× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা

বাংলাদেশের করনীয় নিয়ে যা বললেন বিশ্লেষকরা

মামুন রশীদ

প্রকাশ : ০৮ মে ২০২৫ ১৮:৫৮ পিএম

বাংলাদেশের করনীয় নিয়ে যা বললেন বিশ্লেষকরা

কাশ্মিরের পেহেলগামে সশস্ত্র ব্যক্তিদের হামলায় ২৬ পর্যটক নিহতের ঘটনায় ভারত ও পাকিস্তানের সম্পর্কের উত্তেজনার পারদ ঊর্ধ্বমুখী। উপমহাদেশের দুই পারমানবিক শক্তির পরস্পরের প্রতি হুমকি-ধমকি ও উত্তেজনা প্রতিবেশী দেশগুলোর কপালেও ফেলেছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে- এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশে কী ধরনের প্রভাব পড়তে পারে? আমাদের প্রস্তুতিই-বা কেমন হবে? 

যদিও উভয় দেশের সংঘাতময় প‌রি‌স্থি‌তিতেও বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে উত্তেজনার প্রশমন ঘটবে। দেশ দুটি বড় কোনো সংঘাতে জড়াবে না। তারপরও পরস্পরের প্রতি বিদ্বেষ থেকে যদি তারা বড় যুদ্ধে জড়ায় তাহলে বাংলাদেশের করণীয় নির্ধারণে ভুল হলে বিপর্যয়ের আশঙ্কাও করছেন কেউ কেউ।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও এক বিবৃতিতে উভয় পক্ষকে শান্ত থাকার পাশাপা‌শি সংযম দেখানোর অনু‌রোধ করেছে। পরিস্থিতি আরও খারাপ করে তুলতে পারে- এমন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছে। 

বিষয়টি নিয়ে কূটনীতি বিশ্লেষক এবং যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক কূটনীতিক এম হুমায়ূন কবির বলেন, ‘ভারত-পাকিস্তান উভয়ে উভয়ের জন্য আকাশ পথ বন্ধ করে দিয়েছে। এই পথটা তো আমরাও ব্যবহার করি। আমাদের বিমানেরও গতিপথ পাল্টাতে হচ্ছে। এতে বাড়তি খরচের বোঝা চাপছে। এটা তো যুদ্ধ শুরুর আগেই গুনতে হচ্ছে। এখন বড় পরিসরে যুদ্ধ যদি লাগে, তাহলে তার প্রভাবও ব্যাপক হতে বাধ্য।’

উভয় দেশ শুধু নিজেদের স্বার্থেই নয়, বৃহত্তর স্বার্থেও যুদ্ধ এড়িয়ে যাবে প্রত্যাশা করে তিনি বলেন, ‘তারপরও যদি যুদ্ধ শুরু হয়, তাহলে বাংলাদেশের অর্থনীতিও বিপুল ক্ষতির মুখে পড়বে। অর্থনীতির পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’ 

এম হুমায়ূন কবির বলেন, ‘এখন পর্যন্ত সার্কের কাঠামোর মধ্যে সাপটা বলে একটা ব্যবস্থাপনা চালু আছে। কিন্তু যদি জটিলতা বাড়তে শুরু করে, তাহলে সেটাও কোন পর্যায়ে গিয়ে ঠেকবে তা কিন্তু আমরা জানি না।’

গত জুলাই থেকে ভারতের মধ্যে বাংলাদেশ বিষয়ে নেতিবাচক প্রবণতার কথা উল্লেখ করে এই কূটনীতিবিদ বলেন, ‘আমরা তো যুদ্ধ চাই না। আমরা যুদ্ধের কোনো অংশের সঙ্গে কোনোভাবেই সংশ্লিষ্ট হতে চাই না। কিন্তু যদি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হয়, তখন কিন্তু এখানেও কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে উঠতে পারে, যেটা সাম্প্রতিককালেও আমরা দেখেছি। তাই যদি সত্যি যুদ্ধ লাগে, তাহলে এ ধরনের চিন্তা যাদের আছে, তাদেরকে হয়তো আরও সরব হতে দেখা যাবে। যেটা সরকার ও দেশের জন্য বিব্রতকর হবে।’

উপমহাদেশের দুই পরাশক্তির মধ্যে যুদ্ধের শঙ্কায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে যারা একটু উগ্র চিন্তা করেন, তারা আরেকটু বেশি কথাবার্তা বলতে পারেন, যা আমাদের কূটনৈতিকভাবেও বিব্রত করবে- এমন মন্তব্য করে এম হুমায়ূন কবির বলেন, ‘যুদ্ধের অভিঘাতে আমাদের অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হতে পারে। অর্থনৈতিক যোগাযোগও আঘাত প্রাপ্ত হতে পারে। আর যদি যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার হয়, তাহলে লাখ লাখ মানুষ এদিক-ওদিক ছোটাছুটি করবে। কাজেই নানান ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে যেতে হবে। তবে আমরা আশা করি এবং প্রার্থনা করি যেন এ ধরনের পরিস্থিতি তৈরি না হয়।’ 

উভয় দেশ তাদের সীমান্তে ছোটখাটো আক্রমণের মধ্যে যুদ্ধ সীমাবদ্ধ রাখলে আমাদের তেমন কিছু করার নেই এবং তা আমাদের ওপর খুব বেশি প্রভাবও ফেলবে না মন্তব্য করে কূটনীতি বিশ্লেষক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘প্রথমে দেখা প্রয়োজন যুদ্ধের মাত্রাটা কেমন হতে পারে? যদি পাল্টাপাল্টি সুনির্দিষ্ট হামলা হয়, যেটা আগেও হয়েছে, তেমন হলে যুদ্ধে বড় ধরনের কোনো প্রভাব দক্ষিণ এশিয়া বা দক্ষিণ এশিয়ার বাইরে পড়বে না।’ 

বড় যুদ্ধের জন্য দেশের জনগণের মধ্যেও বড় ধরনের প্রস্তুতি প্রয়োজন বলে মনে করেন ইমতিয়াজ আহমেদ। সেটা উভয় দেশের জনগণের মধ্যে লক্ষ করা যাচ্ছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘মনে রাখতে হবে দুটো দেশই পরমাণু শক্তিধর। তাদের উভয়েরই বড় ধরনের সামরিক কাঠামো আছে। যদিও তাদের মধ্যে বড় যুদ্ধের কোনো প্রস্তুতি দেখা যাচ্ছে না। এখন পর্যন্ত যেটা দেখা যাচ্ছে তা হলো সীমান্তে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক। ফলে এর কোনো প্রভাব প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর পড়বে না।’

তবে উভয় পক্ষই যদি কোথায় থামতে হবে সে বিষয়ে নিশ্চিত না হয় তাহলে বড় যুদ্ধের হুমকিতে পড়বে উপমহাদেশ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রতিশোধ গ্রহণের স্পৃহা থেকে একে অন্যের ওপর হামলার ঘটনা যদি বাড়তেই থাকে, তাহলে শুধু ভারত-পাকিস্তানই নয়, এর প্রভাব বাংলাদেশেও পড়বে। অর্থনৈতিকভাবেও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর বিপর্যয়ের মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’

যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে দক্ষিণ এশিয়াকে নিরাপদ রাখতে বিশ্বের বড় বড় শক্তির ভূমিকা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করে এই কূটনীতি বিশ্লেষক বলেন, ‘আমাদের সরকার তো ইতোমধ্যে স্পষ্ট করেছে যে, তারা চাইছে দুটো দেশ যেন শান্তির কাঠামোর মধ্যে ফেরত আসে, কূটনীতির মধ্যে ফেরত আসে।’

এর বেশি বাংলাদেশ আর কী করবে প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, ‘তবে প্রস্তুতি নেওয়া প্রয়োজন। আমাদের পর্যাপ্ত হোম ওয়ার্কেরও দরকার আছে। যদি ছোট স্টাইক হয় তাহলে কি করণীয় এবং তাতে আমাদের ওপর কী প্রভাব পড়বে সেজন্য যেমন প্রস্তুতি দরকার তেমনি দেশ দুটো বড় ধরনের যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে তার প্রভাব আমাদের ওপর কেমন হবে, সেজন্যও প্রস্তুতি নেওয়া দরকার।’

এর বাইরে আপাতত আমাদের কিছু করার নেই বলেও মনে করেন ইমতিয়াজ আহমেদ। 

এদিকে দুটো দেশই উত্তেজিত এবং পরস্পরকে নানা হুমকি দিলেও শেষপর্যন্ত তা বড় যুদ্ধ পর্যন্ত গড়াবে না এবং সে শঙ্কাও খুব বেশি নয় বলেই মনে করেন নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. জাকির হাসান। 

তারপরও উভয় দেশের মধ্যকার উত্তেজনা যদি যুদ্ধে গড়ায় তাহলে সরাসরি এর প্রভাব আমাদের ওপর পড়ার আশঙ্কা না থাকলেও ভিন্ন ধরনের প্রভাবের আশঙ্কা উড়িয়ে দেননি তিনি। জাকির হাসান বলেন, ‘যুদ্ধের ফ্রন্ট থেকে ভৌগোলিকভাবে আমরা অনেক দূরে। তারপরও এ ধরনের যুদ্ধে প্রতিবেশী হিসেবে আমাদের ওপরও কোনো কোনো দিক থেকে প্রভাব পড়তে পারে।’

তিনি বলেন, ‘আমাদের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর ভারত আমাদের থেকে যেসব অযাচিত বাড়তি সুবিধা পেয়ে আসছিল, সেগুলো বাতিল হয়েছে। ফলে তারা আশাহত এবং ক্ষুব্ধ।’ 

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জাকির বলেন, ‘বাংলাদেশের ওপর ভারতের যে ক্ষোভ-আক্রোশ যুদ্ধের সময়ে তার প্রভাব পড়তে পারে। কেননা চীন ইতোমধ্যে বলেছে, তারা যুদ্ধে পাকিস্তানের পক্ষাবলম্বন করবে। ফলে স্বভাবতই ভারতের নজর যেন শুধু পাকিস্তান সীমান্তে না থাকে, এজন্য চিকেন নেকের কাছে চীন তার সামরিক উপস্থিতি বাড়াতে পারে। এতে করে চায়না বর্ডারেও ভারতকে তার অতিরিক্ত ফোর্স রেডি রাখতে হবে। এই অতিরিক্ত ফোর্স এবং আমাদের বিষয়ে ভারতের আপসেট হওয়াটাই আমাদের জন্য ঝুঁকির।’

আমাদের উত্তরাঞ্চল বিশেষ করে পঞ্চগড়, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম থেকে বগুড়া পর্যন্ত ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের সজাগ থাকতে হবে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে ইউক্রেনের কিছু অংশ দখল করে নেওয়ার মতো ঘটনার যেন পুনরাবৃত্তি এ অঞ্চলে ভারত ঘটাতে না পারে সেজন্য সতর্ক থাকা জরুরি।’ 

অন্যদিকে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে যেকোনো ধরনের সশস্ত্র সংঘাত এ অঞ্চলের সবগুলো দেশকেই অকল্পনীয় বিপর্যয়ের মধ্যে নিয়ে যাবে বলে মনে করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)-এর সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমাদের প্রত্যাশা সমঝোতাপূর্ণভাবে সমস্যার নিষ্পত্তি হবে।’ 

সমঝোতাপূর্ণ মীমাংসা ছাড়া কোনো বিকল্প চিন্তা করার সুযোগ নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘পারমাণবিক শক্তিধর দুটো দেশের মধ্যে সীমান্তে যে গোলাগুলি হচ্ছে, একটা সংঘাতপূর্ণ অবস্থা তৈরি হয়েছে এটি তো কারও জন্যই মঙ্গলজনক নয়।’

উভয় দেশ উভয় দেশের ওপর দিয়ে পরস্পরের বিমান চলাচল বন্ধ করেছে, পরস্পরের সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের পথও বন্ধ করেছেÑ এর মাধ্যমে শুধু এ দুটি দেশেরই নয়, সব ধরনের বাণিজ্যেই প্রতিবন্ধকতা তৈরি হবে বলে তিনি মনে করেন। 

অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর বলেন, ‘চীনের পর আমাদের সবচেয়ে বড় বাণিজ্য সহযোগী ভারত। তাদের সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণও বিপুল। নিত্যপণ্য আমদানির ক্ষেত্রে আমরা ভারতের ওপর নির্ভরশীল। আমাদের অনেক রপ্তানিমুখী শিল্পের কাঁচামালও দেশটি থেকে আমদানি হয়। ফলে যুদ্ধ শুরু হলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ওপর প্রভাব পড়তে পারে।’ 

তাই দ্রুত ভারত-পাকিস্তানের দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান না হলে শুধু এ দুটি দেশেই নয়, বাংলাদেশও হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করছেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। 

তিনি বলেন, ‘সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গেও আমাদের সরাসরি যোগাযোগ ও বাণিজ্যও শুরু হয়েছে। কিন্তু যুদ্ধ বা যুদ্ধাবস্থা চললে ভারত মহাসাগরে বাণিজ্য জাহাজ চলাচলেও এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। যা আমাদের জন্যও সমস্যা তৈরি করবে।’

এ অবস্থা থেকে উত্তরণে আমাদেরও কিছু প্রস্তুতির প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করে তিনি বলেন, ‘যুদ্ধে আঞ্চলিক বাণিজ্যে যে প্রভাব রাখবে, তা আমদানিনির্ভর দেশ হিসেবে আমাদেরকে বড় সমস্যায় ফেলতে পারে। এজন্য শুরুতেই আমাদের নজর রাখতে হবে, কোনোভাবেই যেন সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে না পড়ে। আমাদের নিত্যপণ্যে যেন ঘাটতি তৈরি না হয়।’ এজন্য বিকল্প আমদানির বাজার খোঁজারও পরামর্শ দেন অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান। 

এদিকে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধে উভয় দেশই তাদের পাশে বাংলাদেশকে চাইবে বলে মনে করেন নিরাপত্তা বিশ্লেষক মেজর (অব.) নাসির উদ্দিন আহম্মেদ। 

পৃথিবীর প্রতিটি প্রান্তে ভূ-রাজনীতির জোট রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তানের যে ত্রিমুখী জিওপলিটিক্যাল সিনারিও, সেটা এমন যে, যদি ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ হয়, তাহলে পাকিস্তান চাইবে ভারতীয় সেনাবাহিনী যেন তাদের পূর্ণ নজরদারি পাকিস্তান সীমান্তে দিতে না পারে। সেটা যেন বিভক্ত থাকে। এজন্য পাকিস্তানের চাওয়া, ভারতের দুই প্রতিবেশী চীন এবং বাংলাদেশ যেন সব সময় পাকিস্তানের পক্ষে থাকে। কারণ, যুদ্ধ শুরু হলে চীন ও বাংলাদেশ যদি তাদের সীমান্ত থেকে একইভাবে প্রকাশ্যে অথবা গোপনে অথবা গুপ্তচরবৃত্তির মাধ্যমে কোনো একটি ফোর্স ক্রিয়েট করে বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো আন্দোলনকে উস্কে দেয়, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই ভারতের পক্ষে পাকিস্তানের দিকে পুরো নজরদারি দেওয়া সম্ভব হবে না। কিছুটা নজর চীন ও বাংলাদেশের দিকেও দিতে তারা বাধ্য হবে।’ 

অন্যদিকে ভারতও চাইবে বাংলাদেশ ভারতের পক্ষ হয়ে কথা বলুক, প্রতিবাদ জানাক, নিন্দা প্রকাশ করুক এবং শান্ত থাকুক উল্লেখ করে মেজর (অব.) নাসির বলেন, ‘ভারতের বর্ডারে যেন কোনো সমস্যা না হয়, তাদের যেন আলাদা দৃষ্টি দিতে না হয় এটা ভারতের প্রত্যাশা। আবার ঠিক এর বিপরীত প্রত্যাশা পাকিস্তানের। তাদের প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশেও একটা উস্কানিমূলক কর্মকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ভারতের মনোযোগ সরাতে বাধ্য করুক।’

বড় পরিসরে উভয় দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হলে, ভারত এবং পাকিস্তানের পক্ষ থেকে এমন অনুরোধ সমভাবে আসবে বলে মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ সময়ে চীনও বাংলাদেশে প্রভাব বিস্তার করতে চাইবে। আর এই ধরনের সমীকরণের মধ্যে পড়লে বাংলাদেশের জন্য সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন হয়ে উঠবে।’

জর্জ বুশের সময়ে আমেরিকান থিউরি, ‘তুমি হয় আমেরিকার পক্ষে, না হয় আমেরিকার বিপক্ষে’ উল্লেখ করে মেজর (অব.) নাসির বলেন, ‘সব সময়ই আমরা নিরপেক্ষ থাকতে চেয়েছি। তবে নিরপেক্ষ থাকাটা সত্যিকার অর্থেই কঠিন। মাঝামাঝি বলতে কিছু নেই। আমেরিকার ওই সমীকরণ আজও বিশ্বব্যাপী বিদ্যমান। আর আমাদের নিরপেক্ষ থাকা সম্ভব হবে কি না তা নির্ভর করবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের ওপর। তবে সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নিতে বাংলাদেশকে বিচক্ষণতার পরিচয় দিতে হবে। সেটা করতে না পারলে আখেরে কোনো লাভ হবে না। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা