প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:২৯ পিএম
আপডেট : ০৬ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৫৭ পিএম
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে এ সৌজন্য সাক্ষাতে শহীদ আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী ও আবু হোসেন। প্রবা ফটো
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন বৈমষ্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহীদ আবু সাঈদের দুই ভাই।
বুধবার (৬ নভেম্বর) ঢাকায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় তারা সাক্ষাৎ করেন।
শহীদ আবু সাঈদের ভাইয়েরা জানান, তারা প্রধান উপদেষ্টার জন্য বাবা-মায়ের কাছ থেকে ‘সালাম’ এবং শুভ কামনার বার্তা নিয়ে এসেছিলেন।
তারা অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যখন নিউইয়র্কে গত সেপ্টেম্বরে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে তার ঐতিহাসিক ভাষণে আবু সাঈদ এবং অন্যান্য শহীদদের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরেন, তখন তারা কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন।
এ সময় আবু সাঈদের বড় ভাই রমজান আলী অধ্যাপক ইউনূসকে বলেন, ‘আমরা সম্মানিতবোধ করেছি, আপনি বিপ্লবে তার (আবু সাঈদ) বীরত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেছেন এবং আপনি প্রধান উপদেষ্টা হওয়ার এক দিন পর রংপুরে আমাদের গ্রামে গিয়ে আমাদের সঙ্গে দেখা করেছেন।’
প্রেসিডেন্সিয়াল গার্ড রেজিমেন্ট (পিজিআর) যখন প্রধান উপদেষ্টাকে গার্ড স্যালুট দেন সেই সময় আবু সাঈদের দুই ভাই পোডিয়ামে ছিলেন।
এ প্রসঙ্গে আরেক ভাই আবু হোসেন বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে যখন আমরা মঞ্চে ছিলাম এবং সৈন্যরা আমাদের গার্ড স্যালুট দিয়ে সম্মান জানাচ্ছিল, তখন আমাদের কেমন লেগেছিল তা আমি বলে বুঝাতে পারব না।’
বৈঠকে তারা আবু সাঈদ হত্যা মামলার বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে অবহিত করে বলেন, তারা হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ব্যক্তিদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
তারা জানান, তারা তাদের শহীদ ভাইয়ের নামে একটি ফাউন্ডেশন স্থাপন করবে। তারা বলেছে যে, তারা তাদের ভাইয়ের স্মরণে তাদের গ্রামে একটি ‘মডেল মসজিদ’ এবং একটি মেডিকেল কলেজ তৈরি করতে চায় এবং তারা এই বিষয়ে সহায়তার জন্য দুটি মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদন করেছে।
আবু হোসেন বলেন, ‘ফাউন্ডেশন দরিদ্র এবং জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে হতাহতদের জন্য কাজ করবে।’ আবু হোসেন বলেন।
অধ্যাপক ইউনূস আবু সাঈদের পরিবারের জন্য সব ধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার পুলিশকে তার হত্যার তদন্ত দ্রুত করতে এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘শহীদ আবু সাঈদ এবং তিনি জাতির জন্য যা করেছেন তা বাংলাদেশ কখনও ভুলবে না। তার আত্মত্যাগ স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণঅভ্যুত্থানে বিরাট ভূমিকা রেখেছিল।’
তিনি পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেন, তাদের জন্য তার দরজা সব সময় খোলা থাকবে।
তিনি বলেন, ‘আমি সব সময় তোমাদের সঙ্গে থাকব।’ তিনি দুই ভাইকে তাদের বাবা-মাকে তার ‘সালাম’ জানাতে বলেছেন।
অধ্যাপক ইউনূস অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার ঠিক এক দিন পর গত ৯ আগস্ট রংপুরের উত্তর জেলা বাবনপুর গ্রামে আবু সাঈদের বাবা-মায়ের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি শহীদ আবু সাঈদের কবরেও দোয়া করেন। আবু সাঈদ ১৬ জুলাই পুলিশের গুলিতে নিহত হন।