হাসনাত শাহীন
প্রকাশ : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৬ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:১৪ পিএম
প্রবা ফটো
শেষ হচ্ছে অমর একুশে চেতনায় এবং অমর একুশের শহীদদের স্মরণে অনুষ্ঠিত ‘অমর একুশে বইমেলা ২০২৫’। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৯টায় দেশের ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান তাদের প্রকাশনার বইগুলো গুটিয়ে নিলেই শেষ হবে এবারের প্রাণের বইমেলা।
ক’দিন ধরেই বইমেলায় বইছিল বিদায়ের সুর; শেষের আবহ। বিদায়ের সেই সুর আর শেষের আবহও মিলিয়ে যাবে আজ। যার মধ্য দিয়ে দেশের বইপ্রেমী-পাঠক-লেখক আর প্রকাশকদের সঙ্গে আপমর জনসাধারণের মাঝে শুরু হবে আবারও এক বছরের অপেক্ষার পালা।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় আজ সকাল ১১টায় শুরু হয় এবারের প্রাণের মেলার শেষ দিনের আয়োজন। এদিন বেলা ১টা পর্যন্ত নির্ধারিত ছিল শিশুদের অবাধে বই কেনার জন্য শিশুপ্রহর। শিশুপ্রহরের এই সময়ে মেলাপ্রাঙ্গণের শিশুচত্বরে শিশুদের উচ্ছ্বাসিত বিচরণ থাকলেও মেলার অন্যান্য অংশে তেমন লোকজন চোখে পড়েনি।
এবারের মেলার এখন পর্যন্ত কেমন গেল- জানতে চাইলে মেলার পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেডের বিক্রয়প্রধান ইফতেখার আজীজ বলেন, ‘মোটেও ভালো না। ২১ সালের ভয়াল করোনার মধ্যে অনুষ্ঠিত বইমেলাও এর চেয়ে ভালো ছিল। আর গত বছরের তুলনায় এবারের বিক্রি তিন ভাগের এক ভাগও না।’
মেলায় অংশ নেওয়া অন্যান্য প্রকাশদের সঙ্গে কথা বলেও একই তথ্য পাওয়া গেছে। তারা বলছেন- মাস জুড়ে বইমেলা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। যে পরিমাণে বই বিক্রি হয়েছে তা গত বছরের তুলনায় এক-তৃতীয়াংশেরও কম। তবে অন্যান্যবারের চেয়ে এবার বেশি লোকজনকে মেলায় এসে ছবি তোলায় ব্যস্ত থাকতে দেখেছি।
অনন্যা প্রকাশনীর ফারুক আহমেদ, অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা, মুক্তধারা প্রকাশনীর প্রকাশনা ব্যবস্থাপক কামরুজ্জামান ও ইন্দ্রজিৎ সেন, রোদেলা প্রকাশনীর বিক্রয় ব্যবস্থাপক, কথাপ্রকাশ, সময় প্রকাশন, কাকলী প্রকাশনী, প্রকাশনা সংস্থা শব্দশৈলী, আফসার ব্রাদার্স, অন্বেষা প্রকাশন বাঁধন পাবলিশার্সসহ মেলার ছোট-বড় অনেক প্রতিষ্ঠানের প্রকাশক ও কর্মকর্তা এবং বিক্রয়কর্মীরা জানান, অনেকেরই এবার লোকসান হবে। বিশেষ করে ছোট প্রকাশকদের অবস্থা খারাপ। মেলা শুরুর দিকে একটু বিক্রি হয়েছিল, তারপরে বই বিক্রি কেন এমন ব্যাপক কমে গেল, সে বিষয়টি তাদের কাছেও পরিষ্কার নয়।
তারা আরও জানিয়েছেন- প্রতিবছর মেলার শুরুর দিকে তেমন বই বিক্রি হয় না। মেলার দিন যত বাড়ে ততই বইয়ের বিক্রি বাড়ে। বিশেষ করে অন্যান্য বার মেলার মাঝামাঝি সময় থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিদিনই বিক্রি বেড়েছে। কিন্তু এবার মেলার চিত্র উল্টো, এবার শুরুর কয়েকদিন কিছুটা বই বিক্রি হয়েছে। কিন্তু তারপরে যতদিন বেড়েছে মেলায় বিক্রি কমেছে। আজ এখন পর্যন্ত (বেলা ৩টার সময়) তেমন বই বিক্রি হয়নি। যা হয়েছে অন্যান্যবারের শেষ দিনের তুলনায় একে বারে নগন্য।
অন্যদিকে এবারের মেলার এবং আজকের মেলার বেচা-বিক্রি ও সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মেলার শিশু চত্বরের বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থার সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলছেনÑ মাসজুড়ে বইমেলা দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত ছিল। প্রথম দিকে মেলায় দর্শনার্থীদের আগমন ঘটলেও বিক্রি ছিল তুলনামূলক কম। তবে মেলার শেষ সপ্তাহে এসে বিক্রিও বেড়েছে বেশ। কিন্তু পুরো মাসের হিসাবে খুব খারাপ। এবার এমন বইমেলা হবে তা আশা করিনি।