মার্চ ফর ইউনিটি
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৮:৪৪ পিএম
আপডেট : ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ ২১:৩৩ পিএম
আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারির দাবি এসেছে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ সমাবেশ থেকে।
মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) বিকালে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশ থেকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির নেতারা এ আল্টিমেটাম দেন।
সমাবেশে শেখ হাসিনাকে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর ও ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবিও জানান বক্তারা।
সভাপতির বক্তব্যে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমাদের জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কোনো ঘোষণাপত্র নেই। আমরা বলেতে চাই, আগামী ১৫ জানুয়ারির মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র জারি করতে হবে। ১৫ জানুয়ারি পর্যন্ত আপনারা ঘোষণাপত্রের পক্ষে জেলায়, মহল্লায় মানুষের কাছে যাবেন। তাদের কথা শুনবেন যে তারা কী বলতে চায়।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অনেকেই মেনে নিতে পারেনি। দেশে আগে ছিল সতীদাহ প্রথা, এখন গদিদাহ প্রথা। আপনারা রিয়েলিটি মেনে নেন। হাসিনা দেশের মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়েছিল। সকলের বাকস্বাধীনতা কেড়ে নিয়েছিল। আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি।’
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমরা এখনো জুলাই কাণ্ডসহ বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি। পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে লাইট নিভিয়ে আলেমদের হত্যার বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি। এ দেশে আওয়ামী লীগ ছাড়া আমাদের আর কোনো শত্রু নেই।’
বাজার স্থিতিশীল রাখার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সিন্ডিকেট এক হাত থেকে আরেক হাতে গেছে। তাহলে আপনারা যারা দেশ পরিচালনা করছেন তাদের কাজটা কী, দ্রব্যমূল্য কেন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছেন না?’
জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন পাটোয়ারী বলেন, ‘ছাত্র-জনতার গণজাগরণের দাবিকে সরকার সকল রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে ঘোষণাপত্র দেবে বলে ঘোষণা করেছে, এটি আমাদের বড় বিজয়। সেখানে আমাদের রক্তের কথা অক্ষরে অক্ষরে না পেলে সেটি মেনে নেবে না। ৫৩ বছরে ভেঙে পড়া প্রতিষ্ঠানগুলোর সংস্কার দেখতে চাই। তাছাড়া কোনো রাষ্ট্রের চোখ রাঙানি দেখতে চাই না।’
তিনি বলেন, ‘জুলাই হত্যাকাণ্ডের সুবিচার না পেলে বাঘের বাচ্চারা নিজেদের হাতে আইন তুলে নিবে। আওয়ামী লীগকে খুনের বিচারের জন্য মাঠে থাকবে। এরা দেশে যতদিন থাকবে ততদিন আওয়ামী লীগকে এ দেশে স্বাধীনভাবে চলতে দেবে না।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব আরিফ সোহেল বলেন, ‘৫ মাস আগে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। আমরা ৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে এক দফার কর্মসূচি দিয়েছিলাম। সর্বস্তরের মানুষ সেই আন্দোলনে অংশ নিয়ে ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে হটিয়েছে। আমরা নতুন বাংলাদেশ গঠন করেই ছাড়ব।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য সচিব আখতার হোসেন বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ সংস্কার চায়। সরকারের পক্ষ থেকে জুলাই বিপ্লবের ঘোষণা ১৫ জানুয়ারির মধ্যে আমরা দেখতে চাই।’
জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখ্যসংগঠক সারজিস আলম বলেন, ‘আমাদের ভাই-বোনদের হত্যা করেছে ছাত্রলীগের খুনিরা। তাদের বিচার হতে হবে।’
বিকাল ৪টায় জুলাই অভুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে ‘মার্চ ফর ইউনিটি’ কর্মসূচি শুরু হয়। শহীদ শাহরিয়ার হোসেনের বাবা আবুল হাসানের বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সমাবেশের শুরু হয়।