প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৪৩ পিএম
আপডেট : ০৩ নভেম্বর ২০২৪ ২২:২০ পিএম
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। ফাইল ফটো
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, আদানির বিদ্যুৎ মূল্য পরিশোধের ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ সরকার অনেক টাকা বাকি রেখে গেছে। কোনও একটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থার কাছে বাংলাদেশ জিম্মি হবে না।
রবিবার (৩ নভেম্বর) ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধের আলটিমেটাম নিয়ে ভারতীয় গণমাধ্যমের করা প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘আদানি বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করবে- এমন কোনো চিঠি আমরা পাইনি। এমন কিছু হলে, আমরা সেটার কনডেম (নিন্দা) করি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশে রেমিট্যান্স বেড়েছে। ফলে এখন সেন্ট্রাল রিজার্ভে হাত না দিয়েই আন্তর্জাতিক পেমেন্টগুলো করতে পারছি। ভারতের আদানি গ্রুপের বকেয়া পরিশোধ করার গতি বেড়েছে। সামনে আরও বাড়বে। সেই সক্ষমতা সরকারের আছে।’
বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সরাবরাহ বন্ধের বিষয়ে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদ্যুৎ সরবরাহ বাবদ বাংলাদেশের কাছে প্রায় ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া রয়েছে ভারতের আদানি গ্রুপের। এরই মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে প্রতিষ্ঠানটি। এবার বকেয়া পরিশোধে আলটিমেটাম দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। ৭ নভেম্বরের মধ্যে ৮৫০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ না করা হলে বিদ্যুৎ সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে বাংলাদেশকে জানিয়েছে আদানি পাওয়ার।
সূত্রের বরাতে প্রতিবেদনে বলা হয়, ৩১ অক্টোবর বকেয়া পরিশোধের নির্ধারিত সময়সীমা পার হওয়ার পর বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) কৃষি ব্যাংকের মাধ্যমে ১৭০ মিলিয়ন ডলারের ঋণপত্র খোলার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তিতে উল্লেখিত শর্ত পূরণ করেনি বিপিডিবি।
বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড থেকে গত ৩১ অক্টোবর থেকে বাংলাদেশে তাদের বিদ্যুৎ সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে। টাইমস অব ইন্ডিয়া বলছে, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশের তথ্য অনুযায়ী, গত শুক্রবার (১ নভেম্বর) আদানির গোড্ডা প্ল্যান্ট এক হাজার ৪৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের মধ্যে মাত্র ৭২৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। পায়রা, রামপাল ও এসএস পাওয়ার ওয়ানসহ অন্যান্য বড় কারখানাগুলোতেও জ্বালানি সংকটের কারণে উৎপাদন কমে গেছে।
একটি সূত্রের বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া আরও বলছে, বাংলাদেশ থেকে বকেয়া পরিশোধ খুবই ধীরগতিতে হচ্ছে, ফলে বকেয়া দিন দিন আরও বেড়েছে। সদ্য সমাপ্ত অক্টোবরে আদানি পাওয়ারকে প্রায় ৯০ মিলিয়ন ডলার বকেয়া পরিশোধ করেছে বাংলাদেশ। এর আগের মাসগুলোতে ৯০-১০০ মিলিয়ন ডলারের মাসিক বিলের বিপরীতে বকেয়া পরিশোধ করা হয়েছে মাত্র ২০-৫০ মিলিয়ন করে। যদিও এ বিষয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেননি আদানি। প্রতিষ্ঠানটির জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেছেন, দ্রুতই এ বিষয়ে একটি সমাধানে আশাবাদী তারা।