২০২৪ শিক্ষাবর্ষ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০২ মার্চ ২০২৩ ২১:৪৫ পিএম
আপডেট : ০২ মার্চ ২০২৩ ২২:১৯ পিএম
বিভিন্ন শ্রেণির পাঠ্যবই। ফাইল ছবি
নানা জটিলতায় চলতি বছরের প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের হাতে সব বই তুলে দিতে পারেনি সরকার। ছাপা-বাঁধাই শেষে প্রস্তুত হয়ে সব বই শিক্ষার্থীর হাতে পৌঁছাতে সময় লেগেছে প্রায় দুই মাস। শুধু তাই নয়, সমালোচনার মুখে প্রত্যাহারও করা হয়েছে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির দুটি বই। এমন তিক্ত অভিজ্ঞতার আলোকে আগামী ২০২৪ শিক্ষাবর্ষের বই দ্রুত ছাপাতে চায় সরকার। চলতি বছরের সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রাথমিকের আর অক্টোবরের মধ্যে মাধ্যমিকের পাঠ্যবই ছাপার কাজ ও সরবরাহ শেষ করার চিন্তা করা হচ্ছে। ইতোমধ্যেই তৈরি করা হয়েছে কর্মপরিকল্পনা।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শেষে কিংবা আগামী বছরের শুরুতেই জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে। আর নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শ্রমিক-সংকট দেখা দেবে। অন্যদিকে কাগজ উৎপাদনকারী এবং মুদ্রণকারীরা একসঙ্গে নির্বাচনী সামগ্রী এবং বই মুদ্রণ করতে পারবেন কি না, তা নিয়েও শঙ্কা রয়েছে। এমন বাস্তবতা সামনে রেখে নতুন বই ছাপার কাজ এগিয়ে আনা হয়েছে।
আগামী শিক্ষাবর্ষের পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণ, বাঁধাই ও সরবরাহের জন্য অ্যানুয়াল প্রকিউরমেন্ট প্ল্যান (এপিপি) ও টাইম বাউন্ড অ্যাকশন প্ল্যান (টিএপি) অনুমোদনসংক্রান্ত একটি সভা গত ২০ ফেব্রুয়ারি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রাথমিকের সচিব ফরিদ আহাম্মদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিপিই) শাহ রেজওয়ান হায়াতসহ অন্যরা অংশ নেন।
ওই সভায় ডিপিই মহাপরিচালক শাহ রেজওয়ান হায়াত অন্য বছরের তুলনায় আগামী শিক্ষা বছরের জন্য পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের কার্যক্রম এগিয়ে আনার পক্ষে মত দেন। তিনি বলেন, ’নির্বাচনকে সামনে রেখে এদিকে যেমন শ্রমিক-সংকট দেখা দেবে, অন্যদিকে কাগজ উৎপাদনকারী এবং মুদ্রণকারীরা একসঙ্গে নির্বাচনী সামগ্রী এবং বই মুদ্রণ করতে গিয়ে প্রতিকূল পরিস্থিতির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’
বিষয়টি আমলে নিয়ে গণশিক্ষা সচিব বলেন, ’চলতি শিক্ষাবর্ষের অভিজ্ঞতা ও বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের সময়সূচি এগিয়ে আনা প্রয়োজন। কোনো মুদ্রণ-প্রতিষ্ঠানে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণে অপারগ হলে পুনঃদরপত্র আহ্বানের যথেষ্ট সুযোগ রাখা এবং প্রয়োজনে বিজি প্রেসের মাধ্যমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে পাঠ্যপুস্তক মুদ্রণের ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
সভা সূত্র জানায়, এবার চার ধাপে প্রাথমিক পর্যায়ের দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির জন্য প্রথম ধাপ, প্রাক-প্রাথমিকের জন্য দ্বিতীয় ধাপ, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জন্য তৃতীয় ধাপ এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় শ্রেণির জন্য চতুর্থ ধাপে দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করবে এনসিটিবি। রেসপনসিভ দরদাতা পাওয়া না গেলে পরবর্তী তিন কার্যদিবসের মধ্যে পুনঃদরপত্র আহ্বান করতে হবে। সকল পাঠ্যপুস্তকের ব্রাইটনেস ৮০ থেকে ৮২ রাখতে হবে, এ ছাড়া থিকনেস ৮০ জিএসএম রাখার মত দেন সভার উপস্থিতরা।
বিষয়টি নিয়ে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. ফরহাদুল ইসলাম বলেন, ‘বই ছাপার কাজ এগিয়ে আনতে ইতোমধ্যেই প্রাথমিকের প্রথম, চতুর্থ ও পঞ্চম শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে। আগামী শিক্ষাবর্ষে অষ্টম ও নবম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম চালু হবে। এসব শ্রেণিতে নতুন বই সংযোজন হবে। সার্বিক বিবেচনায় মাধ্যমিকের সব বই ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই ছাপা ও সরবরাহ শেষ করতে চাই। এ লক্ষ্যে চলতি মাসের ১৫ মার্চের মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার আহ্বান করা হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে অন্য শ্রেণির বই ছাপার টেন্ডার দেওয়া হবে।’