× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

মেলায় কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদের বই কিনতে ছিল পাঠকদের ভিড়

প্রবা প্রতিবেদক

প্রকাশ : ০৩ মার্চ ২০২৪ ১৬:২৬ পিএম

আপডেট : ০৩ মার্চ ২০২৪ ১৭:২৯ পিএম

বইমেলায় কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি পাঠকরা। প্রবা ফটো

বইমেলায় কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদের সঙ্গে ক্যামেরাবন্দি পাঠকরা। প্রবা ফটো

অমর একুশে বইমেলায় ব্যস্ত দিন পার করেছেন লেখক মোশতাক আহমেদ। গতকাল শনিবার বইমেলার শেষদিন, শেষ সময়ে উপচে পড়া ভিড় ছিল পাঠকের। অনিন্দ্য প্রকাশের সামনে ছিল লম্বা লাইন। বই হাতে কেউ অপেক্ষায় ছিল প্রিয় লেখকের অটোগ্রাফের, কারও ক্যামেরা চালু রেখে ছিল অপেক্ষা, ‘একটা ছবি তো তোলা চাই।’ মোশতাক আহমেদ কাউকে নিরাশ করেননি। 

গতকাল সরেজমিন দেখা গেছে, একে একে পাঠকদের আবদার মেটাচ্ছেন তিনি। শনিবার একের পর এক বইয়ে স্বাক্ষরও করেছেন।

অনিন্দ্য প্রকাশের স্বত্ত্বাধিকারী আফজাল হোসেন জানিয়েছেন, চারটি উপন্যাসই ব্যাপক জনপ্রিয় পাঠকদের কাছে। তবে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে ‘হারোনো জোছনার সুর’। তৃতীয় মুদ্রন শেষে বইটি চতুর্থ মুদ্রনের পথে। শিশু কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণী, মধ্যবয়সী এমন কী প্রবীণরাও কিনছেন মোশতাক আহমেদ এর উপন্যাস।

কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মোশতাক আহমেদ তাদের অন্যতম প্রিয় লেখক, সারা বছর অপেক্ষা করেন তার উপন্যাসের জন্য। কেউ কেউ একটানা পনের বছর ধরেও পড়ছেন মোশতাক আহমেদ এর উপন্যাস। 

মেরিনা নামের এক পাঠক বলেন, ‘মোশতাক আহমেদ এর পাঠক ধরে রাখার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে, কারণ তার উপন্যাসগুলো টান টান উত্তেজনার এবং রহস্যে ভরপুর। একবার পড়তে বসলে আর শেষ করা যায় না। তার এক নম্বর পছন্দ প্যারাসাইকোলজি উপন্যাস।’

বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত হালের সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক মোশতাক আহমেদ এর চারটি উপন্যাস প্রকাশ করেছে অনিন্দ্য প্রকাশ। উপন্যাসগুলো হলো— দ্যা ওল্ড ওয়ার্ল্ড (সায়েন্স ফিকশন), হারানো জোছনার সুর (প্যারাসাইকোলজি), রূপার সিন্দুক (শিশিলিন কিশোর গোয়েন্দা) এবং মৃত্যুবাড়ি (ভৌতিক উপন্যাস)।

মৃত্যুবাড়ি (ভৌতিক উপন্যাস)

এক ঝড়ের রাতে মিরাজের বাসায় উপস্থিত হয় অপূর্ব সুন্দরী দিশা। মানবিকতার খাতিরে দিশাকে রাতে থাকতে দিতে সম্মত হয় মিরাজ। দিশার হাতের রান্না খেয়ে তার ভক্ত হয়ে যায় মিরাজ। দিশার সাংসারিক নানাগুনে ধীরে ধীরে মোহিত হতে থাকে সে। সম্পর্কটা যখন ভালো লাগা থেকে ভালোবাসার দিকে এগোতে থাকে তখনই মিরাজ জানতে পারে দিশাকে পছন্দ করে অশরীরীয় শক্তির অধিকারী মৃত্যুবাড়ির ভয়ংকর কালাবাবা। মৃত্যুবাড়িতে প্রবেশ করলে রক্তপানে হয় কালাবাবার ভক্ত হতে হয়, নতুবা মৃত্যুবরণ করতে হয়। খুব কম সংখ্যক মানুষই আছে ফিরে আসতে পেরেছে মৃত্যুবাড়ি থেকে। এদিকে কালাবাবা নির্দেশ দিয়েছে দিশাকে মৃত্যুবাড়িতে যাওয়ার জন্য। দিশা যেতে চায় না। মিরাজও মরিয়া হয়ে উঠে দিশাকে রক্ষা করতে। কিন্তু কালাবাবার অশরীরীয় শক্তির সাথে সে পেরে উঠে না। দিশাকে সে মৃত্যুবাড়িতে নিবেই। সেক্ষেত্রে দিশাকে চিরতরে হারাতে হবে। কিন্তু মিরাজ তা হতে দেবে না। তাই উঠে পড়ে লাগে সে। কিন্তু একসময় বুঝতে পারে সে নিজেই বন্দি কালাবাবার হাতে। আর এখন কালাবাবা তার রক্তপান করে উদযাপন করবে রক্তউৎসব। 

শেষ পর্যন্ত কী মুক্তি পেয়েছিল মিরাজ? নাকি তাকে বলি হতে হয়েছিল রক্তউৎসবের আনুষ্ঠিকতায়?  আর কী ঘটেছিল অপূর্ব সুন্দরী দিশার জীবনে?

হারানো জোছনার সুর (প্যারাসাইকোলজি)

মাহিন আর মাইশা প্রেম করে বিয়ে করেছে। কিন্তু বিয়ের পর থেকে যেন মাইশার আচার আচরণে অস্বাভাবিকতা প্রকাশ পেতে থাকে। কারণ জিজ্ঞেস করলে জানায়, তার মধ্যে অশরীরীয় কোনো আত্মা আছে যে তাকে নিয়ন্ত্রণ করে, প্রভাবিত করে। ব্যাপারটা বিশ্বাস করতে না চাইলেও মাইশার নানা অনাকাক্সিক্ষত আচরণে তা প্রকাশ পেতে থাকে। মাইশা নিজের চুল নিজেই এলোমেলো করে ফেলে, রাতে বিড়বিড় করে কথা বলে, আয়নার সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে, এটা ওটা ভেঙে ফেলে, এমনকি একে ওকে চড় থাপ্পড়ও মেরে বসে। দেখলে মনে হবে সে বুঝি পাগল! সবচেয়ে ভয়ংকর ব্যাপার হচ্ছে, অশরীরী আত্মাটা গোপনে মাইশাকে তার ভালোবাসার অভিপ্রায়ের কথা প্রকাশ করে। মাইশা রাজি না হওয়ায় তাকে দিয়ে হত্যা করায় খালাতো বোন শিলাকে।

মাইশাকে বাঁচাতে উঠে পড়ে লাগে মাহিন। কারণ সে জানে মাইশা খুনটা করেনি, করেছে মাইশার উপর ভর করা অশরীরী এক আত্মা। কিন্তু বিজ্ঞ আদালতে অশরীরী আত্মার বিষয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ উপস্থাপনায় ব্যর্থ হওয়ায় ফাঁসির আদেশ হয় মাইশার। তারপরও হাল ছাড়ে না মাহিন। ঘটনাক্রমে তার সাথে পরিচয় হয় প্যারাসাইকোলজিক্যাল ইনভেস্টিগেটর ডাক্তার তরফদারের। ডাক্তার তরফদারও বিশ্বাস করেন না অশরীরীয় আত্মার অস্তিত্ব। তাহলে কীভাবে বাঁচানো সম্ভব হবে মাইশাকে! নাকি মৃত্যুই হবে তার শেষ পরিণতি!

দ্যা ওল্ড ওয়ার্ল্ড (সায়েন্স ফিকশন)

রিডিলিন নামের ভয়ংকর এক অজানা প্রাণী আক্রমণ করেছে পৃথিবীকে। পিঁপড়ার মতো আকারের এই প্রাণীগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে পৃথিবীর সকল ধাতব জিনিসকে। মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, গাড়ি, বাড়ি, বিমান, ইলেকট্রিক খুঁটি, সমরাস্ত্রসহ যত ধাতব জিনিস আছে সবকিছুকে অকার্যকর করে দেওয়াই যেন রিডিলিনের কাজ। ফলে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে কলকারখানা, ব্যাহত হচ্ছে কৃষি উৎপাদন, ভেঙে পড়ছে চিকিৎসা ব্যবস্থা। এতে এক মহাবিপর্যয় নেমে আসে পৃথিবীতে। আর এই মহাবিপর্যয়ের নাম ‘রিডিলিন মহাবিপর্যয়’। 

বাংলাদেশি ছাত্র নাফিন পড়তে গিয়েছিল ইংল্যান্ডে। সেখানে পরিচয় হয় আর এক বাংলাদেশি ছাত্রী নাইশার সাথে। তাদের ভালোবাসার অগ্রযাত্রার পথে সবকিছু তছনছ করে দিতে থাকে রিডিলিন মহাবিপর্যয়। চরম খাদ্যাভাব আর জাতিগত দাঙ্গা শুরু হওয়ার কারণে হতবিহ্বল সরকার সিদ্ধান্ত নেয় বিদেশি কাউকে অবস্থান করতে দেবে না ইংল্যান্ডে। তাই দেশে ফিরে আসবে বলে মনস্থির করে নাফিন আর নাইশা। কিন্তু এরই মধ্যে সকল ফ্লাইট বাতিল হয়ে গেছে, বন্ধ হয়ে গেছে জাহাজ কিংবা বাস চলাচল। তাই ঘোড়ায় চড়ে আর পায়ে হেঁটে দেশে ফিরে আসার পরিকল্পনা করে নাফিন। তাকে ফিরে আসতেই হবে। কারণ সে তার মায়ের একমাত্র সন্তান এবং তার মা তার জন্য অপেক্ষা করে আছে। যাত্রা শুরুর পরই তারা বুঝতে পারে গন্তব্যে পৌঁছান কতটা দুঃসাধ্য? কারণ তারা যে আর আধুনিক পৃথিবীতে নেই, অবস্থান করছে আদিম পৃথিবীতে যেখানে রিডিলিনের ভয়ে ধাতুর তৈরি সামান্য একটা ছুরিও সাথে রাখা যায় না!

শেষ পর্যন্ত কী নাফিন আর নাইশা ফিরতে পেরেছিল বাংলাদেশে? আর কী পরিসমাপ্তি ঘটেছিল রিডিলিন মহাবিপর্যয়ের? নাকি রিডিলিনই দখল করে নিয়েছিল সম্পূর্ণ পৃথিবীকে?

শিশিলিন কিশোর গোয়েন্দা রুপার সিন্দুক 

‘যাত্রা’ দেখতে গিয়ে লেলিনের সাথে পরিচয় হয় যাত্রাপালার সেনাপতি জব্বার খিলজির মেয়ে সবুজ চোখের আসমার সাথে। কথাপ্রসঙ্গে জানতে পারে জব্বার খিলজির কাছে একটা রুপার সিন্দুক আছে যেখানে রয়েছে অনেক হীরা জহরত। জব্বার খিলজি তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পেয়েছে রুপার সিন্দুকটি। একমাত্র বিপদগ্রস্ত হলে ঐ সিন্দুক থেকে হীরা জহরত বের করে বিক্রি করা যাবে। জব্বার খিলজি অসুস্থ হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রুপার সিন্দুকটি ভাঙা হবে, কারণ চাবিটি আগেই হারিয়ে গিয়েছিল। তাই দিন ক্ষণ ঠিক হয় রুপার সিন্দুক ভাঙার। সবার মধ্যে তীব্র আগ্রহ জন্মে ঐ রুপার সিন্দুককে কেন্দ্র করে, সবাই দেখতে চায় অমূল্য হীরা, জহরত আর অলংকারাদি। আগ্রহী হয়ে ওঠে শিশির লেলিনও। সিন্দুক ভাঙার সময় দুজনেই উপস্থিত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে আচমকাই চুরি হয়ে যায় ঐতিহাসিক গুরুত্ববহনকারী মহামূল্যবান রুপার সিন্দুকটি। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়, সিন্দুক উদ্ধারে ততক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে শিশির আর লেলিন। 

শেষ পর্যন্ত কি শিশিলিনের ক্ষুদে গোয়েন্দারা উদ্ধার করতে পেরেছিল মহামূল্যবান রুপার সিন্দুক? আর ঐ সিন্দুকে কি আদৌ কোনো হীরা জহরত ছিল? নাকি সবকিছুই ছিল নিছক এক শূন্যতা আর গোলকধাঁধা!

আপনার পছন্দের বই অর্ডার করতে সার্চ করুণ রকমারি ডটকম ও অনিন্দ্য প্রকাশ

অনিন্দ্য প্রকাশ: 01571119666

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা