পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁও প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ২০:৪৩ পিএম
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪ ২১:৪৭ পিএম
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় শেখ কামাল আইট ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে কথা বলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। প্রবা ফটো
সরকার স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের যে সংকল্পে এগোচ্ছে, সেক্ষেত্রে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাত কেমন অগ্রাধিকার পাচ্ছে– ধারণা দিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। তিনি বলেছেন, সরকারের লক্ষ্য নতুন প্রজন্মকে স্মার্ট হিসেবে গড়ে তোলা। এজন্য স্কুল পর্যায় থেকে উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আগামী অর্থবছর থেকে প্রতিটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ল্যাব স্থাপনের কার্যক্রম শুরু হবে। তা ছাড়া উদীয়মান আইসিটি খাত থেকে আগামী পাঁচ বছরে পাঁচ বিলিয়ন ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে এই খাতে অন্তত ১০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে।
শনিবার (১৩ জুলাই) উত্তরাঞ্চলের পঞ্চগড় ও ঠাকুরগাঁওতে পৃথক অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন জুনাইদ আহমেদ পলক। পঞ্চগড়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা এবং ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলায় শেখ কামাল আইট ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি।
সারা দেশে ‘স্কুল অব ফিউচার’
জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে পর্যায় ডিজিটাল ল্যাব স্থাপন করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গত ১৫ বছরে ১৩ হাজার ডিজিটাল ল্যাব করা হয়েছে। গত মাসে শিক্ষা সপ্তাহের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আগামী অর্থবছর থেকে প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যায়ে এই কার্যক্রম শুরু হবে।
তিনি বলেন, সারা দেশে স্কুল অব ফিউচার প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে। এর মাধ্যমে প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরা পাশ্চাত্যের মতো উন্নত প্রযুক্তি-সম্বলিত পদ্ধতি অনুসরণ করে শিক্ষিত হবে। রোবটিক, ইন্টারনেট অব থিংক, এআই, সাইবার সিকিউরিটিসহ বিভিন্ন বিষয়ে জানার সুযোগ পাবে।
‘পেপারলেস’ ব্যবস্থা
পলক বলেন, সরকার ইন্টারনেট সেবার দাম কমিয়েছে। ৮৫ টাকার প্রতি এমবিপিএস ইন্টারনেট ৬০ টাকায় আনা হয়েছে। করোনাকালীন দুই বছর ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে প্রায় চার লাখ বিচারিক শুনানি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এক হাজার ৬০০ ভার্চুয়াল সভা করে দাপ্তরিক ও রাজনৈতিক কর্মকান্ড চালু রেখেছিলেন।
তিনি বলেন, আমরা দুই কোটি ফাইল কাগজবিহীন অবস্থায় ডি-নথির মাধ্যমে বাস্তবায়ন করেছি। আমাদের এখন লক্ষ্য পেপারলেস স্মার্ট সরকার ব্যবস্থা। এতে সরকারি সেবা পেতে দপ্তরে ঘুরতে হবে না। স্মার্ট ফোনের মাধ্যমেই মানুষ সেবা নিতে পারবে। জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে ৫৫৫টি জয় স্মার্ট সার্ভিস ইমপ্লয়মেন্ট সেন্টার নির্মাণ শুরু করেছি। প্রত্যেক পোস্ট অফিসকে আরও স্মার্ট ও গতিশীল করা হচ্ছে। প্রতি বছর প্রতিটি শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার থেকে অন্তত এক হাজার তরুণের আইটি খাতে কর্মসংস্থান করা হবে।
জেলা প্রশাসক জহুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন সাবেক রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন, বাংলাদেশ হাই-টেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিএসএম জাফরুল্লাহ প্রমুখ বক্তব্য। উপস্থিত ছিলেন, শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের প্রকল্প পরিচালক আতিকুল ইসলাম, পুলিশ সুপার এসএম সিরাজুল হুদা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক- শিক্ষার্থীরা
ঘরে বসে হাজার ডলার আয় সম্ভব
ঠাকুরগাঁওয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, বাংলাদেশ বর্তমানে আইসিটি খাত থেকে বছরে প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয় করছে। প্রায় সাত লাখ ফ্রিলাইন্সার প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কাজ করে বিলয়ন ডলার আয় করছে। আগামী পাঁচ বছরে এই খাতে পাঁচ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সময়ের আরও ১০ লাখ কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
তিনি বলেন, আইটি ট্রেনিং নিয়ে ঘরে বসেই হাজার-হাজার ডলার আয় করা সম্ভব। আইসিটি খাতে নতুন নতুন উদ্যোক্তা তৈরি করতে একাডেমিক এবং আইটি ইন্ডাস্ট্রির মধ্যে সেতুবন্ধন প্রতিষ্ঠা করা হবে। ফলে যুব সমাজের আত্ম-কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হবে।
পলক বলেন, আমরা পাবলিক, প্রাইভেট অ্যান্ড মিডিয়া পান্টার্শিপের ভিত্তিতে একটি স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক ও জ্ঞানভিত্তিক স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চাই। ঠাকুরগাঁওয়ের আড়াই একর জায়গায় ৬০ কোটি টাকা ব্যয়ে সাততলা বিশিষ্ট শেখ কামাল আইট ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টারের নির্মাণ কাজ আগামী তিন বছরের মধ্যে শেষ হবে। এই সেন্টার থেকে প্রতিবছর অন্তত এক হাজার তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে নিশ্চিত করতে পারব।
এ সময় ঠাকুরগাঁও-১ আসনের সংসদ সদস্য রমেশ চন্দ্র সেন, ঠাকুরগাঁও-২ আসনের সংসদ সদস্য মাজহারুল ইসলাম সুজন, সংসদ সদস্য দ্রৌপদী দেবী আগরওয়ালা, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ আপেল, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোসারুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।