প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ মার্চ ২০২৩ ০০:১২ এএম
আপডেট : ২৪ মার্চ ২০২৩ ১০:৫৮ এএম
দৈনিক শাহনামার প্রধান বার্তা সম্পাদক মামুনুর রশিদ নোমানি। সংগৃহীত ফটো
সাংবাদিক মামুনুর রশিদ নোমানির বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সাংবাদিকদের অধিকার নিয়ে কাজ করা আন্তর্জাতিক সংগঠন কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে)।
বুধবার (২২ মার্চ) এক বিবৃতিতে সিপিজে জানায়, বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর বরিশালের সাংবাদিক নোমানির বিরুদ্ধে আনীত সব অভিযোগ অবিলম্বে প্রত্যাহার করতে হবে এবং প্রতিশোধ নেওয়ার আতঙ্কমুক্ত পরিবেশে তাকে সাংবাদিকতা করতে দিতে হবে।
বেসরকারি মালিকানাধীন দৈনিক শাহনামার প্রধান বার্তা সম্পাদক নোমানি একই সঙ্গে বরিশালের খবর নামে সংবাদভিত্তিক ওয়েবসাইটেরও সম্পাদক। ২০২০ সালে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দুটি ধারার অধীনে তিনি ও অন্য দুজনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়। এ বিষয়ে সাংবাদিকরা ফোনে সিপিজেকে তথ্য দিয়েছেন। সিপিজেও চার্জশিট পর্যালোচনা করেছে।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গোপনে স্থানীয় একজন মেয়র এবং তার পরিবারের ভিডিও রেকর্ড করেছেন নোমানি ও তার দুই বন্ধু। সিপিজের কাছে এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন সাংবাদিক নোমানি।
‘এটা অযৌক্তিক যে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ সাংবাদিক মামুনুর রশিদ নোমানিকে কোনো সুনির্দিষ্ট প্রমাণ ছাড়াই এক বছরের পুরোনো মামলায় কঠোর ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে অভিযুক্ত করেছে,’ বলেছেন সিপিজে-এর এশিয়া প্রোগ্রাম সমন্বয়কারী বেহ লিহ ইয়ি।
‘কর্তৃপক্ষকে অবিলম্বে নোমানির বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রত্যাহার করতে হবে এবং ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে সাংবাদিকদের হয়রানি বন্ধ করতে হবে, যা বারবার সংবাদমাধ্যমকে স্তব্ধ করার জন্য ব্যবহৃত হয়েছে।’
চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে, নোমানি এবং তার বন্ধুরা ব্যক্তিগত তথ্যের অননুমোদিত সংগ্রহ এবং অবৈধভাবে তথ্য ধারণ বা স্থানান্তর সংক্রান্ত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা লঙ্ঘন করেছেন।
আওয়ামী লীগের স্থানীয় একজন কর্মকর্তা সৈয়দ আহমেদ মান্নার অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে এই তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত শুরু করে পুলিশ। ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে এ মামলায় নোমানিকে ১৭ দিন আটক রাখা হয়। মান্না তার অভিযোগে বলেন, বরিশালের মেয়র ও বরিশাল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহ, তার স্ত্রী ও সন্তানদের বিষয়ে গোপনে ভিডিও ধারণ করেছেন সাংবাদিক নোমানি ও তার বন্ধুরা।
আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালের জুলাইয়ে নোমানির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে কর্তৃপক্ষ। এ বিষয়ে নোমানিকে কিছুই জানানো হয়নি। নোমানি বলেন, ২০২২ সালের ডিসেম্বরের শেষের দিকে অন্তর্বর্তী জামিন আবেদন করেন তিনি। এ সময়ই তাকে অভিযোগ সম্পর্কে বরিশাল সাইবার ট্রাইব্যুনালের একজন কেরানি অবহিত করেন।
২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার সিআইডি ফরেনসিক রিপোর্টে বলে, বরিশালের ওই মেয়রের ভিডিও ধারণ করতে নোমানি তার ফোন ব্যবহার করেছেন কি না, তারা তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়নি। এই ফরেনসিক রিপোর্ট পর্যালোচনা করেছে সিপিজেও। সিআইডির ওই রিপোর্টের উল্লেখ করে জানুয়ারিতে মামলা থেকে অব্যাহতি চেয়ে আবেদন করেন নোমানি। তিনি বলেন, সেই আবেদনের ওপর শুনানি হবে ৪ এপ্রিল।
নোমানি এসব অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন। তিনি দাবি করেন, ঘটনার রাতে তিনি এবং তার বন্ধুরা মেয়র আবদল্লাহকে অভিনন্দন জানান। কিন্তু মেয়র ও তার সহযোগীরা এ সময় সাংবাদিকদের ফোন কেড়ে নেন। তাদের মারধর করেন। শহরে বন্যা সমস্যা সমাধানে গৃহীত পদক্ষেপের ঘাটতির বিষয়ে বরিশাল সিটি করপোরেশন নিয়ে রিপোর্ট করেছিলেন নেমানি। এর প্রতিশোধ নিতে তাকে কয়েক মিনিট একটি নদীতে চোবায় তারা।