× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

জনবল সংকটে ধুঁকছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

ফারুক আহমাদ আরিফ

প্রকাশ : ২৭ এপ্রিল ২০২৫ ১১:০৭ এএম

জনবল সংকটে ধুঁকছে আবহাওয়া অধিদপ্তর

একটি দেশের কৃষি, জ্বালানি, স্বাস্থ্য, শিল্প-কারখানার উৎপাদন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে শুরু করে বিমান চলাচল, সড়ক যোগায়োগ, নৌ-চলাচলসহ প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই আবহাওয়ার তথ্য খুবই গুরুত্বপুর্ণ। সেই তথ্য-উপাত্ত তৈরি ও সরবরাহে প্রতিনিয়ত কাজ করছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। যে দেশের আবহাওয়া অফিসের তথ্য যত নির্ভুল ও নিখুঁত; সেই দেশ বিশ্বে তত উন্নত। এসব তথ্য নিয়ে কাজ করতে হলে প্রয়োজন দক্ষ জনবল, প্রযুক্তি ও রাষ্ট্রীয় সহায়তা। কিন্তু বাংলাদেশের আবহাওয়া অফিসে লোকবলের সংকট চরমে পৌঁছেছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করার মতো লোকবলের অভাবও প্রকট। 

গত ১২ বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে নেই কোনো নিয়োগ ও পদোন্নতি। নিয়মের ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞ আবহাওয়াবিদদের চাকরিজীবন শেষ হলেও নতুন নিয়োগ নেই। বর্তমানে কাজ করা অল্প কয়েকজন বিজ্ঞ ও দক্ষ ব্যক্তির চাকরিজীবন শেষ হলে প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করার মতো কেউ থাকবে না। একজন মুমূর্ষু রোগীকে বাঁচাতে যেমন ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রাখা হয়। অধিদপ্তরটি অনেকটা সেই রকম অবস্থায় পৌঁছেছে। প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালকের পদ বাগিয়ে নিতে আমলাদের কূটকৌশলে আটকে পড়ে প্রাণ যায় যায় অবস্থা প্রতিষ্ঠানটির। 

১১ জনের কাজ করছে ১ থেকে ২ জন

সারা দেশে আটটি বিভাগীয় অফিসের অধীনে ৬১টি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার রয়েছে। একেকটি কেন্দ্রে কমপক্ষে প্রহরীসহ ১১ জন করে জনবল থাকার কথা থাকলেও সেখানে ২৪টি কেন্দ্রে আছে ১ থেকে ৩ জন। কিছু কেন্দ্রে ৪-৫ জন। ২৪ ঘণ্টা চলমান থাকা এসব অফিসে ৫টি পয়েন্টে রোস্টারে কাজ করতে হয়। প্রতিদিন একেক রোস্টারে তিনটি শিফটে দুজন করে হলেও ১০ জন লোকবল দরকার। সেখানে কক্সবাজার সেন্টমার্টিন প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, খাগড়াছড়ির দীঘিনালা, মৌলভীবাজার রাডার স্টেশনে জনবল আছে মাত্র একজন। পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালী, বরিশালের হিজলা, ভোলার মনপুরা, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ, কুমিল্লা, চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড, সন্দ্বীপ, কুতুবদিয়া ও আমবাগান এবং বান্দরবানে আছেন মাত্র ২ জন করে। তাছাড়া পিরোজপুরের কাউখালী, মাদারীপুর, মানিকগঞ্জের আরিচা, মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল, নোয়াখালীর হাতিয়া, রাঙামাটি ও কক্সবাজারের টেকনাফে ৩ জন করে জনবল রয়েছে। 

এ ব্যাপারে আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক (চলতি দায়িত্ব) মো. মমিনুল ইসলাম বলেন, আমাদের অর্গানোগ্রামে ১ হাজার ৩৩৪ জন লোকবল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে আছে ৫৭৩ জন। তিনি বলেন, একটি স্টেশনে ১১ জন লোকবল থাকার কথা, অথচ রয়েছে ১-২ থেকে ৪-৫ জন। জনবল সংকটের কারণে সঠিক তথ্য পেতেও সমস্যা হয়। তিনি বলেন, আমরা নতুন যে অর্গানোগ্রাম মন্ত্রণালয়ে জমা দিয়েছি, সেখানে ১২টি ক্যাটাগরির ৪৬টি পদ বিলুপ্তকরণ, ৩১ ক্যাটাগরির পদের নাম পরিবর্তন, ২৩ পদের বেতন গ্রেড উন্নীতকরণ, ড্রাইভারদের ১০ পদের বেতন গ্রেড ১৫ হতে ১৬-তে অবনমিতকরণ, ১৯২টি পদ রাজস্ব খাতে সৃজনের চাহিদা দেওয়া হয়েছে। 

এ ব্যাপারে আন্তর্জাতিক মহাশাখার উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) ড. মো. শামীম হাসান ভুইয়া বলেন, আবহাওয়ার তথ্য সঠিক ও নিখুঁত হওয়ার জন্য অবজারভেশনটা খুব জরুরি। কিন্তু অবজারভেশনের জন্য প্রয়োজনমতো জনবল নেই। অল্প কিছু লোকজন আছে। এদের চাকরি শেষ হয়ে গেলে অধিপ্তরের সমাধি ঘটবে। যত দ্রুত সম্ভব জনবল নিয়োগ, পদোন্নতি দরকার। আগের অর্গানোগ্রাম অনুযায়ী, এই অধিদপ্তরে লোকবল ছিল ১০৪৩ জন। বর্তমানে আমরা ১৩৩৮ জনের চাহিদা দিয়েছি। সেখানে যিনি পরিচালক আছেন, তিনি তৃতীয় গ্রেডের। ডিজি হতে হলে প্রথম বা দ্বিতীয় গ্রেডের হতে হবে। আমাদের কথা হচ্ছে, গ্রেড যা কিছুই দেওয়া হোক না কেন, ডিজি আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে করতে হবে। 

আর্লিওয়ার্নিংকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা উল্লেখ করে ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্রের উপপরিচালক (চলতি দায়িত্ব) এসএম কামরুল হাসান বলেন, ডব্লিউএমও খাদ্য, বস্ত্র, চিকিৎসা, শিক্ষা ও বাসস্থানের মতো আবহাওয়ার পূর্ব সতর্কীকরণ বা আর্লিওয়ার্নিংকে মৌলিক অধিকার হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। এখানে কাজ করার মতো লোকবলের অভাব রয়েছে আমাদের। জনবল না থাকলে আমরা কীভাবে সঠিক তথ্য সরবরাহ করব?

শীর্ষপদ থেকে স্থানীয় কেন্দ্র পর্যন্ত চলছে ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তায়

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক, আবহাওয়া ও ভূপ্রাকৃতিক কেন্দ্র চট্টগ্রাম, প্রশাসনিক বিভাগ, আন্তর্জাতিক মহাশাখা, ঝড় সতর্কীকরণ কেন্দ্র, আবহাওয়া প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান ও জলবায়ু মহাশাখার মতো শীর্ষ ৭টি বিভাগ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দিয়ে চলছে। তা ছাড়া সারা দেশের ৪৩টি কেন্দ্রসহ মোট ৫০টি পদই চলছে ভারপ্রাপ্তদের দিয়ে। এসব জায়গায় নেই স্থায়ী কোনো কর্মকর্তা। ৪৩টি কেন্দ্রের মধ্যে ২টি কৃষি আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার, ৭টি পাইলট বেলুন পর্যবেক্ষণাগার, ৫টি বিমানবন্দর আবহাওয়া কার্যালয়, ৩টি রাডার স্টেশনসহ প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারে নেই স্থায়ী কর্মকর্তা।

 ১২ বছর ধরে নেই নিয়োগ-পদোন্নতি 

২০১৩ থেকে চলতি ২০২৫ সাল পর্যন্ত নিয়োগ-পদোন্নতি সব বন্ধ রয়েছে। জিয়াউর রহমান ও হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সামরিক শাসনামলে নিয়োগ হওয়া সব অধ্যাদেশ বিগত সরকার বাতিল করেছিল। সেই বাতিলের তালিকায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের অধ্যাদেশও অন্তর্ভুক্ত। কিন্তু রাষ্ট্রের অন্যান্য অধ্যাদেশ পরবর্তীতে সাময়িকভাবে শুরু হলেও আবহাওয়া অধিদপ্তরেরটি আর শুরুই হয়নি। সেই ২০১৩ থেকে সব ধরনের নিয়োগ-পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি প্রতিষ্ঠান। আর বিগত বছরগুলোতে প্রধানমন্ত্রীর হাতেই ছিল প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। কোনো কর্মকর্তা সমস্যা সমাধানে প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত যাওয়ার সাহস দেখাতেন না। পাছে প্রধানমন্ত্রী কোনো বিষয়ে নাখোশ হন, এ কথা চিন্তা করে তারা ৫ জনের কাজ একজনকে দিয়ে করাত। বর্তমানে প্রধান উপদেষ্টার হাতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। 

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা জানান, তিনি ২০০৪ সালে চাকরিতে জয়েন করার ২১ বছর পার হয়ে গেলেও কোনো পদোন্নতি পাননি। সাধারণত চাকরিতে জয়েনের ৪-৫ বছরের মধ্যে পদোন্নতি দেওয়া হয়; কিন্তু আবহাওয়া অধিদপ্তরে ১০ বছরেও কেউ পদোন্নতি পাননি। ২০১৬ সাল থেকে নেই কোনো নতুন নিয়োগ ও পদোন্নতি।

এক শ্রমিক নেতা বলেন, আমাদের পদোন্নতি দীর্ঘ ১২ বছর ধরে বন্ধ। পদোন্নতি না দিয়ে শুধু নিয়োগের বিষয়টি প্রাধান্য দেওয়া হলে আমরা আন্দোলনে নামব। 

কেন এ অচলাবস্থা

আবহাওয়া অধিদপ্তরের এই অচলাবস্থার মূলে রয়েছে শীর্ষপদ তথা মহাপরিচালকের পদটি ঘিরে। দেশের প্রত্যেকটি অধিদপ্তরের প্রধান মহাপরিচালক বা ডিজি হলেও আবহাওয়া অধিপ্তরের প্রধান হিসেবে রয়েছেন পরিচালক। এটিকে মহাপরিচালক করা হচ্ছে না। তার কারণ হচ্ছে, বিজ্ঞানভিত্তিক এ পদটিও দখল করতে চান আমলারা। অথচ বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার ১৯৩টি সদস্য রাষ্ট্র ও অঞ্চলের কোথাও এ ধরনের নিয়ম নেই। এর ব্যতিক্রম করে বাংলাদেশই বিসিএস কর্মকর্তা দিয়ে পদটি দখলে নিতে চান বলে জানিয়েছেন অধিদপ্তরের বর্তমান ও সাবেক পরিচালকরা। 

২০১৩ সাল থেকে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে যুক্ত থেকে এ পদে আবহাওয়াবিদদের ডিজি করার জন্য প্রস্তাবনা, কাগজপত্র তৈরি করেছেন আবহাওয়া অধিপ্তরের সাবেক পরিচালক মো. আজিজুর রহমান। তিনি বলেন, ২০১৩ থেকে ২০২৪ পর্যন্ত আমি এ পদটি আবহাওয়া অধিদপ্তরের টেকনিক্যাল পার্সনদের মধ্য থেকে করানোর জন্য প্রস্তাবনা, কাগজপত্র তৈরি করেছি। আমলারা অন্যান্য অধিদপ্তরের মতোই এখানেও প্রশাসনের কর্মকর্তাকে মহাপরিচালক হিসেবে বসাতে চান। যোগ করেন, অনেকবার মিটিং করেছি কিন্তু সরকারকে কোনোভাবে বোঝানো যাচ্ছে না। একবার বোঝে তো আরেকবার আমলাদের খপ্পরে পড়ে উল্টোপথে হাঁটে।

আজিজুর রহমান বলেন, আবহাওয়া-সংক্রান্ত বিষয়টি টেকনিক্যাল। এখানে দীর্ঘদিন কাজ করে ও প্রশিক্ষণ নিয়ে শিখতে হয়। বিভিন্ন তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করতে হয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে। সরকার বসাতে চায় আমলা। এরা তো এসব বুঝবে না। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নিয়ম নেই। আমলাদের বসাতে শুধু বাংলাদেশেই এ ধরনের নিয়ম করতে চাচ্ছে। 

তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়, কালবৈশাখী, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, বায়ুসহ বিভিন্ন বিষয়ে কাজ করতে হয়। বিভিন্ন মডেল রান দিতে হয়। সেখানে আবহাওয়াবিদ না হলে এসব হবে না। এখন সরকার সেটি বুঝতে চায় না। 

কী আছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার আইনে 

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরগুলোতে প্রধান হিসেবে নির্বাচনের কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (ডব্লিউএমও)। তাকে স্থায়ী সদস্যপদ বা পিআর বলা হয়। সেই আইনের ৫ নম্বর রেজুলেশনে বলা হয়েছেÑ (ক) প্রতিটি সদস্য (রাষ্ট্র) লিখিত বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে মহাসচিবের কাছে একজন স্থায়ী প্রতিনিধিকে মনোনীত করবেন, যিনি কংগ্রেসের অধিবেশনের মধ্যে সদস্যদের জন্য প্রযুক্তিগত বিষয়ে কাজ করার জন্য আবহাওয়া বা জলবায়ু-সংক্রান্ত পরিষেবার পরিচালক হবেন। তাদের নিজ নিজ সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে, স্থায়ী প্রতিনিধিদের সংগঠন এবং তাদের নিজ নিজ দেশের মধ্যে যোগাযোগের স্বাভাবিক মাধ্যম হওয়া উচিত। সংস্থার কাজ-সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের নিজ দেশের উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ, বেসরকারি-সরকারিদের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখবে। তাকে আবহাওয়ার ফরকাস্টিং দেওয়ার অভিজ্ঞতাসহ অন্যান্য বিষয়ে পারদর্শী হতে হবে। 

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সাবেক পরিচালক ড. ছায়েদুল আলম বলেন, একজন আবহাওয়াবিদ হতে হলে কমপক্ষে ১০ বছর তাকে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ নিতে হয়। ঊর্ধ্বতনদের সঙ্গে থেকে কাজ শিখতে হয়। দেশে-বিদেশে প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হয়। ডব্লিউএমওর প্রশিক্ষণে অংশ নিতে হয়। এসবের মাধ্যমে অর্জিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আবহাওয়ার ফরকাস্টিং দিতে হয়। এখন কেউ যদি প্রশাসন থেকে আসে, তারা কি এসব কাজ করতে পারবে? তা ছাড়া বাংলাদেশ আবহাওয়া আইনেও এ বিষয়ে বিস্তারিত বলা হয়েছে। সেখানকার নিয়ম অনুযায়ীও আমলারা ডিজি হতে পারেন না। 

তিনি বলেন, ডব্লিউএমওর নিয়মে ১৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে ডিজি হতে হলে। আমি পরিচালক থাকাবস্থায় ডিজি হওয়ার যোগ্যতার বিষয়ে কাগজপত্র জমা দিয়েছি। সরকার তথা প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের আমলারা যুগ্ম সচিব পর্যায়ের কাউকে এখানে ডিজি হিসেবে নিয়োগ দিতে উদ্যোগ নিয়েছিল; আমি তা প্রতিহত করেছি। আমার কাগজপত্র তারা আটকে রেখে এখন আবার নতুন করে নিজেরা ডিজি হওয়ার যাবতীয় ব্যবস্থা নিয়েছেন। এটি কখনও দেশের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে না। বিশ্বের কোথাও এ ধরনের নিয়ম নেই। 

তিনি বলেন, ডিজির যোগ্যতার জন্য আমরা বলেছিলাম আবহাওয়াবিদরা পর্যায়ক্রমে পদোন্নতির মাধ্যমে পদটিতে আসবে। তা ছাড়া ডিজিকে ডব্লিউএমওর বার্ষিক মিটিংয়ে উপস্থিত হয়ে আবহাওয়া-সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও প্রেজেন্টেশন দিতে হয়। সেখানে টেকনিক্যাল লোক না হলে এসব তো নিজেও বুঝবে না, অন্যদেরও বোঝাতে পারবে না। 

কী বলছেন কর্মকর্তারা

আবহাওয়া অধিদপ্তরের অর্গানোগ্রামের বিষয়টি আজ রবিবার প্রশাসনিক উন্নয়ন-সংক্রান্ত সচিব কমিটির বৈঠকে আলোচনা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে। ভুক্তভোগীদের আশঙ্কা আজ যদি ডিজি নিয়োগে আমলাদের প্রাধান্য দিয়ে বিলটি পাস হয়, তাহলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের অবস্থা দাঁড়াবে বাংলাদেশ মহাকাশ গবেষণা ও দূর অনুধাবন প্রতিষ্ঠানের (স্পারসো) মতো। এ ব্যাপারে ড. ছায়েদুল আলম বলেন, আমলাদের ডিজি নিয়োগ করা হলে প্রতিষ্ঠানটি স্পারসোর মতো হয়ে যাবে। তাতে হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে অথচ কাজের কাজ কিছুই হবে না। আমরা চাই বিশেষায়িত এ প্রতিষ্ঠানে ডব্লিউএমওর নিয়ম ও আবহাওয়া আইন অনুসরণ করা হোক। 

দীর্ঘ ১২ বছর ধরে নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কাজের উদ্যোম হারিয়ে ফেলছেন, এক্ষেত্রে আবহাওয়া অধিদপ্তরের সমস্যা সমাধানে সরকার কতটা উদ্যোগী হচ্ছে জানতে চাইলে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আশরাফ উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন নিয়োগ ও পদোন্নতি বন্ধ থাকায় কাজে গতি আসছে না। প্রয়োজনীয় জনবল না থাকলে কাজ করাও কঠিন। আমি বিষয়টি বুঝতে পেরে অধিদপ্তরের নতুন অর্গানোগ্রাম (সাংগঠনিক কাঠামো) সংশোধনের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছি। আবহাওয়া অধিদপ্তরের জনশক্তিকে বিদেশে প্রশিক্ষণে যেতে হয়। কিন্তু তাদের পদোন্নতি না হওয়ায় বিদেশে প্রশিক্ষণেও যেতে পারছেন না।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা