প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২১:৪২ পিএম
শেষ পর্যন্ত কি শিশিলিনের ক্ষুদে গোয়েন্দারা উদ্ধার করতে পেরেছিল মহামূল্যবান রুপার সিন্দুক? — প্রবা ফটো
অমর একুশে বইমেলায় শিশু-কিশোরদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে কথাসাহিত্যিক মোশতাক আহমেদের লেখা শিশিলিন সিরিজের নতুন কিশোর গোয়েন্দা উপন্যাস ‘রূপার সিন্দুক’। শিশু-কিশোররা গোয়েন্দা উপন্যাসটি কিনতে প্রতিদিনই অনিন্দ্য প্রকাশের স্টলে ভিড় জমাচ্ছে। একইসাথে বহুমাত্রিক লেখক মোশতাক আহমেদের অটোগ্রাফ-ফটোগ্রাফ নিতেও তাদের ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
মেলায় বাবা-মায়ের সাথে এসেছে ১০ বছরের শিশু জায়ান। সে জানালো গোয়েন্দা সিরিজ তার খুবই প্রিয়। শিশিলিন সিরিজের প্রায় সবগুলো বই তার পড়া হয়েছে। এবার এই সিরিজের নতুন বই রূপার সিন্দুক কিনতে এসেছে। তার ভাষ্য, ‘গোয়েন্দা সিরিজ আমার খুব প্রিয়। শিশিলিন বই প্রত্যেকটি আমি পড়েছি। এবার রূপার সিন্দুক বই এসেছে বলে জানতে পেরেছি। এজন্য বাবা-মাকে নিয়ে নতুন বই কেনার জন্য মেলায় এসেছি।’
শিশু জায়ানের বাবা-মায়ের কথায়ও একই বিষয় জানা যায়। এছাড়াও বহু শিশু-কিশোর শিশিলিন সিরিজের রূপার সিন্দুক নিয়ে একই ধরনের কথা জানায়।
অনিন্দ্য প্রকাশের সত্বাধিকারী আফজাল হোসেন বলেন, ‘বইমেলায় প্রতিবছরই এমন চিত্র দেখা যায়। মোশতাক আহমেদের বই মানেই তুমুল জনপ্রিয়। তিনি একজন পুলিশ কর্মকর্তা, গোয়েন্দা কর্মকাণ্ড তাদের নখদর্পণে। এজন্যই হয়তোবা গোয়েন্দা থ্রিলারটা ভালো জমে। এর ফলাফল শিশিলিন সিরিজের বইয়ের ব্যাপক চাহিদা। এবারের বইমেলায়ও আমরা মোশতাক আহমেদের নতুন চারটি বই- প্যারাসাইকোলজি উপন্যাস- হারানো জোছনার সুর; সায়েন্স ফিকশন— দ্য ওল্ড ওয়ার্ল্ড; ভৌতিক— মৃত্যুবাড়ি এবং শিশিলিন গোয়েন্দা সিরিজের রূপার সিন্দুক। এছাড়া তার পুরনো বইয়ের ব্যাপক চাহিদা থাকায় বহু বই আমরা পুনমুদ্রণ করেছি।’
লেখক মোশতাক আহমেদ বলেন, ‘২০০৪ সালে আমার প্রথম উপন্যাস জকি মাত্র এক কপি বিক্রি হয়। এরপর থেকে সায়েন্স ফিকশন, ভৌতিক, রোমান্টিক উপন্যাসসহ বিভিন্ন ধারার বই লেখা শুরু করি। আমি একজন পুলিশ অফিসার। গোয়েন্দা সিরিজ লিখলে আমার পেশাগত কোনো গোপনীয়তা প্রকাশ হয়ে যায় কিনা— সেটা নিয়ে একধরনের ভয়ে থাকি। এজন্য বড়দের গোয়েন্দা সিরিজ লিখি না। শিশু-কিশোরদের জন্য শিশিলিন সিরিজ লিখে থাকি। এই সিরিজটি হয়তো একটু বেশি বাস্তবসম্মত বলে শিশু-কিশোররা একটু বেশিই আনন্দ পায়। ভবিষ্যতে অবসরের পর হয়তোবা বড়দের জন্যও গোয়েন্দা উপন্যাস লিখতে পারি।’
মোশতাক আহমেদ বলেন, এবারের বইমেলায় আমার ৫০তম সায়েন্স ফিকশন ‘দ্য নিউ ওয়ার্ল্ড’ এসেছে। এর আগে এসেছিল ‘দ্য ওল্ড ওয়ার্ল্ড’। এরপর ‘দ্য নেক্সট ওয়ার্ল্ড’ লেখার পরিকল্পনা রয়েছে। নিত্যনতুন গল্প নিয়ে আমি পাঠকদের সাথে থাকতে চাই।
উল্লেখ্য, মোশতাক আহমেদ ২০১৮ সালে বাংলা একেডেমি সাহিত্য পুরস্কার এবং শিশু একাডেমি সাহিত্য পুরস্কারে ভূষিত হন। এছাড়াও তিনি কালি ও কলম সাহিত্য পুরস্কার, ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরস্কার, কৃষ্ণকলি সাহিত্য পুরস্কার এবং চ্যানেল আই সিটি আনন্দ সাহিত্য পুরস্কারসহ নানা সম্মাননায় ভূষিত হন।
অন্যদিকে লেখালেখির বিগত দু’দশকে বহুবার বইমেলা এবং অনলাইনে বই বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানসমূহে তার বই বেস্ট সেলার হয়েছে। এবারের বইমেলায়ও অনিন্দ্য প্রকাশ এর স্টলে (প্যাভিলিয়ন ২০) এবং ওয়েবসাইটে আকর্ষণীয় ছাড়ে বইগুলো পাওয়া যাচ্ছে। এছাড়া রকমারি ডটকমসহ বই বিক্রির অন্যান্য ওয়েবসাইটে উপন্যাসগুলো পাওয়া যাচ্ছে।
শিশিলিন কিশোর গোয়েন্দা রুপার সিন্দুক
‘যাত্রা’ দেখতে গিয়ে লেলিনের সাথে পরিচয় হয় যাত্রাপালার সেনাপতি জব্বার খিলজির মেয়ে সবুজ চোখের আসমার সাথে। কথাপ্রসঙ্গে জানতে পারে জব্বার খিলজির কাছে একটা রুপার সিন্দুক আছে যেখানে রয়েছে অনেক হীরা জহরত। জব্বার খিলজি তার পূর্বপুরুষের কাছ থেকে পেয়েছে রুপার সিন্দুকটি। একমাত্র বিপদগ্রস্ত হলে ঐ সিন্দুক থেকে হীরা জহরত বের করে বিক্রি করা যাবে।
জব্বার খিলজি অসুস্থ হওয়ায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় রুপার সিন্দুকটি ভাঙা হবে, কারণ চাবিটি আগেই হারিয়ে গিয়েছিল। তাই দিন ক্ষণ ঠিক হয় রুপার সিন্দুক ভাঙার। সবার মধ্যে তীব্র আগ্রহ জন্মে ঐ রুপার সিন্দুককে কেন্দ্র করে, সবাই দেখতে চায় অমূল্য হীরা, জহরত আর অলংকারাদি। আগ্রহী হয়ে ওঠে শিশির লেলিনও। সিন্দুক ভাঙার সময় দুজনেই উপস্থিত থাকবে বলে সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু রাতের অন্ধকারে আচমকাই চুরি হয়ে যায় ঐতিহাসিক গুরুত্ববহনকারী মহামূল্যবান রুপার সিন্দুকটি। ঘটনার আকস্মিকতায় সবাই যখন কিংকর্তব্যবিমূঢ়, সিন্দুক উদ্ধারে ততক্ষণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে শিশির আর লেলিন।
শেষ পর্যন্ত কি শিশিলিনের ক্ষুদে গোয়েন্দারা উদ্ধার করতে পেরেছিল মহামূল্যবান রুপার সিন্দুক? আর ওই সিন্দুকে কি আদৌ কোনো হীরা জহরত ছিল? নাকি সবকিছুই ছিল নিছক এক শূন্যতা আর গোলকধাঁধা!