বিএফএসএর গবেষণা
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪ ১৮:৪৪ পিএম
আপডেট : ০৯ জুন ২০২৪ ২১:২৯ পিএম
ঢাকার রাস্তায় ছয় রকম খাবারে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত জীবাণু। ছবি কোলাজ : প্রবা
রাজধানী ঢাকার ফুটপাথে বিক্রি হয় হরেক রকম পানীয়সহ বিভিন্ন মুখরোচক খাদ্য। এমন ছয় রকম খাবারে মাত্রাতিরিক্ত তিন ধরনের জীবাণুর উৎস পাওয়া গেছে। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন অঞ্চলের স্ট্রিট ফুডের ওপর পরিচালিত গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। চটপটি, ছোলামুড়ি, স্যান্ডউইচ, আখের রস, অ্যালোভেরা শরবত ও মিক্সড সালাদের ওপর এ গবেষণা করা হয়। প্রতিবেদনে– এসব খাবারে মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত এশেরিকিয়া কোলাই (ই-কোলাই), সালমোনেলা এসপিপি ও ভিব্রিও এসপিপি জীবাণু। এসব জীবাণু ডায়রিয়াসহ মানুষের পেটের পীড়াসহ বিভিন্ন সমস্যা তৈরি করতে সক্ষম।
গবেষণাটি করেছে বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ (বিএফএসএ)। সংস্থাটির অর্থায়নে গবেষণাটি পরিচালনা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ফুড নিউট্রেশন অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার রিসার্চ ল্যাবরেটরির প্রধান ড. মো. লতিফুল বারি ও তার দল। রবিবার (৯ জুন) সকালে বিএফএসএ প্রশিক্ষণ কক্ষে গবেষণার প্রতিবেদন তুলে ধরেন লতিফুল বারি।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনকে ৩৭টি অঞ্চলে ভাগ করে গবেষণা কাজ চলে। এই ৩৭ অঞ্চলে ওই ছয়টি খাবারের ৪৫০টি নমুনা সংগ্রহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়।
ফলাফলে দেখা যায়– গড়ে প্রতি প্লেট চটপটিতে ৭ কোটি ২০ লাখ ই-কোলাই, সাড়ে ৭০০ সালমোনেলা ও সাড়ে ৭০০ ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গেছে। ছোলামুড়িতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৭ লাখ ৪০ হাজার, সালমোনেলা ২ হাজার ও ভিব্রিও ৩০ লাখ। স্যান্ডউইচে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ২ হাজার, সালমোনেলা ২ হাজার ও ভিব্রিও ১ কোটি ৬০ হাজার। আখের রসে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৬৫ হাজার, সালমোনেলা ১৭ হাজার ও ভিব্রিও ১৩ হাজার। অ্যালোভেরা শরবতে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ৫৬ হাজার, সালমোনেলা ১৮ লাখ ও ভিব্রিও ১৪ হাজার। মিক্স সালাদে ই-কোলাই পাওয়া গেছে ১ হাজার ৮০০, সালমেনোলা ৫১০ ও ভিব্রিও ৩০০।
গবেষণায় আরও দেখা গেছে– এসব স্ট্রিট ফুড খেয়ে প্রতি ১০ হাজার মানুষে ই-কোলাই ব্যাকটেরিয়ার কারণে দুজন, সালমেনোলা ব্যাকটেরিয়ার কারণে চারজন ও ভিব্রিও ব্যাকটেরিয়ার কারণে মাত্র একজন অসুস্থ হচ্ছেন।
লতিফুল বারি বলেন, দূষিত পানি, নোংরা গামছা, অপরিষ্কার হাত ব্যবহার ও ধুলাবালিময় পরিবেশের কারণে এই ধরনের জীবাণু খাবারে মিশে যাচ্ছে। এজন্য বিক্রেতাদের স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন সম্পর্কে পর্যাপ্ত ধারণা না থাকাও দায়ী। এসব খাবার খেয়ে অনেকেই মত্রাতিরিক্ত জীবণুতে সংক্রামিত হচ্ছে। স্ট্রিট ফুড নিরাপদ করতে বিক্রেতাদের প্রশিক্ষণ ও তদারকিরও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে।
বিএফএসএ চেয়ারম্যান জাকারিয়ার সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান অতিথি ছিলেন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এএইচএম সফিকুজ্জামান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিএফএসএ সদস্য ডা. মোহাম্মদ মোস্তফা।