প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৬ পিএম
আপডেট : ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৫ পিএম
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। প্রবা ফটো
জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার ছাড়া গণতন্ত্র ব্যর্থ হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের
আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ ও যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের
প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে দুদু বলেন, ‘দেশে একটা
ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। এত বড় একটা পরিবর্তনের
পরেও বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেধেছিল। তাদের জীবন ধারণের জন্য অন্ততপক্ষে গত সরকারের
আমলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে
শুরুতেই দ্রব্যমূল্যের দাম একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের
যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে, সেটির ধারেকাছেও তারা যেতে পারেনি। এ দেশের
কৃষক শ্রমিক সবসময় অবহেলিত থেকেছেন এবং নিমর্মতার শিকার হয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘বিএনপি গরিব মানুষের দল। বিএনপি খেটে
খাওয়া মানুষের দল। কামার, কুমার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণির
মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। সেই বিএনপি আজকে এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাল কিন্তু
সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ৬ মাস চলে যাওয়ার পরে ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে।
এ সরকার বাজার দর এখনও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি। মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি।
দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছে না বলেও মন্তব্য করেন তিনি।’
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, ‘আমরা শুরুতেই
বলেছিলাম, সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন
দেন। বর্তমান সরকার তার সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল, সেটা তারা করতে
পারেনি। এ সরকারকে এখনও পর্যন্ত আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি, সঠিক পথে
থাকার জন্য। হয়ত তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হতে পারে, কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে
দেখানো ছাড়া কোনো পথ নেই। কারণ তারা যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে এর অংশীদার আমাদেরকেও হতে
হবে। সরকারের সমালোচনার কারণ হলো- তারা যাতে সফল হয়। এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে
চাই না।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘দেশের মধ্যে
এক ধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরি হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয়
সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছে। বলতেই পারে! সকল রাজনৈতিক দল তো স্বাধীন।
সকল রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। তারা যদি মনে করে যে, এই সরকারের সংস্কার দরকার,
সে কথা তারা বলতে পারে। আমার কাছে মনে হয়, নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার করতে
পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত
সরকার যদি কেউ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে তারা ব্যর্থ হবে। সেজন্য
আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।’
আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উপদেষ্টা এম নাজমুল
হাসান।
ফোরামের সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য
রাখেন- বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব
কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের
সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য
ইসমাইল হোসেন সিরাজী ও জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ প্রমুখ।