প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুন ২০২৫ ১৫:৪৫ পিএম
ঈদের ছুটি শেষে নির্বাচন কমিশন আগামী রোববার থেকে শুরু করবে নির্বাচনের রোডম্যাপ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা এবং প্রস্তুতি। আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধে হবে জাতীয় সংসদ নির্বাচন- প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের এ ঘোষণার পর আগ্রহ বেড়েছে ইসির রুটিন কার্যক্রমে। ইসি সূত্র বলছে, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতিতে গতি আনছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। তবে ঈদুল আজহার ছুটি থাকায় কমিশন এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক বৈঠকে বসতে পারেনি।
নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা বলছেন, রুটিন কার্যক্রম আগেই শুরু হয়েছিল। এখন কাজ আরও গুছিয়ে নেওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। কমিশনের প্রস্তুতির বড় অংশগুলোর মধ্যে রয়েছে- ছবিসহ ভোটার তালিকা হালনাগাদ, সীমানা পুনর্নির্ধারণ, ভোটকেন্দ্র নির্ধারণ, উপযুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগ ও প্রশিক্ষণ, নতুন রাজনৈতিক দল ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন। এর মধ্যে বেশকিছু প্রস্তুতি নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে শেষ করতে হয়। এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক কাজগুলো এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে।
জানা যায়, ২০২৬ সালের ১ জানুয়ারি পর্যন্ত সময়ে যারা ১৮ বছর পূর্ণ করবেন এমন ৬০ লাখের বেশি নতুন ভোটারকে এবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এ ছাড়া কাজ চলছে ২০ লাখ মৃত ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ দেওয়ার কাজও।
ইসি সূত্র জানায়, ২০২৫ সালের ডিসেম্বর নির্বাচনের সময় ধরে জুলাইয়ে কর্মপরিকল্পনা ঘোষণার প্রস্তুতি চলছিল। কিন্তু এখন নতুন সময়সীমায় তা পরিবর্তন হচ্ছে। এ ছাড়া নির্বাচন ঘিরে আচরণবিধি, কেন্দ্র স্থাপন নীতিমালা এবং আইন-বিধি সংস্কারের কাজও চলছে।
নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ। এই প্রক্রিয়ায় ভোটার সংখ্যা, ভৌগোলিক কাঠামো ও প্রশাসনিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে আসনগুলোর সীমারেখা ঠিক করা হয়। বর্তমানে এই প্রাথমিক কাজ চলছে বলেও জানা যায়।
নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন ও দেশি পর্যবেক্ষক সংস্থার অনুমোদন নিয়েও ইসি কাজ করছে। নিবন্ধনের জন্য আবেদন পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট দলের সাংগঠনিক কাঠামো, কার্যক্রম ও নিয়মনীতি যাচাই করা হচ্ছে। এ ছাড়া আগেভাগেই কিছু বিধিমালা হালনাগাদ করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে। ইসি সূত্র জানায়, আচরণবিধি, নির্বাচন পরিচালনা নীতিমালা, ভোটকেন্দ্র স্থাপন সংক্রান্ত নিয়মাবলি সময়মতো সংশোধন করে প্রকাশ করার পরিকল্পনা কমিশনের রয়েছে।
এ ছাড়া নির্বাচনকালীন কর্মকর্তাদের প্রশিক্ষণ কার্যক্রম যথাসময়ে শুরু হবে। জেলা প্রশাসক, ইউএনও এবং ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাদের মাধ্যমে দায়িত্ব বণ্টন করা হবে। নির্বাচন যত এগিয়ে আসবে, তত দ্রুত এই ধাপগুলো সম্পন্ন হবে।
রিটার্নিং ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের নিয়োগ দেওয়া হবে তফসিল ঘোষণার সময়। বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তাদের তালিকা চূড়ান্ত করে প্রশিক্ষণও শুরু হবে সে সময়েই।
নির্বাচন বিশ্লেষক এবং সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সময় বাড়ায় নির্বাচন কমিশনের জন্য প্রস্তুতির সুযোগও বাড়ছে। ইসি এবার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করতে পারবে বলেও তিনি প্রত্যাশা করেন।