প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪৭ পিএম
আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৫:০৪ পিএম
ফাইল ফটো
কোটা সংস্কার আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। শুক্রবার আন্দোলনের নামে পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি সম্পত্তি ক্ষতির অভিযোগে এ মামলা করা হয়। মামলায় আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় অনেক শিক্ষার্থীকে।
শনিবার (১৩ জুলাই) দুপুরে প্রতিদিনের বাংলাদেশকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন শাহবাগ থানার পরিদর্শক আরশাদ হোসেন।
তিনি বলেন, ‘কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে ডিএমপির শাহবাগ থানায় মামলা হয়েছে। সরকারি সম্পত্তি ক্ষয়ক্ষতির অভিযোগে রাজারবাগ পুলিশলাইনসের পরিবহন বিভাগের গাড়িচালক খলিলুর রহমান বাদী হয়ে রাজধানীর শাহবাগ থানায় এ মামলা করেন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১১ জুলাই কোটা-বৈষম্য-বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পূর্বঘোষিত কর্মসূচি ছিল। সে অনুযায়ী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জড়ো হয়ে বিভিন্ন হলের সামনে দিয়ে প্রদক্ষিণ করে বিকাল ৪টায় স্লোগান দিতে দিতে শাহবাগ মোড়ের দিকে অগ্রসর হতে থাকে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় অতিক্রম করে বেআইনি জনতায় আবদ্ধ হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি দায়িত্ব পালনে বাধা সৃষ্টি করে। তারা শাহবাগ মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে ফেলে ও পুলিশের সঙ্গে ধাক্কাধাক্কি করে। এ সময় কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের মারধর করে সাধারণ জখম করে।
পরে তারা হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে পুলিশের সিনিয়র কর্মকর্তারা ছাত্রদের বুঝিয়েশুনিয়ে পুনরায় শাহবাগ মোড়ে ফিরিয়ে আনতে যান। এ সময় বিএসএমএমইউয়ের পাশে নিরাপদ স্থানে রাখা এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যাননের চারদিক ঘেরাও করে অনেকসংখ্যক আন্দোলনকারী উঠে উদ্দাম নৃত্য শুরু করে। তারা ওয়াটার ক্যানন চালককে গাড়ি থেকে জোর করে বের করার চেষ্টা ও গতিরোধ করে। এর ফলে এপিসি-২৫-এর সামনের দুটি এসএস স্ট্যান্ড, বনাটের ওপরে বাঁ পাশে রেডিও অ্যান্টেনা এবং ডান পাশের পেছনের চাকার মাডগার্ড এবং ওয়াটার ক্যাননের বাঁ পাশের লুকিংগ্লাস ভেঙে আনুমানিক ৫ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি করে।
এ বিষয়ে শাহবাগ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়। ছাত্রদের অন্য সিনিয়র স্যারেরা বুঝিয়েশুনিয়ে এপিসি-২৫ ও ওয়াটার ক্যানন থেকে নামিয়ে আনেন এবং পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু তারা আরও ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশকে লক্ষ করে পানির বোতল, টেপটেনিস বল ও ইটের টুকরা ছুড়ে মারে। এতে অনেক পুলিশ সমস্য আঘাতপ্রাপ্ত হন।
মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, ঘটনাস্থলে উপস্থিত সব সিনিয়র কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্য অত্যন্ত ধৈর্যের সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে অজ্ঞাতপরিচয় ছাত্ররা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শাহবাগের আন্দোলনে যোগ দিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে বারডেম হাসপাতালের গেটের ব্যারিকেড ভেঙে পুলিশ সদস্যদের আহত করে। তারা পুলিশকে উদ্দেশ করে বিভিন্ন ধরনের কটূক্তি করে।
ছাত্ররা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়সহ অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের ওপর হামলা এবং শাহবাগ থানায় ছাত্রদের ধরে নিয়ে গেছে বলে গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি উত্তপ্ত করার চেষ্টা করে। একপর্যায়ে পুলিশকে মারতে তেড়ে আসে ও পুলিশকে বিভিন্ন ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে শাহবাগ মোড় ত্যাগ করে।
আসামিরা বেআইনিভাবে জড়ো হয়ে দাঙ্গা সৃষ্টি করে সরকারি কাজে বাধা দেয়। তারা স্বেচ্ছায় আঘাত করে, গতিরোধ, দাঙ্গা দমনকারী কর্তব্যরতদের প্রতি আক্রমণ ও বাধা দিয়ে ক্ষতিসাধন ও ভয়ভীতি দেখায় বলে এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে।