হলে নভেম্বর থেকেই ব্যস্ত হয়ে পড়বে ছাপাখানাগুলো। তাই আগামী শিক্ষাবর্ষে সরকারিভাবে বিনামূল্যে বিতরণের বই ছাপার কাজ আগেভাগেই শেষ করতে চায় এনসিটিবি। এই লক্ষ্যে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে বই ছাপার দায়িত্বপ্রাপ্ত এই প্রতিষ্ঠানটি।

অক্টোবরের মধ্যে মাধ্যমিক আর সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের বই ছাপা-বাঁধাই শেষ করে নভেম্বরের মধ্যে সব বিদ্যালয়ে পাঠানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে দরপত্র প্রক্রিয়া, বই লেখার কাজ ও অন্যান্য প্রস্তুতি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বৈশ্বিক সংকটসহ নানা কারণে এবার বই ছাপাতে দেরি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা দেরিতে বই পেয়েছে। চলতি বছরের শেষে নির্বাচনী ডামাডোল শুরু হলে শ্রমিক সংকট দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া কাগজ উৎপাদন এবং ছাপাখানায় একসঙ্গে নির্বাচনীসামগ্রী ও পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে হিমশিম খাওয়ার শঙ্কা রয়েছে। বিষয়টি মাথায় রেখে এবার পাঠ্যপুস্তক ছাপার কাজ এগিয়ে আনা হয়েছে।

এনসিটিবির সদস্য (শিক্ষাক্রম) অধ্যাপক ড. মশিউজ্জামান জানান, চলতি বছর ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণিতে শুরু হওয়া নতুন শিক্ষাক্রমের ১৩টি বইয়ে ভুল ও অসংগতি  নিয়ে দেশজুড়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে। ইতোমধ্যেই বইগুলো সংশোধন করা হয়েছে; যা আগামী বছরও শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিতরণ করা হবে। এ ছাড়া আগামী বছর থেকে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম অনুযায়ী পাঠদান শুরু হবে। গত ৮ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে অষ্টম শ্রেণির বই লেখার কাজ। আগামী মে মাসের মধ্যে পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করা হবে। এরপর মে থেকে শুরু হবে নবম শ্রেণির বই লেখা। জুলাইয়ের মধ্যে এই শ্রেণির সব বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।

ড. মশিউজ্জামান বলেন, ‘এবার অন্য বছরের তুলনায় আগেভাগেই বই ছাপার কাজ শেষ করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। ইতোমধ্যেই বই লেখার কাজ শুরু হয়েছে। আমাদের টাইমফ্রেম অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই লেখা শেষ হবে।’

এনসিটিবির এক কর্মকর্তা বলেন, চলতি বছর নির্বাচনী বছর, তাই বইয়ে কোনো ত্রুটি কিংবা অসংগতি হলে তা নিয়ে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াতে পারে। তাই লেখকদের খুব সতর্কভাবে বই লিখতে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। লেখকরা বই লেখা শেষ করলে আমাদের বিশেষজ্ঞরাও বইগুলো আবার সম্পাদনা করবেন।

এনসিটিবি সূত্রে জানা গেছে, কয়েক ধাপে মাধ্যমিকের বই ছাপার দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। এর মধ্যে গত মার্চ মাসে দরপত্র আহ্বান প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। গত ১৭ এপ্রিল প্রথম দরপত্র আহ্বান করা হয়। বাকি দরপত্রগুলো শিগগির আহ্বান করা হবে। এরপর সব প্রক্রিয়া শেষ করে অক্টোবরের মধ্যেই বই ছাপার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে। গত বছর দরপত্র আহ্বান করা হয়েছিল জুন মাসে। এজন্য বই ছাপাতেও দেরি হয়েছিল। এবার যাতে সেটা না হয়, সেজন্য আগেভাগেই দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।

৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে আগামী বছরের জন্য প্রাথমিকের সব শ্রেণির বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও বিতরণ শেষ করতে চায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, বার্ষিক ক্রয় পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে আগামী বছরের প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের দরপত্র ইতোমধ্যেই অনুমোদন করা হয়েছে। এ ছাড়া দ্বিতীয় শ্রেণির বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্ত করা হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণির বইয়ের পাণ্ডুলিপি চূড়ান্তকরণের কাজ চলমান রয়েছে।

চার ধাপে প্রাথমিক পর্যায়ের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রথম ধাপ, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য দ্বিতীয় ধাপ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য তৃতীয় ধাপ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য চতুর্থ ধাপে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এনসিটিবি।

এনসিটিবি জানায়, উপযুক্ত দরদাতা পাওয়া না গেলে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হবে। ইন্সপেকশন এজেন্ট নিয়োগের প্রয়োজন থাকলে এনসিটিবি তা নিয়োগ করবে। সব পাঠ্যপুস্তকের ব্রাইটনেস ৮০ থেকে ৮২ রাখা হবে। এ ছাড়া থিকনেস ৮০ জিএসএম রাখারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এ বছর অনেক শিক্ষার্থী ছেড়া, কাটা, ছাপায় কালি বেশি বা কম হওয়া বই পেয়েছে। আবার বিতরণের সময়ই অনেক বই খুলে গেছে। তাই বই ছাপা ও বাধাইয়ের ক্ষেত্রে এসব বিষয়ও মাথায় রাখছে এনসিটিবি।

বই ছাপা নিয়ে সম্প্রতি এক সভায় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব ফরিদ আহাম্মদ বলেন, চলতি শিক্ষাবর্ষের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের সময়সূচি এগিয়ে আনা প্রয়োজন। কোনো মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে অপারগ হলে পুনঃদরপত্র আহ্বানের যথেষ্ট সুযোগ রাখা এবং প্রয়োজনে বিজি প্রেসের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।

এ বিষয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, জাতীয় নির্বাচনের বছর হওয়ায় বই ছাপার কাজ এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়া বই ছাপার কাজে প্রেস-মালিকদের জিম্মি করার একটা প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। এই প্রেস-মালিকদের বই ছাপাতে মেশিনের সক্ষমতার যতটুকু না অভাব, তার চেয়ে বড় অভাব তাদের ব্যবস্থাপনার। তাদের কারণে যেন নতুন বই পেতে বিলম্ব না হয়, সেটিও বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এসব নানা কারণেই নতুন বছরের বই ছাপার কাজ এগিয়ে আনা হয়েছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা