ভ্যানে লাশের স্তুপ
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:৩৫ পিএম
আপডেট : ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৮:২৬ পিএম
ছবি : সংগৃহীত
আশুলিয়ার ভ্যানে লাশের স্তুপের সেই ভাইরাল ঘটনার জন্য দায়ী পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এই বিষয়ে রবিবার (১ সেপ্টেম্বর) গণমাধ্যমে সরেজমিন প্রতিবেদন প্রকাশের পর বিষয়টি নিয়ে পুলিশর উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা হয়। সেখান থেকে তদন্ত কমিটি গঠন এবং লোমহর্ষক এই ঘটনার জন্য দায়ীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির অংশ হিসেবে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়। দায়ীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলার পাশাপাশি লাশ গুম ও পুড়িয়ে নিশ্চিহ্ন করার অভিযোগও আনা হচ্ছে। পুলিশ সদর দপ্তরের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মকর্তা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে প্রতিদিনের বাংলাদেশের সাভার ও আশুলিয়া প্রতিবেদক জানান, ফেসবুকে ভাইরাল হওয়া লাশ স্তুপ করা ও আগুন দেওয়ার একাধিক ভিডিও নিয়ে কাজ শুরু করেছে ৪ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি। ইতোমধ্যেই কয়েকজন পুলিশ সদস্যকে চিহ্নিত করা গেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার আহম্মদ মুঈদ। গতকাল দুপুরে আশুলিয়া থানা পরিদর্শনে গিয়ে আহম্মদ মুঈদ সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান।
পুলিশ সুপার বলেন, ‘যে ভিডিওটি ভাইরাল হয়েছে সেটি আমাদের নজরে এসেছে। আমাদের জায়গায় থেকে যা করণীয় তা আমরা করছি। ইতিমধ্যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা তদন্ত করছেন। আমরা সবার সহযোগীতায় এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের পেয়ে গেছি। আমাদের পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য নামগুলো প্রকাশ করছি না। খুব তাড়াতাড়ি আপনাদের সামনে প্রকাশ করা হবে।’
আহম্মদ মুঈদ বলেন, ‘যেগুলো ভিডিওতে এসেছে সেগুলো দেখেছি, তবে ফিজিক্যাল এভিডেন্স এখনও পাইনি। এগুলো নিয়েও আমাদের কাজ চলছে। ইতোমধ্যেই একটি নিখোঁজ ডায়েরি হয়েছে। আমরা এটি নিয়েও কাজ করছি। আশা করছি খুব ভাল একটা রেজাল্ট আসবে।’
জড়িত পুলিশের বিরুদ্ধে মামলা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘যে অপরাধী সে যেই হোক তার বিরুদ্ধে মামলা হবে। পুলিশ আইনের বাইরে নয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু ছাত্র-জনতা না, আমাদের অনেক পুলিশ সদস্যকেও আগুনে পুড়িয়ে মারা হয়েছে। পুলিশ হত্যার মামলাও হবে। প্রধান উপদেষ্টার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে মানবাধিকার লঙ্ঘন হলে গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারীরা গত ৫ আগস্ট নবীনগর চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল এলাকায় জমায়েত হতে থাকেন। পরে শেখ হাসিনার দেশ ত্যাগের খবরে আন্দোলনকারীরা আশুলিয়া থানার দিকে অগ্রসর হয়। এ সময় পুলিশ আন্দোলনকারীদের লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। এ ঘটনায় ৫ আগস্ট আশুলিয়ায় ১৫ জনের মৃত্যু হয় (ভ্যানে তোলা লাশের হিসাব বাদে)। ঘটনার ১৫ দিন পর পুলিশ লাশ স্তুপ করার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সেখানে একটি ভ্যানে ৬ জনের লাশ দেখা যায়। পরবর্তীতে ঘটনাটি আশুলিয়া থানার পাশে বলে নিশ্চিত হওয়া যায়।