× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা উপেক্ষিত

রাশেদুল হাসান

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩৮ পিএম

আপডেট : ২৯ মার্চ ২০২৩ ১৩:৩৯ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

সড়কে দুর্ঘটনা কমানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৮ সাল থেকে এ পর্যন্ত কয়েক দফায় বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। দূরের পথে চালকদের যাতে পাঁচ ঘণ্টার বেশি গাড়ি চালাতে না হয় সেজন্য বিকল্প চালক রাখা, মহাসড়কের পাশে চালকদের জন্য বিশ্রামাগার তৈরি, চালকদের প্রশিক্ষণ, নিয়োগপত্র দেওয়ার মতো নির্দেশনা রয়েছে। সেগুলো আজও পুরোপুরি বাস্তবায়ন হয়নি। চালকরা এখনও না ঘুমিয়ে ক্লান্ত শরীরে দীর্ঘ পথে যাত্রী নিয়ে বাস চালান। ফলে প্রায়ই সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানি হয়।

সম্প্রতি খুলনার ফুলতলা থেকে ছেড়ে আসা ইমাদ পরিবহনের একটি বাস মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার কুতুবপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে দুর্ঘটনায় পড়লে ১৯ জন নিহত হন। চালক দীর্ঘ সময় চোখে ঘুম নিয়ে বাস চালাচ্ছিলেন বলে খবর মিলেছে। কিন্তু বাসমালিক ও সরকার কেউই প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়ন করছে না।

বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের শ্রম ও সমাজকল্যাণ বিষয়ক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন দুলাল বলেন, পাঁচ ঘণ্টার বেশি দূরত্বে যেমন ঢাকা-কক্সবাজার, গাইবান্ধা-চট্টগ্রাম পথে এখনও বিকল্প চালক রাখা হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘এখনও মালিকদের শুভবুদ্ধির উদয় হয় নাই। মালিকরা দূরপাল্লার বাসের জন্য চালকদের কাজের শিফটিং ভাগ করে দেন না। মালিকরা বলেন, তুমি ঢাকা থেকে গাইবান্ধা যাবা আবার আসবা। তুমি এত টাকা পাইবা। আমাদের তো নিয়োগপত্র নাই। কাজ করলে টাকা, না করলে নাই। ধরেন, যে গাড়িগুলো গাইবান্ধা থেকে কক্সবাজার যায়, চালকদের একবার যেতে-আসতে পাঁচ দিন গাড়ি চালাতে হয়। তখন তো চোখে ঘুম নিয়ে চালাবেই। সরকার আইন করুক, কোনো একজন ড্রাইভার দুই-তিন দিন একটানা গাড়ি চালাতে পারবে না। যারা মানবে না জরিমানা করুক। তা তো করছে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এখনও চালকদের জন্য বিশ্রামের ব্যবস্থা করতে পারেনি। তারা ব্যস্ত আছে চালকদের কাছে কীভাবে চাঁদাবাজি করা যাবে। ড্রাইভারকে সুবিধা দিলে সড়ক নিরাপদ হবে। তা ছাড়া আর কোনো রাস্তা নাই।’

এ বিষযে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির কোষাধ্যক্ষ আজমল উদ্দিন আহম্মেদ সবুর প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘ঢাকা থেকে খুলনা আসতে এখন তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা লাগে। এর বেশি লাগে না। ঢাকা থেকে খুলনায় পৌঁছে ড্রাইভার বিশ্রাম নিতে পারেন। এখানে দুই ট্রিপের বেশি কেউই পায় না। কারণ ড্রাইভার আমাদের অনেক আছে। আবার যেসব জায়গায় একটু বেশি সময় লাগে, সেখানে একজন ড্রাইভার শুধু চালিয়ে নিয়ে যায়। নিয়ে আসে আরেকজন।’ তবে তিনি স্বীকার করেন, ‘ঢাকা-কক্সবাজারের মতো লম্বা রুটে দুইজন চালক রাখা হয় না।’ তার দাবি এ রুটের বাস বেশি দুর্ঘটনায় পড়ে না। 

চালকদের নিয়োগপত্রের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা চালকদের নিয়োগপত্র দিতে চাই, কিন্তু এটা তারা চায় না। আজ একজন চালক একটি গাড়ি চালায়, সেই গাড়িতে একটা দুর্ঘটনা ঘটিয়ে কালকে আরেকটা চালায়। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খান ও সাধারণ সম্পাদক ওসমান ভাইয়ের (ওসমান আলী) সামনেই অফার করা হইছে। তাদেরও তো গাড়ি আছে। তারা তাদের গাড়ির চালকদের নিয়োগপত্র ও বেতন দেন না কেন? আসলে তারাও এটা চান না।’

সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) সূত্র বলছে, মহাসড়কের পাশে দুটি বিশ্রামাগার নির্মাণ করা হয়েছে। কিন্তু তা অপর্যাপ্ত। তা ছাড়া এগুলো চালকদের জন্য খুলে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে সওজের প্রধান প্রকৌশলী মো. ইসহাক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা বাস্তবায়নে আমরা ইতোমধ্যে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লার নিমসারে ও বঙ্গবন্ধু সেতুর পশ্চিমে মহাসড়কে সিরাজগঞ্জের পাঁচলিয়ায় গড়ে তুলেছি দুটি অত্যাধুনিক বিশ্রামাগার। এগুলো আমরা টেন্ডার দিয়ে দেব। শিগগিরই এগুলো চালকরা ব্যবহার করতে পারবেন। আমাদের আরও দুটি বিশ্রামাগার নির্মাণাধীন আছে। এ ছাড়া আমাদের আরও কিছু বিশ্রামাগার নির্মাণের পরিকল্পনা আছে।’

আরও নাজুক অবস্থায় আছে চালকদের প্রশিক্ষণের দিকটি। বর্তমান গণপরিবহন চালকদের এমন কোনো প্রশিক্ষণ বা ওরিয়েন্টেশন নেই যা থেকে তারা সচেতন ও দক্ষ চালক হয়ে উঠবেন। বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের প্রশিক্ষক আবুল বাশার বলেন, ‘সড়ক নিরাপদ করতে হলে চালকদের প্রশিক্ষণ অতীব জরুরি। সেই প্রশিক্ষণ এখন ঠিকভাবে হয় না। করোনার আগে আমরা একটি প্রকল্পের আওতায় চালকদের দুই দিনের প্রশিক্ষণ দিতাম। এখন সেই প্রশিক্ষণ এক দিনে করা হয়। তা-ও দুই থেকে তিন ঘণ্টার জন্য হয়। দুই দিনের কাজ নামকাওয়াস্তে দুই ঘণ্টায় হচ্ছে, যা যথেষ্ট না।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা