প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:২২ পিএম
আপডেট : ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৯:৩৯ পিএম
কৃষি কর্মকর্তাদের কার্যক্রম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কেন্দ্রিক হলেও তাদের বদলি কিংবা পদায়ন করে কৃষি মন্ত্রণালয়। যে কারণে এ সেক্টরে সঠিক মূল্যয়ন না হওয়া ও দীর্ঘসূত্রতার অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে নবম থেকে পঞ্চম গ্রেড পর্যন্ত সকল কর্মকর্তার বদলি ও পদায়নের ক্ষমতা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরকে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
কৃষি কর্মকর্তারা বলছেন, সরকারের অন্যান্য অনেক বিভাগে পঞ্চম গ্রেডের কর্মকর্তা পর্যন্ত বদলি পদায়ন হয়ে থাকে নিজ অধিদপ্তর থেকে। অথচ কৃষির ক্ষেত্রে এটি ব্যতিক্রম। এই গ্রেডে সরাসরি বদলি ও পদায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এমনকি ষষ্ঠ গ্রেডেরও মাঠপর্যায়ে কর্মকর্তা ছাড়া অন্যান্য কর্মকর্তাদেরও মন্ত্রণালয় বদলি-পদায়ন করে আসছে। খামারবাড়ি ও অন্যান্য প্রধান দপ্তরে বদলির ক্ষেত্রে সর্বশেষ গ্রেডও (নবম) মন্ত্রণালয়ের অধীনস্ত।
এদিকে গত ২ সেপ্টেম্বর এক প্রজ্ঞাপনে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে নবম গ্রেড থেকে ৫ম গ্রেড পদধারী কর্মকর্তাদের বদলি ও পদায়ন মৎস অধিদপ্তরের কাছে ন্যাস্ত করা হয়েছে। এরপর কৃষিতেও একই সুবিধা দেওয়ার দাবি জোরদার দাবি উঠছে। ইতিপূর্বে এ দাবি ছিল কৃষি কর্মকর্তাদের।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কয়েকজন কর্মকর্তা বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে বদলি ও পদায়ন হওয়ার কারণে সঠিকভাবে মূল্যায়ন হচ্ছে না। এতে দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে। প্রয়োজনের সময় অনেক ক্ষেত্রে কর্মকর্তা পাওয়া যায় না। এটি অধিদপ্তরের হাতে থাকলে কাজে গতি আসবে। তারা বলেন, কৃষিতে যেসব গবেষণা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখানেও দপ্তর প্রধান বদলি করতে পারেন। মৎস, সড়ক, ভূমিসহ অনেক অধিদপ্তরের এ ক্ষমতা রয়েছে। শুধু কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্ষেত্রে এ বৈষম্য। এটা গ্রহণযোগ্য নয়।
বদলি ও পদায়ন অধিদপ্তরের হাতে থাকলে কাজে গতি বাড়বে উল্লেখ করে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর মহাপরিচালক মো. তাজুল ইসলাম পাটোয়ারী বলেন, কাজে গতি আনতে হলে এই বদলি ও পদায়ন অধিদপ্তরের কাছে থাকলে ভালো হয়। আমাদের পূর্ববর্তী মহাপরিচালকরা দীর্ঘদিন যাবত বিষয়টি বলে আসছিলেন। এখন যদি এটি অধিদপ্তরের হাতে থাকে তাহলে খুব সহজেই কাজ করা যায়। অন্যান্য অনেক অধিদপ্তরের হাতে এ ক্ষমতা রয়েছে। এটি যেহেতু মন্ত্রণালয়ের বিষয় তাই উর্ধ্বতন মহল বিষয়টা দেখতে পারে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (সম্প্রসারণ) ড. মলয় চৌধুরী বলেন, এটি একটি নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের বিষয়। সে ক্ষেত্রে অন্যান্য বিভাগের সঙ্গে তুলনা ঠিক হবে না। কৃষি সেক্টর এমন একটি বিষয় যেখানে কোন রকম ঝুঁকি নেওয়ার সুযোগ নেই। সবকিছু খুব ভেবে চিন্তে কাজ করতে হয়। তিনি আরো বলেন, তারপরেও এ বিষয়ে উপদেষ্টা ও সচিব রয়েছেন। তারা প্রয়োজন মনে করলে করতে পারেন। তাতে মন্ত্রণালয়ের চাপ কমবে।
তিনি বলেন, একেকটা মন্ত্রণালয়ের একেক ধরনের নিয়ম আছে। আমাদের কৃষির ক্ষেত্রেও তেমনই আলাদা গাইডলাইন আছে। যাকে ডেলিগেশন অব পাওয়ার বলা হয়। সেখানে নির্দেশনা দেওয়া আছে কে কোন পর্যান্ত কাজ নিষ্পত্তি করতে পারবে বা বদলি, পদায়ন ও অন্যান্য বিষয়াদি। এটির রোলস অব বিজনেসের মতোই। তাই এখানে কোন পরিবর্তন আনতে হলে উর্ধ্বতন মহল থেকে করতে হবে। অনেক নিয়ম-কানুন পাল্টাতে হবে। এক্ষেত্রে অধিদপ্তর যদি আবেদন করে তখন হয়তো মন্ত্রণালয় বিষয়টা নিয়ে চিন্তা করবে। এটির সবচেয়ে ভালো হচ্ছে মন্ত্রণালয়ে নিয়ম মাফিক জানানো। পরে সম্ভব হলে মন্ত্রণালয় তা করবে অথবা করবে না। এখানে আমাদের কোন হাত নেই।