× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ধানের মৌসুমে বাড়ছে চালের দাম

হুমায়ুন মাসুদ, চট্টগ্রাম

প্রকাশ : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১০:৪৫ এএম

আপডেট : ২৯ জানুয়ারি ২০২৩ ১১:২৮ এএম

ধানের দাম ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে এ সময়ে বাড়ছে চালের দাম। প্রবা ফটো

ধানের দাম ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে এ সময়ে বাড়ছে চালের দাম। প্রবা ফটো

চলছে আমনের মৌসুম। অগ্রহায়ণ-পৌষে আমনের ফসল ঘরে তোলেন কৃষক। নতুন ধানের জোগান থাকায় জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে চালের বাজারে দাম থাকে কমতির দিকে। আবহমানকাল ধরে চলে আসা এমন রীতি গত কয়েক বছরে পাল্টে গেছে। সেই ধারাবাহিকতায় এবারও ধানের মৌসুমে বাড়ছে চালের দাম। 

কিন্তু কেন? বিক্রেতারা বলছেন, সরবরাহকারীরা দাম বেশি নিচ্ছেন বলেই বেশি দামে চাল বিক্রি করতে হচ্ছে। সরবরাহকারীরা দুষছেন মিলার ও আমদানিকারদের।

আমদানিকারকরা বলছেন, আমদানির খরচ চেড়েছে। ডলার সংকটে এলসি খুলতে না পারায় এমন পরিস্থিতি হচ্ছে বলেও দাবি তাদের। এদিকে মিলাররা বলছেন, ধানের দাম ও উৎপাদন খরচ বৃদ্ধির কারণে এ সময়ে চালের দাম বাড়ছে। কেউ কেউ দুষছেন বড় শিল্পগ্রুপগুলোকে; দেশের চালের বাজার এখন যাদের নিয়ন্ত্রণে, তাদের কারসাজির কারণেই ধানের মৌসুমে চালের দাম বাড়ছে বলে দাবি অনেক ব্যবসায়ীর। 

দাম বৃদ্ধির প্রকৃত দায় আসলে কার- এসব পাল্টাপাল্টি বক্তব্য থেকে তা বোঝা দুষ্কর। তবে দাম বৃদ্ধির ধকলটা যে শেষ পর্যন্ত ভোক্তাকেই পোহাতে হচ্ছে বাজার ঘুরে স্পষ্টভাবেই বোঝা গেল তা। 

গতকাল শনিবার চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী বাজারের একাধিক চালের আড়ত ঘুরে দেখা যায়, প্রতি বস্তা (৫০ কেজি) মোটা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, স্বর্ণা সিদ্ধ চাল বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৪০০, পারিজা সিদ্ধ ২ হাজার ৫৫০, মিনিকেট সিদ্ধ ২ হাজার ৮৫০, জিরাশাইল ৩ হাজার ৫৭০, নাজিরশাইল ৩ হাজার ৯০০ টাকায়। অন্যদিকে ভারত থেকে আমদানি করা বেতি আতপ চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতি বস্তা ২ হাজার ৭৫০ টাকায়, মিনিকেট আতপ ৩ হাজার, পারিজা আতপ ২ হাজার ৭০০, কাটারি আতপ ৩ হাজার ৮০০ এবং চিনিগুঁড়া বিক্রি হচ্ছে ৬ হাজার ৮০০ থেকে ৭ হাজার টাকায়। 

ব্যবসায়ীরা জানালেন, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে বেশিরভাগ চালের দাম প্রতি বস্তায় ৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। সবচেয়ে বেড়েছে চিনিগুঁড়া চালের দাম। বস্তাপ্রতি দাম বেড়েছে ৮০০ থেকে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত। অর্থাৎ প্রতি কেজির দাম এক সপ্তাহের মধ্যে ১৮ থেকে ২০ টাকা বেড়েছে। আমদানি করা চালের মধ্যে ভারতের বেতি আতপের দাম বেড়েছে বস্তায় ৩০০ টাকা করে।

এর কারণ জানতে চাইলে পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এসএম নিজাম উদ্দিন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘গত কয়েকদিন হঠাৎ আবার চালের দাম বাড়ছে। মিলার পর্যায় থেকেই দাম বাড়ানো হচ্ছে। বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা দাম বাড়িয়েছেন মিলাররা।’

বড় শিল্পগ্রুপগুলো চালের ব্যবসায় আসার পর ধানের মৌসুমেও পণ্যটির দাম বাড়ছে বলে অভিযোগ করে এই ব্যবসায়ী আরও বলেন, ‘মৌসুমে দাম কমে ঠিক, কিন্তু মিলাররা বাড়ালে ব্যবসায়ীদের কিছু করার থাকে না। বড় শিল্পগ্রুপগুলো মৌসুমে ধান কিনে মজুদ করে রাখায় এ সময় বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়।’

ব্যবসায়ীদের এমন অভিযোগ মানতে নারাজ সরবরাহকারীরা। পাহাড়তলী বাজারে চাল সরবরাহকারী দিনাজপুরের সাহা ব্রাদার্সের মালিক প্রশান্ত সাহা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধিসহ বিভিন্ন কারণে এখন চাল উৎপাদনে আগের চেয়ে বেশি খরচ হচ্ছে। উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বস্তাপ্রতি ৫০ থেকে ১০০ টাকা বেড়েছে।’

চিনিগুঁড়া চালের দাম বেড়ে যাওয়ার কারণ সম্পর্কে প্রশান্ত সাহা বলেন, ‘ধানের দাম বেড়ে যাওয়ায় চিনিগুঁড়া আতপ চালের দাম বেড়েছে। প্রতিমণ ধান কিনতে এখন খরচ পড়ছে ৩ হাজার টাকা। দুই মণ ধান থেকে এক বস্তা (৫০ কেজি) চাল হয়। সেই হিসেবে উৎপাদন খরচ ছাড়াই প্রতিকেজি চালের দাম পড়ছে ১২০ টাকা। উৎপাদন খরচসহ ওই চাল আমরা বিক্রি করছি ১৩০ টাকায়।’

আমদানি করা চালের দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে জানতে চাইলে ডলার সংকট ও এলসি খোলায় জটিলতার কথা জানান চাক্তাই এলাকার চাল ব্যবসায়ী নিউ মক্কা রাইস এজেন্সির মালিক মোহাম্মদ রাসেল।

প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘ডলার সংকটে ভারত থেকে চাল আমদানি স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কমেছে। অন্যদিকে ভারতে এখন চালের দামও একটু বেশি। তাই বাজারে ভারতের চালের দাম বেড়েছে।’

এই ব্যবসায়ীর অভিযোগ, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ডলার সংকট স্বাভাবিক হয়েছে দাবি করা হলেও পরিস্থিতি এখনও আগের মতোই।

মোহাম্মদ রাসেল বলেন, ‘আমরা ব্যাংকে গিয়ে এলসি খুলতে পারছি না। ডলার সংকটে গত বছরের শেষদিকে এলসি কমিয়ে দেয় ব্যাংক। এটি এখনও স্বাভাবিক হয়নি। ব্যাংকে গিয়ে গত দুই-আড়াই মাসে আমরা কোনো এলসি করতে পারিনি।’

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা