প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ মে ২০২৫ ১২:১৭ পিএম
দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে তামাকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি। বাংলাদেশে এ হার ৩৫ দশমিক ৩, ভারতের ২৮ দশমিক ৬ ও পাকিস্তানে ১৯ দশমিক ১ শতাংশ। ধূমপানের কারণে দেশে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারে অর্থনৈতিক ক্ষতি ছিল ৩০ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। অথচ এ সময়ে তামাক থেকে সম্পূরক শুল্ক ও সূসক হতে রাজস্ব আয় হয়েছে ২২ হাজার ৮১০ কোটি টাকা। এ হিসেবে স্বাস্থ্যসেবায় ৭ হাজার ৬৯০ কোটি টাকা ব্যয় বেশি হয়েছে।
বুধবার (৭মে) রাজধানীর বাংলামোটরে প্রগতির জন্য জ্ঞান (প্রজ্ঞা) ও অ্যান্টি টোব্যাকাে মিডিয়া এলায়েন্স (আত্মা)র
উদ্যোগে আয়োজিত ‘২০২৫-২৬ অর্থবছরের জন্য তামাক কর প্রস্তাব, তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের অগ্রগতি ও করণীয় এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ’ বিষয়ক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
আত্মার কো-কনভেনর নাদিরা কিরণের সঞ্চালনায় বক্তব্য রাখেন- প্রজ্ঞার নির্বাহী পরিচালক এবিএম জুবায়ের, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের বিশেষ প্রতিনিধি লিটন হায়দার, দৈনিক যুগান্তরের ডেপুটি চিফ রিপোর্টার মিজান চৌধুরী, দৈনিক জনকণ্ঠের সিটি এডিটর কাওসার রহমান, মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করে হাসান শাহরিয়ার প্রমুখ।
সেমিনারে বক্তারা বলেন, দেশে বিদ্যমান তামাক কর কাঠামো অত্যন্ত জটিল যা তামাক ব্যবহার নিরুৎসাহিতকরণে যথেষ্ট এবং কার্যকর রাজস্ব সংগ্রহের জন্য উপযুক্ত নয়। কেননা সকল তামাক পণ্যের উপর মূল্যের শতাংশ হারে (অ্যাড ভ্যালোরম) সম্পূরক শুল্ক ধার্য করা হয় এবং তামাকপণ্যের ধরণ এবং ব্র্যান্ডভেদে ভিত্তিমূল্যে ব্যাপক পার্থক্য রয়েছে। বর্তমানে বাজারে অত্যন্ত সস্তা এবং সহজলভ্য সিগারেট বিদ্যমান।
বক্তারা আরো বলেন, প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে মাথাপিছু সিগারেট বিক্রি আগের মতো একই অবস্থায় থাকলেও নিম্ন ও মধ্যস্তরের সিগারেটের বিক্রি বেড়েছে। তবে সরকারের রাজস্ব আয় আশানুরূপ বাড়েনি।
চলতি অর্থবছরে খুচরা মূল্য ও সম্পূরক শুল্ক রয়েছে নিম্নস্তরে ৬০ টাকা ও ৬৭ শতাংশ, মধ্যমস্তরে ৮০ ও ৬৭ শতাংশ, উচ্চস্তরে ১৪০ ও ৬৭ শতাংশ এবং প্রিমিয়ামস্তরে ১৮৫ ও ৬৭ শতাংশ। তবে সেমিনারে নিম্ন ও মধ্যমস্তরকে এক করে খুচরামূল্য ৯০, উচ্চস্তরে ১৪০ এবং প্রিমিয়ামস্তরে ১৯০ টাকা। আর তিনটি স্তরেই সম্পূরক শুল্ক ৬৭ শতাংশ রাখার প্রস্তাব করা হয়।
বক্তারা বলেন, এসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন হলে আগামী অর্থবছরে সিগারেটের ব্যবহার ১৫.১ থেকে কমে ১৩.৩ শতাংশ হবে। এর ফলে ২৪ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ধূমপান থেকে বিরত থাকবে ও ১৭ লাখ তরুণ ধূমপান শুরু করতে নিরুৎসাহিত হবে। তা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে ৮ লাখ ৬৪ হাজার ৭৫৮ জন প্রাপ্তবয়স্ক এবং ৮ লাখ ৬৯ হাজার ৭৯ তরুণ জনগোষ্ঠীর অকাল মৃত্যুেরোধ করা সম্ভব। এসব কার্যক্রমে ৬৮ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আয় হবে, যা ২০ হাজার কোটি টাকা বেড়ে গত বছরের চেয়ে ৪৩ শতাংশ বাড়বে।
হাসান শাহরিয়ার বলেন, বিশ্বের ৫ টি দেশে তুর্কমেনিস্তান, অষ্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিজি ও আয়ারল্যান্ডে সবচেয়ে বেশি। কার্যকর করারোপের অভাবের কারণে বাংলাদেশে ধূমপানের হার কমছে না।
দীর্ঘদিন যাবত কর না বাড়ানোর কারণে বিভিন্ন কোম্পানিগুলো নিম্ন স্তরের সিগারেট বাজারে এনেছে।
তিনি বলেন, ধোয়াবিহীন তামাকসেবী ৫০ শতাংশ হলেও সেখানে ১ শতাংশ হারে রাজস্ব বাড়ানো হয়নি।