হাসনাত শাহীন
প্রকাশ : ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৪ পিএম
আপডেট : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:০৮ এএম
ফাইল ফটো
প্রাণের টানে বইপ্রেমীদের মিলনমেলা অমর একুশে বইমেলা ২০২৫ শেষ হতে যাচ্ছে। রাত পোহালেই শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হবে এবারের বইমেলা। বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও চেতনার আবহে গোটা বাঙালি জাতি মেলার শেষ দিনে বিদায়ের সুরে মিশিয়ে নেবে এক বছরের অপেক্ষার অনুভূতি।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৩টায় মেলার প্রবেশদ্বার খুলে দেওয়া হলে বইপ্রেমীরা ছুটে আসেন তাদের প্রিয় বইয়ের সন্ধানে। উপন্যাস, কবিতা, ইতিহাস, গবেষণা, মুক্তিযুদ্ধ, শিশুতোষসহ সব ধরনের বইয়ের বিকিকিনিতে ব্যস্ত সময় পার করেন প্রকাশকরা।
ঐতিহ্য প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক আমজাদ হোসেন কাজল জানান, তাদের প্রত্যাশার চেয়েও বেশি বিক্রি হয়েছে, বিশেষ করে অনুবাদ, ইতিহাস, ভ্রমণকাহিনী ও গণঅভ্যুত্থানের বই। তবে অবসর প্রকাশনীর ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা এবারের মেলায় সামগ্রিক বিক্রির অবস্থা নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেন। অন্যপ্রকাশের জনসংযোগ কর্মকর্তা তৌহিদ ইসলাম জানান, প্রয়াত হুমায়ূন আহমেদের পুরোনো বইগুলোর পাশাপাশি সাদাত হোসাইন, মৌরি মরিয়ম ও লামইয়া চৌধুরীর বইগুলো বেশি বিক্রি হয়েছে।
বৃহস্পতিবার মেলায় নতুন বই এসেছে ১৭৬টি, যা মিলিয়ে এবারের মোট নতুন বইয়ের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২,৯৬৪টি। মেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘একটি অভ্যুত্থানের জন্ম ও আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণের পথ’ শীর্ষক আলোচনা সভা।
আলোচনা শেষে কবিতাপাঠ, সংগীত ও নৃত্য পরিবেশনার মাধ্যমে জমে ওঠে মেলাপ্রাঙ্গণ। অংশ নেন কবি মনজুর রহমান, ফেরদৌস আরা রুমীসহ বিশিষ্ট কবিরা। সংগীত পরিবেশন করেন ছন্দা চক্রবর্তী, ইমরান খন্দকারসহ একাধিক শিল্পী। নৃত্য পরিবেশন করে ‘লেমন নৃত্যকলা একাডেমি’।
শুক্রবার শেষ দিনে মেলা শুরু হবে বেলা ১১টায়, চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বেলা ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত থাকবে শিশুপ্রহর।
বিকাল ৫টায় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম। প্রধান অতিথি থাকবেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকী। এ ছাড়া বিভিন্ন সাহিত্য পুরস্কার প্রদান করা হবে। সভাপতিত্ব করবেন বাংলা একাডেমির সভাপতি অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক।
শেষ দিনের আবেগঘন মুহূর্তে বাংলা ভাষা, সাহিত্য ও সংস্কৃতির এ মহোৎসব বিদায় জানিয়ে পাঠকরা শুরু করবেন এক বছরের অপেক্ষা— নতুন বইমেলার নতুন আনন্দের জন্য।