× ই-পেপার প্রচ্ছদ সর্বশেষ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি শিক্ষা ধর্ম ফিচার ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

নিরাপদ ও সুন্দর জীবনের প্রত্যাশা তরুণদের কাছে

সোহরাব হোসেন

প্রকাশ : ০১ মার্চ ২০২৫ ১০:০৭ এএম

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে উপস্থিত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রবা ফটো

জাতীয় নাগরিক পার্টির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে উপস্থিত হন বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। প্রবা ফটো

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির উদ্যোগে আত্মপ্রকাশ করেছে নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। তরুণ প্রজন্মের নেতৃত্বে গঠিত নতুন এই রাজনৈতিক দল ঘিরে আগ্রহ ছিল সর্বমহলেই। চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের সম্মুখসারির যোদ্ধাদের নেতৃত্বে গঠিত এই রাজনৈতিক দলের কাছে নিজেদের বিপুল প্রত্যাশার কথা জানিয়েছে সাধারণ মানুষ। তারা বলেছেন, তরুণদের নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ হওয়া দলটির মাধ্যমে নিরাপদ ও সুন্দর একটা বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। যেখানে সবাই সমান সুযোগ নিয়ে সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে জীবনযাপন করবে। রাজধানীর বিভিন্ন এলাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আগ্রহ নিয়ে নতুন দলের আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানে এসে প্রতিদিনের বাংলাদেশের কাছে এমন প্রত্যাশার কথা তুলে ধরেছেন অনেকেই। এমনকি শহীদ পরিবারের সদস্যরাও জানিয়েছেন তাদের প্রত্যাশার কথা। 

গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে আত্মপ্রকাশ ঘটে নতুন রাজনৈতিক দল এনসিপির। এই আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠান ঘিরে আগ্রহ ছিল সর্বমহলেই। বেলা ৩টায় অনুষ্ঠানের সময় দেওয়া থাকলেও সকাল থেকেই জড়ো হতে থাকে সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে জুমার নামাজের পর নামতে শুরু করে জনতার ঢল। সারা দেশ থেকে আসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি রাজধানীর বিভিন্ন পাড়ামহল্লা থেকে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। 

খুলনা থেকে এসেছেন ষাটোর্ধ্ব আহমাদ উল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা বিগত সরকারের কাছ থেকে নানা বঞ্চনার শিকার হয়েছি। আশা করি আমাদের সেই বঞ্চনার জায়গাগুলো আর থাকবে না। আমাদের সেই অধিকারের বিষয়গুলো এই তরুণ প্রজন্ম ফিরিয়ে দেবে। আমরা যেন সুন্দরভাবে জীবনযাপন করে বেঁচে থাকতে পারি, তরুণ প্রজন্মের কাছে এটাই চাওয়া।

সংসদ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে ছিলেন টেকনাফ থেকে আসা মুরাদ হোসেন। তিনি বলেন, বুকের রক্ত দিয়ে স্বৈরাচার সরকারের পতন ঘটানোর পর যে গণঅভ্যুত্থানের দেখা পেয়েছি তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। বাংলাদেশের রাজনীতিতে নতুন ও সম্ভাবনাময় একটা সময়ের সৃষ্টি হবে, এটাই আমাদের চাওয়া।

নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থেকে আগত ৫৫ বছর বয়সি নাসির উদ্দিন বলেন, বিগত সময়ে সব সরকারই গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা তারা বজায় রাখেননি। আমি চাই ছাত্রদের নিয়ে গঠিত রাজনৈতিক এই দল গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, গণতান্ত্রিক ধারা বজায় রাখবে। বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক শক্তি কায়েম করবে। 

সিলেটের সুজল মিয়া বলেন, দেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলিত হয়Ñ এমন একটি সরকার আমরা দেখতে চাই। নাগরিক পার্টির মাধ্যমে দেশের মানুষ সেই আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটাতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।

অ্যাডভোকেট মিনহাজুল হকও এসেছেন দিনাজপুর থেকে। তিনি বলেন, আমি এসেছি কালের সাক্ষী হতে। আমি আওয়ামী লীগের গঠন দেখিনি, বিএনপির গঠন দেখিনি, জাতীয় পার্টির গঠন দেখিনি। কিন্তু আজ যে নতুন পার্টি গঠন হচ্ছে, সেই পার্টি গঠনে কালের সাক্ষী হতে এখানে এসেছি। যারা দল গঠন করছেন তারা দেশ ও মানুষের জন্য ডেডিকেটেড হবেন। মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করবেনÑ এটাই চাওয়া।

চট্টগ্রামের রাউজান থাকে এসেছেন মো. মহিউদ্দিন জিলানী। তিনি বলেন, তরুণ সমাজ যে স্পিরিট নিয়ে আমাদের জুলাইয়ের বিপ্লব ঘটিয়েছে, স্পিরিটটা ছিল শুধুমাত্র একটা ফ্যাসিস্ট এবং স্বৈরতন্ত্রকে বিদায় করা। এই পরিস্থিতিতে আমাদের যে আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয়েছে, যে আকাঙ্ক্ষার মাধ্যমে আমাদের দেশের এবং দেশের অর্থনীতি, আইনগত কাঠামো, দলীয় শৃঙ্খলা এবং মানুষের মধ্যে যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক বৈষম্যÑ এই সমস্যাগুলো যখন সামনে চলে এসেছে তখন এই নতুন রাজনৈতিক দল গঠন হচ্ছে। এসব সমস্যা সমাধানে কল্যাণকর রাষ্ট্র গঠনের জন্য একটা বন্দোবস্ত করবেÑ এটাই তাদের কাছে আমাদের চাওয়া। এক্ষেত্রে তারা চেষ্টা করবে যেন পূর্ববর্তী দলগুলোর মতো তারা ফ্যাসিস্ট বা স্বৈরাচার না হয়। মানুষের কাছে যেন তারা বোঝা হয়ে না দাঁড়ায়, হিংস্র হয়ে না ওঠেÑ এটাই আমাদের প্রত্যশা।

বরিশাল থেকে আগত মার্জিয়া রহমান বলেন, আমরা চাই এই দল ক্ষমতায় আসুক। তারা এমন এক পরিবেশের সৃষ্টি করুক, যেখানে মধ্যরাতে আমি যেন স্বাচ্ছন্দ্যে বাসা ফিরতে পারি। আমি যেন বাইরে বের হয়ে নিরাপদে হাঁটতে পারি। নিরাপদ, বৈষম্যহীন ও ধর্ষণ সহিংসতামুক্ত এক রাষ্ট্র গঠন করুক এই দল।

এদিকে জুলাই আন্দোলনে নিহত জাবির ইব্রাহিমের বাবা নওশের আলী বলেন, এই দেশে ১৯৭১ সালে, নব্বইয়ে এবং সর্বশেষ চব্বিশের জুলাই বিপ্লবে যেভাবে রক্তক্ষরণ হয়েছিল, সেই রক্তক্ষরণ আমরা চাই না। দলটির প্রতি আমার অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা থাকবে, সমর্থন থাকবে, তারা যেন নতুন বাংলাদেশ উপহার দেয়। আমি চাই, আমার দেশ যেন এই দলের কাছে নিরাপদ থাকে। এই দল আরও ভালো করবে। এই দলের প্রতি আমাদের, বিশেষ করে এই শহীদ পরিবারের পক্ষ থেকে তাদেরকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাই।

আইন উপদেষ্টার অনুভূতি

দলটির আত্মপ্রকাশ নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে লিখেছেন, আমি বুঝতে পারিনি। নতুন সংগঠন করার কয়েক মাসের মাথায় তারা এক অসম্ভবকে সম্ভব করল। প্রবল প্রতাপশালী আর নির্মম ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ঘটাল। আখতারের সংগঠনের নাহিদ হয়ে উঠল এই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান নেতা। উত্তাল জুলাইয়ে আমার এবং আমার মতো লক্ষ মানুষের নেতা! তারপর নাহিদের সঙ্গে কাজ করলাম নতুন সরকারে। কতবার যে সে আমাকে বিস্মিত করল; তার যোগ্যতা, বাকসংযম, ব্যক্তিত্ব আর অকল্পনীয় ম্যাচিউরিটি দিয়ে! আজ (গতকাল) নাহিদ আর আখতার শুরু করছে নতুন যাত্রা। জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র-তারুণ্যের প্রত্যাশা পূরণে শুরু হলো তাদের নতুন দলের অভিযাত্রা। জাতীয় নাগরিক পার্টির সবার জন্য অনেক দোয়া ও শুভকামনা।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা