প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ২২:১৯ পিএম
আপডেট : ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০১:৩৮ এএম
রহুল আমিন গাজী। ফাইল ফটো
বাংলাদেশের সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের অন্যতম নেতা, ৯০ ও ২৪ সালের গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার আন্দোলনের অগ্রসেনানী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজী মারা গেছেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্নাইলাইহি রাজিউন।
মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় রাজধানীর পান্থপথে অবস্থিত বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।
ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি ও দৈনিক সংগ্রামের সিনিয়র সাংবাদিক মো. শহিদুল ইসলাম রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
আগামীকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) বাদ জোহর জাতীয় প্রেসক্লাবে নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।
রহুল আমিন গাজী দীর্ঘদিন ধরেই কিডনি জটিলতা, উচ্চ ডায়াবেটিক, ব্যাক পেইন, লবণ ঘাটতিসসহ বিভিন্ন রোগে ভোগছিলেন। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই কন্যা ও এক পুত্র রেখে গেছেন।
গত রবিবার রাত পৌনে তিনটায় রুহুল আমিন গাজীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ডে নিতে হয়রত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে গেলে বিদেশ যাত্রায় অনুমতি না পেয়ে তাকে এয়ারপোর্ট থেকে আবার ঢাকার বিআরবি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সোমবার দুপুরের পর তার অবস্থা বেশ সংকটাপন্ন হয়ে পড়ে।
১৯৫৩ সালে ২২ এপ্রিল রুহুল আমিন গাজীর জন্ম চাঁদপুরের গুবিন্দিয়া গ্রামে। শিক্ষাজীবনে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর ১৯৭৪ সালে রিপোর্টার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন দৈনিক ইত্তেফাক পত্রিকায়। ইত্তেফাক ছেড়ে যোগ দেন এ দেশের প্রাচীন সংবাদপ দৈনিক সংগ্রামে। সেখানে তিনি বিশেষ প্রতিনিধি ও চিফ রিপোর্টারের দায়িত্ব পালন করেছেন।
তিনি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি ও মহাসচিব পদে বারবার নির্বাচিত হন। এছাড়াও অবিভক্ত ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাাদক ছিলেন।
পেশাজীবীদের সংগঠন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন রুহুল আমিন গাজী।
শেখ হাসিনার সরকারের ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে এই সাংবাদিক নেতাকে কারাবন্দি করে রাখে টানা ১৮ মাসের অধিক সময়। কারাগারে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে জামিন দেয়নি সরকার।
বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর মৃত্যুতে সংগঠনটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহিন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব বাছির জামাল এবং ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সভাপতি মো. শহিদুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম মঙ্গলবার এক যৌথ বিবৃতিতে শোক প্রকাশ করেছেন।
তারা বিবৃতিতে সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে মরহুমের নেতৃত্ব দানের কথা স্মরণ করেন। তারা বলেন, সাংবাদিকদের অধিকার আদায়ে রুহুল আমিন গাজীর নেতৃত্ব ছিল অবিসংবাদিত। সংবাদপত্র ও সাংবাদিকদের আজকের অবস্থানে আনার পেছনে যে কজন সাংবাদিক নেতার অবদান অবিস্মরণীয়, তার মধ্যে রুহুল আমিন গাজীর নাম স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।
নেতারা বলেন, তিনি একজন ভালো সাংবাদিক এবং সংগঠক ছিলেন। তিনি সাংবাদিকদের ট্রেড ইউনিয়নের সংগঠনে সাধারণ সদস্য থেকে একবারে নেতৃত্বের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌছেছিলেন। তার মৃত্যুতে সাংবাদিক সমাজ একজন নিবেদিতপ্রাণ সংবাদকর্মীকে হারালো।
নেতারা মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানান।