এখন আপনারা সেলফ সেন্সরশিপ করেন : সাংবাদিকদের মির্জা ফখরুল

দেশের গণমাধ্যমও ফ্যাসিবাদের ভয়াল গ্রাসে আক্রান্ত বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি বলেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো একে একে বন্ধ করে ফেলা হয়েছে। আমি যখন আপনাদের মাঝে আসি তখন মনে হয়, এখনও বোধহয় কিছু অবশিষ্ট আছে, যখন আপনারা কথা বলেন। যখন আবার পত্র-পত্রিকার দিকে তাকাই, চ্যানেলগুলোর কথা শুনি তখন মনে হয় এখানেও ফ্যাসিবাদের সেই ভয়াল গ্রাস আক্রান্ত করেছে।’

রবিবার (১৬ এপ্রিল) বিকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়নের ইফতার অনুষ্ঠানে তিনি এই মন্তব্য করেন।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘ফ্যাসিবাদ সমগ্র সমাজের মধ্যে একটা ভীতি তৈরি করতে পেরেছে। একটা সন্ত্রাসের রাজ্য তৈরি করতে পেরেছে।’

আজকে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নেই উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন আপনারা সেলফ সেন্সরশিপ করেন। সবাই ভাবেন, এটা লেখা যাবে কি যাবে না, আবার ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে যেতে হবে কি না। অনেক সাংবাদিক আছেন যাদের বিরুদ্ধে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা ঝুলছে। আমি এবার জেলে গিয়ে দেখলাম, আমাদের অনেক যুবক তরুণ এমনকি অপরিণত বয়স্ক ছেলে যাদের বয়স ১৮ হয়নি তারাও ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টে আটক হয়েছে, জেলের মধ্যে আছে।’

বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আজকে দেখুন, এখন এমন একটা অবস্থা হয়েছে, এক হয়ে লড়াই করবেন তার সুযোগ রাখা হচ্ছে না। আপনাদের প্রেস ক্লাবে বিভাজন হয়েছে, সাংবাদিকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করা হয়েছে। একটা গণতান্ত্রিকসমাজ, একটা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্য একটা মুক্ত গণমাধ্যম দরকার সেই বিষয়টাকে এরা বেমালুম চেপে দিয়েছে।’

বক্তব্যে সরকারপ্রধানের তীব্র সমালোচনা করেন বিএনপির এই জ্যেষ্ঠ নেতা। তিনি বলেন, ‘পার্লামেন্টে দাঁড়িয়ে এই গণবিচ্ছিন্ন সরকারের প্রধানমন্ত্রী যেভাষায় কথা বলেন, সেই ভাষায় আমরা কল্পনাও করতে পারি না। একটা সভ্য দেশের প্রধানমন্ত্রী এভাবে কথা বলতে পারেন।’

দেশের অবস্থাকে ‘ভয়াবহ’ অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজসহ পেশাজীবীদের সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানান বিএনপি মহাসচিব।

জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের উদ্যোগে এই ইফতার মাহফিল হয়।

বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহর সভাপতিত্বে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলামের সঞ্চালনায় জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।

পরে বিএনপি মহাসচিব সাংবাদিক রুহুল আমিন গাজী, আবদুল হাই শিকদার, এম এ আজিজ, কামাল উদ্দিন সবুজ, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, বিএনপি মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপনসহ সাংবাদিক নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন।