প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বৈঠক
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২৭ পিএম
আপডেট : ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪ ২০:২৯ পিএম
নির্বাচনি রোডম্যাপ প্রকাশ হয়ে গেলে আর কেউ ষড়যন্ত্র করার সাহস পাবে না বলে মনে করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন। একই সঙ্গে দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে জাতীয় ঐক্যমতের কথাও বলেন তিনি।
জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
বৈঠক শেষে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ‘ঐক্যমতে’ পৌঁছেছেন’ বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা আফিস নজরুল।
জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে ছাত্র নেতা, রাজনৈতিক দল ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করছেন প্রধান উপদেষ্টা। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যের উদ্যোগের কথা জানায় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং। সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে বৈঠক হয়। আজ হয়েছে রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক। কাল ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বসার কথা রয়েছে প্রধান উপদেষ্টার।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করা হয়েছে। তাদের ষড়যন্ত্রকেও এ দেশের ছাত্র-জনতা সকলে মিলে আমরা সকলে মোকাবেলা করব।’
বৈঠকে আলোচনা নিয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের বর্তমান যে পরিস্থিতি, রাজনৈতিক, সামাজিক এবং বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশের ইস্যু তৈরির বিষয়ে বাংলাদেশের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য আমাদের সহযোগিতা চাওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টা রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। এই ডিসেম্বরে লাখো মানুষের শাহাদাতের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা পেয়েছি গণতন্ত্রের জন্য, অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য এবং দেশের শান্তি শৃঙ্খলার জন্য। আজকের এই বিজয়ের মাসে আমাদের সকলের প্রত্যয় বাংলাদেশের বর্তমান সরকার অন্তর্বর্তী সরকার ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাদের দায়িত্ব এই দেশে স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। আমাদের দেশের বিরুদ্ধে পতিত সরকার বিদেশ থেকে যে ষড়যন্ত্র করছে সেই ফ্যাসিস্ট, পতিত সরকারের বিরুদ্ধে সবাই ঐক্যমত পোষণ করেছেন।’
বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টির অপচেষ্টা হচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা আরও বলেন, ‘আমরা সরকারের সঙ্গে ঐক্যমত পোষণ করেছি যে, আমরা সকল জনগণ যেভাবে জুলাই-আগস্টে গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিদায় করা হয়েছে, তাদের এবং তাদেরকে যারা সহযোগিতা করছে তাদের ষড়যন্ত্রকে সেভাবেই এ দেশের ছাত্র-জনতা মিলে ষড়যন্ত্রকে আমরা মোকাবেলা করব।’
নির্বাচন নিয়ে তিনি বলেন, ‘এই সরকার ওয়াদাবদ্ধ জনগণের অধিকারকে ফিরিয়ে দেওয়ার। তাই আমরা বলেছি অতি দ্রুত সংস্কার করে নির্বাচনের জন্য একটা রোডম্যাপ দেওয়া। জনগণ রোডম্যাপ পেয়ে নির্বাচনমুখী হয়ে গেলে যেসব ষড়যন্ত্র এখন আপনারা দেখতে পাচ্ছেন সে সব ষড়যন্ত্র আর কেউ করার সাহস পাবে না।’
বৈঠক শেষে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেছেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশের সবগুলো রাজনৈতিক দল আজ উপস্থিত ছিল। নানা মত, পথ সবাই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অস্তিত্ব, স্বাধীনতা ও মর্যাদা রক্ষার প্রশ্নে সবাই ঐক্যমতে পৌঁছেছেন।’
বৈঠকে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেনের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেয়। প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও অধ্যাপক এ জেড এম জাহিদ হোসেন।
এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পারোয়ারসহ চার সদস্যের প্রতিনিধি দল এ বৈঠকে অংশ নেয়।
এলডিপির প্রেসিডেন্ট কর্নেল (অব.) অলি আহমদ ও মহাসচিব রেদোয়ান আহমেদ, নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, গণ সংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি, গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নূরুল হক নূর ও সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান, এবি পার্টির সদস্যসচিব মজিবুর রহমান মঞ্জু ও যুগ্ম মহাসচিব আসাদুজ্জামান ফুয়াদ বৈঠকে অংশ নিয়েছেন।
এতে আরও অংশ নিয়েছেন ভাসানী অনুসারী পরিষদের রফিকুল ইসলাম বাবলু, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মামুনুল হক, খেলাফত মজলিশের আবদুল বাসিত আজাদ ও জাহাঙ্গীর হোসেন, জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ প্রমুখ।