× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামানের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধান শুরু

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৪ ১৩:৩১ পিএম

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রবা ফটো

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। প্রবা ফটো

সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানে কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দুদকের প্রধান কার্যালয় থেকে কমিশন সভায় সদস্যরা এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। দুর্নীতি দমন কমিশনের উপপরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলমের নেতৃত্বে এই অনুসন্ধান কমিটি গঠন করা হয়েছে।

দুদকের উপ পরিচালক আখতার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, কমিশন সভায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে সিন্ডিকেট করে বস্তায় বস্তায় ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ শিরোনাম একটি অভিযোগ জমা হয়। সেটা অনুসন্ধানের জন্য সদস্য তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। 

অভিযোগে বলা হয়েছে, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই ঘুষ হিসেবে বস্তা বস্তা টাকা নিতেন। পুলিশ, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিস থেকে এই টাকা আদায় করা হতো। এ জন্য তৎকালীন অতিরিক্ত সচিব ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের নেতৃত্বে সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। এই সিন্ডিকেটের অন্য সদস্য ছিলেন যুগ্মসচিব ধনঞ্জয় কুমার দাস, মন্ত্রীর সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) মনির হোসেন, জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মোল্লা ইব্রাহিম হোসেন। টাকা আদায় বা উত্তোলনে মূল ভূমিকা পালন করতেন ড. হারুন অর রশীদ বিশ্বাস। হাজার হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এই কামাল-হারুন সিন্ডিকেট। একপর্যায়ে হারুন অর রশীদ অবসরে গেলেও এই মন্ত্রণালয়ের সকল ঘুষ, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করতেন তিনি। ঝুঁকি এড়াতে টাকাগুলো পাঠানো হয়েছে দেশের বাইরে।

অভিযোগ আরও রয়েছে, জেলায় পুলিশ সুপার নিয়োগে সর্বনিম্ন ৮০ লাখ থেকে ২ কোটি টাকা পর্যন্ত নিতো এই চক্র। এই সিন্ডিকেটের আশীর্বাদ ছাড়া পুলিশের কেউ কোনো জেলায় বা গুরুত্বপূর্ণ পদে পদায়ন পেতেন না। জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে পদায়নের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৩ কোটি টাকা নিতেন এই সিন্ডিকেট।

২০২২ সালের ৩০ জুন গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের (জিএমপি) কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পান ডিআইজি মোল্ল্যা নজরুল ইসলাম। পাঁচ কোটি টাকার বিনিময়ে মোল্ল্যা নজরুলকে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে পদায়ন করা হয়। এর মাস খানেক আগে হারুন অর রশীদ বিশ্বাসের কাছে ৫ কোটি টাকার একটি চেক দেন মোল্ল্যা নজরুল। পরবর্তীতে গাজীপুরের কমিশনার হিসেবে নিয়োগের পর হোটেল ওয়েস্টিনে হারুন অর রশীদের কাছে নগদ ২ কোটি টাকা দেন তিনি। এসময় পূর্বের চেকটি ফেরত নিয়ে মোল্ল্যা নজরুল ৩ কোটি টাকার একটি চেক দেন। পরবর্তীতে বাকি টাকাও দেওয়া হয়। এসব টাকা বস্তায় ভরে পৌঁছে দেওয়া হতো আসাদুজ্জামান খান কামালের ফার্মগেটের বাসায়। 

মন্ত্রিপুত্র জ্যোতি পুলিশের এক কর্মকর্তাকে বদলি করতে গিয়ে ব্যর্থ হন। কামাল তাকে জানান, হারুন অর রশীদের সঙ্গে কথা বলতে। এ নিয়ে গত জুন মাসে বাসায় কলহ তৈরি হয়। ক্ষুব্ধ হয়ে বাসায় ব্যাপক-ভাঙচুর করেন জ্যোতি। এনজিওর ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ বা ‘এনওসি’ দিতে গিয়ে প্রতি সংস্থা থেকে ৮০ লাখ থেকে ১ কোটি টাকা দিতে হতো আসাদুজ্জামান খান কামালের দরবারে। এ সংক্রান্ত প্রমাণ রয়েছে দ্য নিউজের কাছে। এরমধ্যে ২০১৮ সালে রাজধানীর উত্তরা এলাকার একটি উন্নয়ন সংস্থার এনওসি নিতে গেলে বিপত্তি শুরু হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে। এর আগে পুলিশের বিশেষ শাখা, জেলা প্রশাসক, এনএসআই ইতিবাচক প্রতিবেদন দাখিল করে। তারপরও অদৃশ্য কারণে ফাইলটি মাসের পর মাস আটকে রাখা হয় মন্ত্রণালয়ে। বাধ্য হয়ে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে নির্বাচনের আগে মন্ত্রীকে ৮৫ লাখ টাকা দেওয়া হয়। ফার্মগেট এলাকায় কামালের বাসার সামনে টাকার ব্যাগটি দেওয়া হয় তার পরিবারের এক সদস্যের কাছে। 

ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্সে কোনো সার্কুলার হলেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে একটি তালিকা পাঠানো হতো। সে মোতাবেক তাদেরকে নিয়োগ দিতে ফায়ার সার্ভিসকে বাধ্য করতেন সাবেক এই মন্ত্রী। ২০২৩ সালে ২ অক্টোবর ৫৩৫ জনকে জনকে নিয়োগ দেয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তর। এরমধ্যে ছিলেন ৪৩৬ পুরুষ ফায়ার ফাইটার, ১৫ জন নারী ফায়ার ফাইটার ও ৮৪ জন গাড়িচালক। নিয়োগ কার্যক্রমের শুরুতেই মন্ত্রীর দপ্তর থেকে ২৫০ জনের একটি তালিকা পাঠানো হয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের কাছে। সাবেক এই মন্ত্রীর নির্দেশে সেই তালিকা মোতাবেক নিয়োগ দিতে বাধ্য হয় ফায়ার সার্ভিস। সূত্রমতে, নিয়োগের জন্য জনপ্রতি ৮-১২ লাখ টাকা নিতেন কামাল-হারুন সিন্ডিকেট।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা