সাংবাদিক নাদিম হত্যা স্বাধীন ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য হুমকি : ডুজা

সংবাদ প্রকাশের জেরে বাংলানিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের জামালপুর জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টেলিভিশনের বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি গোলাম রব্বানী নাদিমকে হত্যার ঘটনাকে স্বাধীন ও সাহসী সাংবাদিকতার জন্য হুমকি বলে মন্তব্য করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (ডুজা)। 

রবিবার (১৮ জুন) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সভাপতি মামুন তুষার ও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম রুবেলের পাঠানো এক বিবৃতিতে নাদিম হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানানো হয়। 

ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোন ঘটনা না ঘটে সেদিক বিবেচনায় রেখে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। 

বিবৃতিতে বলা হয়, স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পার করা একটি দেশে সংবাদ প্রকাশের জেরে রাতে এভাবে টার্গেট করে হত্যা দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দায়িত্বশীলতা নিয়ে সংশয় তৈরি করে। 

এক ভিডিও বার্তায় সাংবাদিক নাদিম প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ প্রশাসনের কাছে নিজের নিরাপত্তার আবেদন জানিয়েছিলেন। কিন্তু একজন নাগরিককে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে প্রশাসন।

ডুজার বিবৃতিতে বলা হয়, হত্যার ঘটনার পর জামালপুর জেলার এসপি নাছির উদ্দিন আহমেদ এক বেসরকারি টেলিভিশনে বলেছেন, ‘নাদিমকে মেরে ফেলার জন্য আঘাত করা হয়নি, সতর্ক করার জন্য আঘাত করা হয়েছে’। দায়িত্বশীল একজন পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের বক্তব্য ‘অপরাধকে হালকা করে দেখার শামিল’। এমন বক্তব্য অপরাধীদের উৎসাহিত করতে পারে। আমরা মনে করি, পুলিশের এ কর্মকর্তার বক্তব্য আইনের দৃষ্টিতে নেওয়ার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। 

গণমাধ্যমের বরাতে ডুজা তাদের বিবৃতিতে উল্লেখ করে, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার সাধুপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদুল আলম বাবুকে নিয়ে সংবাদ প্রকাশের জেরে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন সাংবাদিক নাদিম। 

গত ১৪ জুন রাতে বাড়ি ফেরার পথে বকশীগঞ্জের পাথাটিয়ায় পৌঁছালে অস্ত্রধারী ১০-১২ জন দুর্বৃত্ত নাদিমকে পিটিয়ে জখম করে পালিয়ে যায়। পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

এ ঘটনায় গ্রেপ্তার স্থানীয় ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাহমুদুলসহ ৯ জনকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকি অভিযুক্তদের অবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি। 

সেই সঙ্গে সাংবাদিক দম্পতি সাগর-রুনি হত্যাসহ সকল সাংবাদিক নির্যাতন ও হত্যার ঘটনায় দ্রুত বিচারের দাবি জানায়। 

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সংশোধন বা বাতিলসহ স্বাধীন সাংবাদিকতার পথে জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে সকল ধরনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণে সরকার ও সংশ্লিষ্ট মহলের আশু পদক্ষেপ আশা করছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি।