× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সংসদীয় এলাকা

পুরোনো সীমানায় ফেরার দাবি জমছে ইসিতে

ফসিহ উদ্দীন মাহতাব

প্রকাশ : ০৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৯ এএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

জাতীয় সংসদের ৩০০ আসনের বিপরীতে সীমানা বিন্যাস চেয়েছেন বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতারা। ২০০১ সালে অনুষ্ঠিত অষ্টম জাতীয় সংসদের নির্বাচনী আসনের আদল ফিরিয়ে আনার যৌক্তিকতাও তুলে ধরেছেন তারা। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা আসন বিন্যাসকে উদ্দেশ্যমূলক বলে অভিযোগও তোলা হচ্ছে। তাই সেটি বাতিল করে আগের বিন্যাস বহাল করতে নির্বাচন কমিশনের (ইসি) প্রতি জোরাল দাবি জানানো হয়েছে। এ নিয়ে এরই মধ্যে নির্বাচন কমিশনে ঢাকা, সাতক্ষীরা, যশোরসহ ৬৩টি আসন থেকে অভিযোগ জমা হয়েছে। আরও কয়েকটি এলাকা থেকে অভিযোগ জমা হবে বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র আরও জানায়, নিয়ম অনুযায়ী কমিশন থেকে এ বিষয়ে আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরপরও বিনা বিজ্ঞপ্তিতে জমা হওয়া আবেদনগুলো আমলে নিয়ে ইসি বিশেষভাবে সেগুলো পর্যালোচনা করছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সময় নতুনভাবে গঠিত নির্বাচন কমিশনের কাছে আবেদনগুলো যৌক্তিক মনে হলে কয়েকটি জেলার আসনসংখ্যা যেমন বাড়তে পারে, তেমনি কমতে পারে ঢাকা মহানগরসহ কয়েকটি জেলার আসন। 

জানা গেছে, যশোরের নির্বাচনী এলাকা-৪ সম্পর্কে অভিযোগ করেছেন অংশীজনরা। একইভাবে সাতক্ষীরা জেলার বিষয়ে আবেদন করা হয়েছে। যেমনÑ ২০০১ সাল পর্যন্ত সাতক্ষীরা জেলায় আসন ছিল পাঁচটি। কিন্তু পরে একটি আসন কমিয়ে চারটি করা হয়। এই জেলার শ্যামনগর উপজেলা অখণ্ড রেখে কালিগঞ্জের আটটি ইউনিয়ন যুক্ত করে ২০০৮ সালে বর্তমান সাতক্ষীরা-৪ সংসদীয় আসন করা হয়। আগে দেশের সবচেয়ে বড় উপজেলা শ্যামনগর নিয়েই একক একটি সংসদীয় আসন করা হয়। এ বিষয় নিয়েই অভিযোগ জমা হয়েছে। এটি আমলে নেওয়া হলে এ জেলায় আগের মতোই একটি আসন বাড়তে পারে। 

সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে সংসদীয় আসনের আসন বিন্যাসে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়েছিল। এ নিয়ে তৎকালীন প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. শামসুল হুদার কমিশনের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ-অসন্তোষ ছিল। আসনগুলোর রাজনৈতিক নেতারা ও সাধারণ ভোটাররা সংক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। তারপরও বিষয়টি আমলে নেয়নি তৎকালীন ইসি। অভিযোগ উঠেছে, শামসুল হুদার পথ অনুসরণ করে দশম সংসদ নির্বাচনে ৫০টি আসনে, ২০১৮ সালে একাদশ সংসদে ২৫টি আসনে এবং সর্বশেষ দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে ১০টি আসনে পরিবর্তন এনেছিল আওয়ামী লীগের আমলে গঠিত কমিশনগুলো। এসব আসন বিন্যাসের ক্ষেত্রে ব্যক্তিবিশেষকে সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। 

এবার এএমএম নাসির উদ্দিনের নেতৃত্বে গঠিত নতুন নির্বাচন কমিশন দায়িত্ব নেওয়ার পর সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্বিন্যাসের বিষয়টি আমলে আনে। একাধিক রাজনৈতিক দল ও সংক্ষুব্ধরা ইসির কাছে দাবি জানিয়েছে, ১৯৮৪ সালে যে গেজেট বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সীমানা নির্ধারণ করে ৮৬, ৯১, ৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেটি ফিরিয়ে আনতে হবে।

জানা যায়, এক-এগারোর সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকার দায়িত্বে এসে কমিশন পুনর্গঠন করে। পুরোনো কমিশন বদলে ড. শামসুল হুদাকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার করেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কমিশনার নিয়োগ দেওয়া হয় সাবেক বিচারক ছহুল হুসাইন ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেনকে। দায়িত্ব নিয়ে তারা নির্বাচনী আইন সংস্কার, নতুন রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন, ছবিযুক্ত ভোটার জাতীয় পরিচয়পত্র প্রণয়ন ও সংসদীয় আসনের সীমানা বিন্যাস করেন। এই কমিশনের সময় প্রথম ঘরে বসে জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম (জিআইএস) পদ্ধতিতে সীমানা বিন্যাস শুরু হয়। অভিযোগ রয়েছে, এই আসন বিন্যাসের উদ্দেশ্য ছিল বিএনপি-জামায়াতের ভোটব্যাংক হিসেবে পরিচিত আসনগুলো ভেঙে দেওয়া। সে সময় ১৩০টি আসনে ব্যাপক পরিবর্তন আনা হয়। এর ফলে স্বাধীনতার পর থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত এলাকার মানুষ যেভাবে ভোট দিয়ে অভ্যস্ত ছিল, নবম সংসদের আগে আসন বিন্যাসের কারণে তারা ভিন্ন অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হয়। 

অভিযোগ রয়েছে, নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে বিশেষ সুবিধা দিতেই সারা দেশের ৩০০ সংসদীয় আসনের মধ্যে ১৩০টিতে ব্যাপক রদবদল হয়। বেছে বেছে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত আসনগুলো পুনর্বিন্যাস করা হয়। ওই সময় ঢাকায় আওয়ামী লীগকে বাড়তি সুবিধা দিতে কুমিল্লাসহ ১২টি জেলার ১০টি সংসদীয় আসন কাটছাট করেছিল কমিশন। ঢাকা জেলায় ১৩টি থেকে সংসদীয় আসন করা হয় ২০টি। যে ১২টি জেলা থেকে আসন কর্তন করা তার মধ্যে ১০টি ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির দখলে ছিল। একটিতে জামায়াতের আর অন্যটি ছিল আওয়ামী লীগের। এ আসন  বিন্যাস অবিকল বহাল রেখে দায়িত্ব শেষ করে গেছে বিতর্কিত কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ, কেএম নুরুল হুদা ও কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশন। 

অভিযোগ জমা পড়েছে ৬৩টি

সূত্র বলছে, ঢাকা জেলার দোহার ও নবাবগঞ্জ উপজেলাকে ২০০১ সালের আদলে স্বতন্ত্র আসনে পরিণত করার দাবিতে ইসিতে আবেদন করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার একাধিক নাগরিক। সালাউদ্দিন মোল্লা যাতায়াতের অসুবিধার কথা উল্লেখ করে আগের মতো ঢাকা-১ দোহার উপজেলাকে একক আসন করার দাবি জানিয়েছেন। একইভাবে নবাবগঞ্জকে স্বতন্ত্র উপজেলা হিসেবে ঢাকা-২ আসন চেয়ে মো. হুমায়ুন কবীর আবেদন করেছেন। বরগুনা জেলার আসন ২০০১ সালের আদলে তিনটি করার দাবি জানিয়ে পৃথক আবেদন করেছেন মো. নুরুল আমীন, বিএনপির সাবেক এমপি নুরুল ইসলাম মনি, ওমর আব্দুল্লাহ শাহীন ও আলহাজ অধ্যাপক আবদুল মজিদ মল্লিক। একাদশ জাতীয় সংসদের মতো ভাণ্ডারিয়া, কাউখালী ও ইন্দুরকানী নিয়ে পিরোজপুর-২ আসন করার আবেদন জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আসনের ১০ জন বাসিন্দা। মানিকগঞ্জ জেলার একটি কমিয়ে তিনটি আসন করা হয়। সেখানে আগের মতো চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে ২০ জন নাগরিক আবেদন করেছেন। সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলাকে একক সংসদীয় আসন করার দাবি জানিয়ে আবেদন করেছেন আবদুল ওয়াহেদ। এ ছাড়া আবেদন জমা পড়েছে ফরিদপুর, সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, নারায়ণগঞ্জ, রাজবাড়ী, কেরানীগঞ্জ, সাভার ও পিরোজপুর জেলা থেকেও। 

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘সীমানা পুনর্বিন্যাস করার জন্য নির্বাচন কমিশন থেকে এখনও বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়নি। এরপরও ৬৩টি আসনের পুনর্বিন্যাসের জন্য রাজনৈতিক দলের নেতারা আবেদন জানিয়েছেন। এগুলো সংরক্ষণ করতে সংশ্লিষ্ট শাখাকে নিদের্শনা দেওয়া হয়েছে। সময়ে সময়ে সেগুলো পর্যালোচনাও করা হচ্ছে। আবেদনগুলোর যৌক্তিকতা আমলে নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক : মোরছালীন বাবলা

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা