প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৭ মে ২০২৪ ১১:৫৪ এএম
আপডেট : ২৭ মে ২০২৪ ১২:০২ পিএম
ঘূর্ণিঝড় রেমাল দুর্বল হওয়ায় মহাবিপদসংকেত নামিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর
কয়রা-খুলনার কাছে অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় রেমাল উত্তর দিকে অগ্রসর ও দুর্বল হয়ে স্থল গভীর নিম্নচাপ হিসেবে বর্তমানে যশোর ও তার কাছাকাছি এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর-পূর্ব দিকে অগ্রসর হয়ে ক্রমে বৃষ্টিপাত ঝরিয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগর ও গভীর সাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারগুলোকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
সোমবার (২৭ মে) সকাল ১০টায় আবহাওয়াবিদ ড. মো. বজলুর রশীদের সই করা আবহাওয়ার ১৯ নম্বর বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরে ১০ নম্বর এবং চট্টগ্রাম ও কক্সবাজার সমুদ্রবন্দরে ৯ নম্বর মহাবিপদসংকেত নামিয়ে চারটি বন্দরেই ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্কসংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
ঘূর্ণিঝড়টির সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে ড. মো. বজলুর রশীদ বলেন, রেমাল বর্তমানে কয়রা-খুলনার কাছে অবস্থান করছে। এটি আরও বৃষ্টি ঝরিয়ে নিম্নচাপ ও ক্রমে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হবে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সারা দেশেই বৃষ্টি হচ্ছে। তার মধ্যে কোথাও কোথাও ভারী ও অতি ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ঘূর্ণিঝড়ে বাতাসের গতি নিয়ে তিনি বলেন, সর্বোচ্চ বাতাস ছিল পটুয়াখালীর খেপুপাড়ায়। সেখানে প্রতি ঘণ্টায় এর গতিবেগ ছিল ১১১ কিলোমিটার, সাতক্ষীরায় ৭০, মোংলায় ৮০, চট্টগ্রামে ৭৪ ও ঢাকায় ৫৯ কিলোমিটার। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে কুতুবদিয়ায় ১২৫ মিলিমিটার।
রবিবার দুপুরে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমালের অগ্রভাগের প্রভাবে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় বৃষ্টিপাত শুরু হয়। এদিন সন্ধ্যা ৬টায় রেমালের অগ্রভাগ এবং রাত ৮টার দিকে ঘূর্ণিঝড়টির কেন্দ্র মোংলার দক্ষিণ–পশ্চিম দিক দিয়ে পশ্চিমবঙ্গ উপকূল ও বাংলাদেশের খেপুপাড়া উপকূল অতিক্রম শুরু করে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে। আর রেমালের পুরো ব্যাসার্ধ (দেহ) সকাল ৮টার মধ্যে বাংলাদেশের উপকূল অতিক্রম করে। রেমালের দেহের আকার ছিল প্রায় ৪০০ কিলোমিটার।
ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরগুনা, বরিশাল, ভোলা, পটুয়াখালী, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর প্রবল ঝড়বৃষ্টি ও জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়। কোথাও কোথাও বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি ঢুকে পানিবন্দি হয়ে পড়ে স্থানীয়রা।
প্রবল ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ ভারী (৪৪-৮৮ মিমি) থেকে অতি ভারী (২৮৯ মিমি) বর্ষণ হতে পারে। অতি ভারী বর্ষণের প্রভাবে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি অঞ্চলের কোথাও কোথাও ভূমিধসের আশঙ্কা রয়েছে।
২৩ মে দক্ষিণ-পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ সৃষ্টি হয়। শুক্রবার সকাল ৬টায় সেটি নিম্নচাপ ও গভীর রাতে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হয়। শনিবার সন্ধ্যা ৬টায় গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিলে নাম হয় ‘রেমাল’। ওমানের দেওয়া নামটি আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘বালি’। রেমাল গতকাল রবিবার সকাল ৬টায় প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হয়।