প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৩ ১২:৪৪ পিএম
আপডেট : ০১ মার্চ ২০২৩ ১৪:৪২ পিএম
ফাইল ফটো
জাতীয় পরিচয়পত্র ও জন্ম নিবন্ধন ব্যবহার বাধ্যতামূলক করে টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। বুধবার (১ মার্চ) সকালে ঢাকার কমলাপুর স্টেশনে এক অনুষ্ঠানে নতুন পদ্ধতিতে টিকিট বিক্রির প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। পাশাপাশি আন্তঃনগর ট্রেনে টিকিটবিহীন যাত্রীদের জরিমানা টিকিট কাটতে ভ্রাম্যমাণ টিকিট পরিদর্শকদের মাঝে ১০০টি পস মেশিন হস্তান্তর করেন।
মন্ত্রী এ সময় বলেন, ‘টিকেট যার ভ্রমণ তার-এই স্লোগানে যাত্রীরা যেন কিছু সুবিধা পেতে পারে এবং টিকিট প্রাপ্তির ক্ষেত্রে যেই অভিযোগগুলো পাওয়া যেতো আমরা নিজেরাও বিভিন্ন সময় চেষ্টা করেছি। বিনা টিকিটে ভ্রমণ করেছে। টিকেট পাওয়া যেন আরো সহজলভ্য করা যায়। কোনোরকম অভিযোগ ছাড়াই যাত্রীদের সেবা পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে, সেই চেষ্টা করছি। এটিই শেষ নয়।’
নতুন এ পদ্ধতিতে রেলের টিকিট কাটতে জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা জন্মনিবন্ধন লাগবে। বিদেশি নাগরিকদের টিকেট কিনতে হবে পাসপোর্ট দেখিয়ে। একজনের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে টিকেট কেটে অন্য কেউ ট্রেনে ভ্রমণ করতে পারবেন না।
মন্ত্রী বলেন, ‘টিকিট কালোবাজারি বন্ধ করতে এ প্রচেষ্টা, তবে পুরোপুরি বন্ধ হবে কিনা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।’
‘আমরা চেষ্টা করছি টিকিট যাতে কালোবাজারি হতে না পারে। দেশের মানুষের শিক্ষা ও আইটি জ্ঞান কম থাকায় শতভাগ সফলতা আসতে বিলম্ব হতে পারে। যাত্রীদের সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্য ও সহজলভ্য করার উদ্দেশ্য এই পদ্ধতি বাস্তবায়ন করছে রেলওয়ে। প্রয়োজনে যাত্রীদের মতামত নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
এদিকে মন্ত্রী টিকিট সজলভ্যতার কথা বললেও সকালে নতুন পদ্ধতিতে টিকিট কাটতে গিয়ে ভোগান্তির কথা জানিয়েছেন যাত্রীরা। তারা বলেন, কাউন্টারে গিয়ে তারা জানতে পারেন জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্মনিবন্ধন নম্বর লাগবে। না জেনে যারা এসেছেন তারা ভিড় জমান কাউন্টারের পাশে একটি নিবন্ধন সহায়তা বুথে। একমাত্র বুথ হওয়ায় ভিড় দেখা যায় সেখানে। অনেকে বিরক্তি প্রকাশ করেন সেখানে।
ময়মনসিংহের যাত্রী রহিমা বেগম স্টেশনে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আমার নিবন্ধন লাগবে রেলের লোক তো কথাই কইতে চায় না। একবার দেইখা বলে হবে না, তারপর আর কথা কয় না।’ এ সময় তিনি মোবাইল দিয়ে নিবন্ধনের চেষ্টা করছিলেন।’
তবে বুথের সংখ্যা বাড়ানো হবে উল্লেখ করে নুরুল ইসলাম সুজন বলেন, ‘রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কোনো যাত্রী টিকিট পাবে না। প্রাথমিকভাবে আন্তঃনগর এটি বাস্তবায়ন হচ্ছে। পরবর্তীতে এটি বিস্তৃত করা হবে।’
রেলপথমন্ত্রী বলেন, ‘৫০ ভাগ অনলাইনে এবং ৫০ ভাগ কাউন্টার থেকে টিকিট দেওয়া হবে। কিন্তু কোনোক্রমে রেজিস্ট্রেশন ছাড়া টিকেট পাওয়া যাবে না। আগে টিকিট হলেই একজন যাত্রী ভ্রমণ করতে পারতো, এখন আপনার টিকেটে আপনাকে ভ্রমণ করতে হবে। টিকেট থাকলেই ভ্রমণ করা যাবে না।
‘এর আগে সুযোগ ছিল পাঁচটা বা দশটার টিকিট কেটে কালোবাজারি করে বিক্রি করা যেতো। অন্যের টিকিট নিয়েই অনেকে ভ্রমন করতে পারত। এখন সেটা পারবে না। আর বিনা টিকিটে কেউ ভ্রমণ করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
টিকিট কাটা ও ফেরত দেওয়ার বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘অনলাইনে টিকিট করলে কোনো যাত্রী যেকোনো জায়গা থেকে টিকিট কাটতে পারবে। অনলাইনের মাধ্যমে বাড়িতে বসেই টিকিটের টাকা ফেরতও নিতে পারবে, কাউন্টারে আসতে হবে না। গত ১৫ দিনে ৪ লাখ মানুষ অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন করেছে।’