প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ১৮:১৬ পিএম
আপডেট : ০৫ আগস্ট ২০২৪ ১৯:৩০ পিএম
শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ-আন্দোলন দমন করতে লাঠি-গুলি-হুঙ্কার-প্রায় সব অস্ত্রই ব্যবহার করেছিল আওয়ামী লীগ সরকার। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। গণবিক্ষোভের জেরে শুধু প্রধানমন্ত্রিত্ব থেকে ইস্তফা দেওয়াই নয়, বাংলাদেশও ছাড়তে হল শেখ হাসিনাকে।
১৯৭৫ সালের ১৫ অগস্ট নিজের বাসভবনে হত্যা করা হয়েছিল সপরিবার শেখ মুজিবর রহমানকে। আর কাকতালীয় ভাবে প্রায় ৫০ বছর পরের এক অগস্টে দেশ ছাড়তে হলো মুজিব-কন্যা হাসিনাকে।
বাংলাদেশ স্বাধীন দেশ হিসাবে আত্মপ্রকাশ করার কিছু দিন আগে ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঢাকার রমনায় রেসকোর্স ময়দানে দাঁড়িয়ে ঐতিহাসিক ভাষণে মুজিবর বলেছিলেন, ‘আমাদের আর দাবায়ে রাখতে পারবা না।’ বাংলাদেশ রাজনীতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ‘দাবায়ে’ রাখার চেষ্টা করেছিলেন হাসিনা। কিন্তু শেষমেশ নতুন করে ছাত্রবিক্ষোভ এবং হিংসা ছড়িয়ে পড়া মাত্র তিন দিনের মাথায় প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দিতে হল হাসিনাকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে ঘিরে গত কয়েক দিন ধরেই উত্তপ্ত ছিল বাংলাদেশ। প্রবল জনরোষের মুখে পড়ে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্ট কোটা সংস্কারের পক্ষে রায় দিলেও নয় দফা দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করেছিল ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’। আটক আন্দোলনকারীদের মুক্তি, সমস্ত মামলা প্রত্যাহার, কোটা আন্দোলনে হামলাকারীদের শাস্তি-সহ আরও বিভিন্ন দাবি ছিল আন্দোলনকারী ছাত্রদের। কিন্তু কয়েক সপ্তাহে পুলিশ-প্রশাসন এবং আওয়ামী লীগের যৌথ ‘হামলা’য় একের পর এক আন্দোলনকারী মারা গিয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে। নয় দফা দাবির পরিবর্তে একটি মাত্র দাবি নিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার কথা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন- হাসিনা সরকারের পদত্যাগ। অন্যথায় সর্বাত্মক অসহযোগের ডাক দেয় তারা।
কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রথম পর্বে আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের ‘রাজাকার’ বলে কটাক্ষ করেছেন বলে অভিযোগ ওঠে। পরে যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেন তিনি। তবে আন্দোলনের নেপথ্যে বিএনপি, কট্টরপন্থী সংগঠন জামাতের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ করেছিলেন হাসিনা। ছাত্রদের প্রতিবাদ-বিক্ষোভে পুলিশের যথেচ্ছ গুলি-বন্দুক ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্র লীগ আন্দোলনরত পড়ুয়াদের থামাতে হাতে অস্ত্র তুলে নিয়েছে বলেও অভিযোগ করেন আন্দোলনকারীরা। সূত্র : আনন্দবাজার