প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ১৬ আগস্ট ২০২২ ১৬:০৪ পিএম
আপডেট : ১৬ আগস্ট ২০২২ ১৬:৩২ পিএম
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ফটো
রাশিয়া থেকে জ্বালানি তেল কীভাবে আমদানি করা যায়, তার উপায় খুঁজে বের করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে পারে, তাহলে বাংলাদেশ কেন পারবে না?
জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী এই নির্দেশনা দিয়েছেন।রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে একনেক-পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা জানান পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
সংবাদ সম্মেলনে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘বৈঠকে দেশের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনার এক পর্যায়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত যদি রাশিয়া থেকে তেল আমদানি করতে পারে, তাহলে আমরা কেন পারব না?’
রাশিয়ার কাছ থেকে তেল আমদানি করা গেলে বিনিময় মুদ্রা কী হবে, সে বিষয়েও একটি সমাধান খুঁজে বের করতে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান মান্নান।
যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের পরে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম তেল উৎপাদনকারী দেশ রাশিয়া আগে প্রতিদিন প্রায় ৫ মিলিয়ন ব্যারেল অপরিশোধিত তেল রপ্তানি করত, যার অর্ধেকের বেশি যেত ইউরোপে।
গত ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে আগ্রাসন শুরু করলে যুক্তরাষ্ট্র এবং তাদের ইউরোপীয় মিত্ররা একের পর এক অবরোধ আরোপ শুরু করে রাশিয়ার ওপর।
এক পর্যায়ে যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার তেলের ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেয়। ইউরোপীয় ইউনিয়নও জ্বালানির জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে আনার ঘোষণা দেয়।
নিষেধাজ্ঞার মুখে অন্য ক্রেতারা রাশিয়া তেল কেনা থেকে পিছু হটলেও বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ তেল আমদানিকারক ও ভোক্তা দেশ ভারত সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ব্যাপক মূল্য ছাড়ে তাৎক্ষণিক টেন্ডারের মাধ্যমে রাশিয়া থেকে বাড়তি তেল কেনা শুরু করে। চীনও আবার রাশিয়া থেকে তেল কেনা বাড়িয়েছে বলে খবর এসেছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে।
এমনিতে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার কারণে রাশিয়ার তেল কিনতে অন্য দেশের বাধা নেই। তবে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপড়েনের মধ্যে রাশিয়া থেকে ভারতের অতরিক্ত তেল কেনার বিষয়টি যে যুক্তরাষ্ট্র ভালোভাবে নেয়নি, তা স্পষ্ট করেই বলেছে ওয়াশিংটন।
রাশিয়ার পণ্য কেনার ক্ষেত্রে দাম পরিশোধ নিয়েও জটিলতা রয়েছে। সুইফটে নিষেধাজ্ঞার কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে ডলারে দাম পরিশোধ সম্ভব না। আর রাশিয়াও অনেক দেশের ক্ষেত্রে রুবলে দাম পরিশোধের শর্ত দিচ্ছে।
যুদ্ধ শুরুর পরপর বিশ্ববাজারে অপরিশোধিত জ্বালানি তেলের দাম ব্যারেলে ১৩০ ডলার ছাড়িয়ে গেলেও এখন তা কিছুটা কমে এসেছে। কিন্তু তেল আমদানির খরচ বেড়ে যাওয়ায় ভর্তুকি কমাতে আর ডলার বাঁচাতে সরকার আগস্টের শুরুতে জ্বালানি তেলের দাম ৫০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়িয়েছে, যার প্রভাবে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে গেছে অনেকটা।
তেল বাঁচাতে সরকার বিদ্যুৎ উৎপাদনও কমিয়ে দিয়েছে, পরিস্থিতি সামাল দিতে রুটিন করে সব এলাকায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে।
বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত মে মাসে জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশে অপরিশোধিত জ্বালানি তেল বিক্রির প্রস্তাব দিয়েছে রশিয়া।
তবে রাশিয়ার তেল বাংলাদেশের রিফাইনারিতে ‘পরিশোধনযোগ্য নয়’ জানিয়ে ওই প্রস্তাব এড়িয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত সে সময় দিয়েছিলেন তিনি।
প্রবা/রাই/জেআই