× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সেমাই চিনি মসলা বিক্রির ধুম, দামেও স্বস্তিতে

সোহরাব হোসেন

প্রকাশ : ২৯ মার্চ ২০২৫ ১২:২২ পিএম

ছবি : সংগৃহীত

ছবি : সংগৃহীত

ঈদুল ফিতরের বাকি আর মাত্র কয়েক দিন। শেষ মুহূর্তে জামা-কাপড়ের দোকানে যেমন উপচে পড়া ভিড়, তেমনি ঈদকেন্দ্রিক ভোগ্যপণ্য কিনতে বাজারগুলোতেও ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। আর্থিক অবস্থা যেমনই হোক, ঈদ নিয়ে উচ্ছ্বাসের কমতি নেই ক্রেতাদের। সেই সঙ্গে রোজার আগে থেকেই এবার অতিপ্রয়োজনীয় পণ্যগুলোর দামে রয়েছে স্বস্তি। বিক্রেতারা বলছেন, চাহিদা ও সরবরাহের ওপর দাম বাড়া-কমা নির্ভর করছে। গত বৃহস্পতিবার ও গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মিরপুর কাঁচাবাজার ও নতুনবাজার ঘুরে ঈদের আগে মানুষের কেনাকাটার এমন চিত্র দেখা গেছে।

ঈদ এলেই বাজারে সেমাইয়ের চাহিদা বেড়ে যায় কয়েকগুণ। এবারের ঈদেও বাজারে বেড়েছে সেমাই বিক্রি। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দোকানগুলোতে লাচ্ছা ও চিকন সেমাই, যা প্যাকেটজাত ও খোলা আকারে বিক্রি হচ্ছে। সামর্থ্য অনুযায়ী প্যাকেটজাত কিংবা খোলা সেমাই কিনছেন ক্রেতারা। 

মিরপুর বাজার ঘুরে দেখা যায়, খোলা লাচ্ছা সেমাই বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৬০ টাকায়। আর চিকন সেমাই কেজিপ্রতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়। প্যাকেটজাত ২০০ গ্রাম সেমাই ব্র্যান্ডভেদে ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রেশমি লাচ্ছা ১৮০ টাকা, ডালডায় তৈরি সেমাই বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, ঘিয়ে ভাজা সেমাই ৩২০ থেকে ৩৫০ টাকা, মুঘল লাচ্ছা ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, ফ্রুট লাচ্ছা ২২০ থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এ ছাড়া বিভিন্ন ব্যান্ডের ঘি ও কিশমিশযুক্ত সেমাই বিক্রি হচ্ছে এক হাজার টাকা কেজি দরে। এসব ব্র্যান্ডের মধ্যে রয়েছে ওয়েলফুড, কুপারস প্রভৃতি। এসব সেমাই পাওয়া যাচ্ছে ২৫০ ও ৪০০ গ্রাম ওজনের প্যাকেটেও। সেক্ষেত্রে প্রতি প্যাকেটের দাম পড়বে ২৫০ থেকে ৪০০ টাকা। এদিকে বড় বড় কোম্পানি সেমাইয়ের বাজারে আসার পর ছোট ছোট কোম্পানির সংখ্যা কমছে। প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ, স্কয়ার গ্রুপ, বনফুল, কিষোয়ানসহ অনেক শিল্পগোষ্ঠী বর্তমানে সেমাই বাজারজাত করছে।

ঈদ ঘিরে সেমাইয়ের দাম কমলেও তৈরির উপকরণের দাম বেড়েছে বাজারে। গত বছরের তুলনায় চীনাবাদাম, কাজুবাদাম ও কাঠবাদামের দাম বেড়েছে ৫০ থেকে ৩৫০ টাকা পর্যন্ত। অন্যদিকে প্রায় ৩০০ টাকা কমেছে পেস্তাবাদামের দাম। তবে দামে পরিবর্তন হয়নি কিশমিশের।

কারওয়ান বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এক মাস আগে প্রতি কেজি চীনাবাদামের দাম ছিল ১২০ টাকা। বর্তমানে পণ্যটি বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। এ ছাড়া কাজুবাদাম বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৬০০ টাকায়। এক মাস আগে দাম ছিল ১ হাজার ৩০০ টাকার আশপাশে। ভালো মানের পেস্তাবাদাম বিক্রি হয়েছে ২ হাজার ৪৫০ টাকা কেজি দরে। গত বছরের তুলনায় দাম কমেছে ৩০০ টাকা। অন্যদিকে কাঠবাদাম বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ১ হাজার ১৫০ টাকায়। আর প্রতি কেজি কিশমিশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকায়। এক মাস আগেও দাম প্রায় একই ছিল।

সেমাই তৈরির উপকরণ কিনতে বাজারে আসা স্কুলশিক্ষিকা লুৎফুন্নেসা বলেন, এবার ঈদে কেনাকাটা করে মজা পেয়েছি। বেশিরভাগ জিনিসই কম দামে পেয়েছি, যেমনÑ সেমাই, পোলাও, চাল, চিনি, দুধ, ঘি এগুলো সব তুলনামূলক কম দামে কিনতে পেরেছি। তবে বাদামের দাম বেড়েছে, যেহেতু সেমাইটা একটু কম দামে পাচ্ছে বাদামের দাম বাড়লেও একটা সামঞ্জস্য থেকেই যাচ্ছে। সুতরাং এটা নিয়ে দুঃখ নেই, স্বস্তিতেই ঈদের বাজার করলাম।

এখনও হাতে সময় আছে বলে মানুষ সেমাই বা মসলা জাতীয় পণ্য কম কিনছেন। কয়েক দিন পরই এসব পণ্য বেশি বিক্রি হবে। তবে কেনার আগেই এলাচের দাম বেড়েছে বেশ। গত সপ্তাহে ৪ হাজার ৮০০ টাকা কেজি বিক্রি হয়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে এর দাম বেড়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। যা এখন বিক্রি হচ্ছে ৫ হাজার ৩০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ টাকা। এ ছাড়াও দারুচিনি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা, জয়ত্রি বিক্রি হচ্ছে ৩ হাজার ৪০০ থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকায়।

ঈদে আরেকটি প্রয়োজনীয় ভোগ্যপণ্য পোলাওয়ের চাল। রমজান মাসের শুরু থেকে ১-২ টাকা করে বেড়ে এখন খোলা চিনিগুঁড়া ১২৫ থেকে মানভেদে ১৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বিভিন্ন কোম্পানির প্যাকেটজাত চাল ১৬০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা গেছে। সাধারণ মিনিকেট ৮০ টাকা, আঠাশ চাল ৬০ টাকা, প্রাণ মিনিকেট ৯২ টাকা কেজিপ্রতি দরে বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে নতুন বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি কেজি মিল্ক ভিটা ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা; যা এক মাস আগেও ৬০ টাকা কম ছিল। এ ছাড়া প্রতি কেজি প্রাণ ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৪০০ টাকা ও আড়ং ব্র্যান্ডের প্রতি কেজি ঘি বিক্রি হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা। তা ছাড়া ডিপ্লোমা দুধ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮৯০ টাকায়। প্রতি কেজি ডানো ও মার্কস বিক্রি হচ্ছে ৮৮০ ও ৮৬০ টাকা। এদিকে খোলা চিনি ১১৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে; যা গত বছর ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকায়।

এ ছাড়া প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৩০-৪৫ টাকা; যা গত বছর ঈদের আগে বিক্রি হয়েছে ৭০ টাকা। দেশি রসুন বিক্রি হচ্ছে ৮০-১৬০ টাকা; যা আগে ১২০-১৪০ টাকা ছিল। দেশি শুকনা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা; যা আগে ৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। 

মিরপুর কাঁচাবাজারে পণ্য কিনতে আসা মিজান বলেন, পুরো রোজার মাসে স্বস্তিতে জিনিসপত্র কিনতে পেরেছি। মাঝেমধ্যে লেবুর বাজার ঊর্ধ্বমুখী হলেও অন্য জিনিসপত্র ছিল সাধ্যের মধ্যে। এ ছাড়া চিনি, দুধ সেমাই সবই কম দামেই রয়েছে। ঈদ কেন্দ্র করে পণ্যের দাম নতুন করে বাড়ানো হয়নি দেখেই এবার সবকিছু নাগালে।

তবে ব্যবসায়ী সাইফুল বলেন, এবার ক্রেতাসমাগম কম। গতবার ঈদের এক সপ্তাহ আগেই যে ভিড় দেখা যেত, তা এবার নেই। দীর্ঘ ছুটি থাকায় অনেকে ঢাকা ছেড়েছেন, ফলে তারা গ্রামেই সেমাই চিনি কিনবেন বলেই ক্রেতাসমাগম কম বলে মনে করছেন তিনি।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা