× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

সারা দেশে তীব্র গ্যাস সংকট, সঙ্গে বাড়তি লোডশেডিং

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১১:৪০ এএম

আপডেট : ১৩ জুলাই ২০২৪ ১১:৪৩ এএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

গ্যাস সংকটে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে জনজীবন। অনেকে রাতে রান্না করছেন, কেউ বাইরে থেকে খাবার নিয়ে আসছেন। শিশুদের খাবার তৈরিতে বিপাকে পড়তে হচ্ছে মায়েদের। অনেকেই আগের দিনের বাসি খাবার খাচ্ছেন। আঘাত এসেছে অর্থনীতির ওপর। পরিবহন ব্যবস্থাও নড়বড়ে হয়ে গেছে। গ্যাসের অভাবে ঠিকমতো চলতে পারছে না গ্যাসচালিত গাড়ি। পেট্রোল পাম্পে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়েও গ্যাস মিলছে না। 

গ্যাসের অভাবে সংকটে পড়েছে বিদ্যুৎ খাতও। বন্ধ থাকছে উৎপাদন। ফলে রাজধানীতেও দিনে কয়েকবার লোডশেডিং হচ্ছে। আর ঢাকার বাইরে অনেক জায়গায় ছয় ঘণ্টাও বিদ্যুৎ পাওয়া যাচ্ছে না। 

প্রয়োজনীয় বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাবে শিল্পকারখানায় উৎপাদন কমে গেছে। কেউ কেউ বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার শুরু করেছেন। তাতে বেড়েছে তাদের উৎপাদন খরচ।

মূলত চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম হওয়ায় দেশে গ্যাসের সংকট আগে থেকেই ছিল। এর মধ্যেই তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) সরবরাহও কমে যাওয়ায় সংকট আরও তীব্র হয়েছে। জানা যায়, জাতীয় গ্যাস গ্রিডের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট ৪২ ইঞ্চি পাইপলাইন দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় জরুরি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মহেশখালী ভাসমান টার্মিনাল থেকে এলএনজি সরবরাহ কমে ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুটে নেমে গেছে। এ টার্মিনাল থেকে গড়ে ৬০০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছিল। 

তবে ক্ষতিগ্রস্ত পাইপলাইন মেরামতে কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়। তাদের ভাষ্য, চট্টগ্রামের আনোয়ারা-ফৌজদারহাট গ্যাসের সঞ্চালন পাইপলাইনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত ও গ্যাস কমিশনিং সম্পন্ন হয়েছে। ফলে শুক্রবার বিকাল থেকেই গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হবে। তবে রাত ৮টা পর্যন্ত তা স্বাভাবিক হয়নি।

বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, গ্রাহক ভোগান্তি লাঘব করতে নিয়মিত মনিটরিং বাড়ানো হবে। সব পাইপলাইনের ম্যাপ রাখার নির্দেশ দিয়ে তিনি বলেন, ম্যাপ হাতে থাকলে এ রকম দুর্ঘটনা ঘটবে না। 

মেরামত কাজে গতকাল থেকে রাজধানীর কয়েকটি এলাকায় গ্যাসের সরবরাহ একেবারেই বন্ধ ছিল। এলাকাগুলো হলোÑ কলাবাগান, কাঁঠালবাগান, পূর্বরাজাবাজার, গ্রিনরোড ও পান্থপথ। এর আশপাশের এলাকায় গ্যাসের চাপ কম ছিল।

শুক্রবার সন্ধ্যায় ধানমন্ডির বাসিন্দা দেবব্রত চক্রবর্তী জানান, বিকাল পেরিয়ে গেলেও এখনও গ্যাসের সরবরাহ পাওয়া যায়নি। নির্ধারিত সময়ে গ্যাস না পাওয়ায় অনেক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যাদের হয়তো সিলিন্ডার আছে তারা কাজ চালাতে পারছেন। এদিকে লোডশেডিংও শুরু হয়ে গেছে।

কলাবাগানের আরেক বাসিন্দা ৬০ বছর বয়সি মো. হাসান বলেন, গতকালের যে রান্না সেগুলো সকালে খেয়েছি। বাইরে থেকে তো সবাই খেতে পারি না। কী করব আর?

একই এলাকার সামিয়া জাহান ছোট দুই শিশুকে নিয়ে বিপাকে পড়েছেন। তিনি বলেন, বাচ্চাদের বাইরের খাবার সহজে দিই না। বাসায় তো লাইনে গ্যাস নেই। তাদের খাবারটাও রেডি করতে পারছি না। 

পেট্রোল পাম্পে মিলছে না গ্যাস 

গ্যাসের জন্য দুই ঘণ্টা পেট্রোল পাম্পে দাঁড়িয়ে আছেন সিএনজিচালক মো. ইব্রাহীম। তিনি বলেন, গ্যাস পাই না। কত সময় এখানেই যাচ্ছে। ভাড়াও মারতে পারিনি। ট্রিপ না দিলে চলব কেমনে?

তিন ঘণ্টা গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে গ্যাস পেয়েছেন ওয়ালিদ শিকদার। তিনি বলেন, এখানে গ্যাস নেই, বাসায় গ্যাস নেই। তিন ঘণ্টা গাড়ি নিয়ে দাঁড়ায় থাকছি, পরে পাইলাম। এভাবে কেমন করে জীবন চলবে? 

শিল্পকারখানা ক্ষতিগ্রস্ত

গ্যাসের সরবরাহ কমে যাওয়ায় শিল্পকারখানার পরিস্থিতি বেশ খারাপ। শিল্প মালিকরা বলছেন, কারখানার বয়লার চালানোর জন্য ১৫ পিএসআই গ্যাসের চাপ থাকা প্রয়োজন। কিন্তু অনেক কারখানায় চাপ কমে দেড় থেকে সাড়ে তিন পিএসআইতে দাঁড়িয়েছে। এমনকি তা শূন্যে নেমে গেছে কোথাও কোথাও! এ পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। একদিকে ডলার সংকট, অন্যদিকে গ্যাসের এমন সংকট চলতে থাকলে শিল্প খাতে বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসবে। 

গ্যাসের অভাবে বিকল্প জ্বালানির ব্যবহারে ব্যয় বেড়ে গেলে উৎপাদিত পণ্যের দামও বেড়ে যাবে, যার প্রভাব অভ্যন্তরীণ তো বটেই, আন্তর্জাতিক বাজারেও পড়বে। চাহিদামাফিক উৎপাদিত পণ্য সময়মতো সরবরাহ করতে না পারলে কিংবা পণ্যের গুণগত মান ঠিক না থাকলে বিদেশি ক্রেতারা অর্ডার কমিয়ে দেওয়া শুধু নয়, বাতিলও করতে পারেন, যা অর্থনীতির জন্য মঙ্গলজনক হবে না। বস্তুত গ্যাসের এ তীব্র সংকট দ্রুত নিরসন করা না গেলে অর্থনীতি ও বাণিজ্যে এর যে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে।

কুমিল্লায় গ্যাস সরবরাহকারী বাখরাবাদ গ্যাস কোম্পানির ব্যবস্থাপক মীর ফজলে রাব্বি জানান, ৯০ শতাংশ বাসায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ। ইপিজেডে গ্যাস সরবরাহ পুরোপুরি বন্ধ আছে।

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা