শতাব্দী ভব আটক
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪১ পিএম
আপডেট : ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:৪৩ পিএম
বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা ‘সব্যসাচী’ স্টলে হামলা। প্রবা ফটো
অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশনা সংস্থা ‘সব্যসাচী’ স্টলে হামলা হয়েছে। নির্বাসিত লেখক তসলিমা নাসরিনের বই রাখার অভিযোগে স্টলটিতে হামলা করে বিক্ষুব্ধ জনতা। এ সময় তাদের রোষানলে পড়েন প্রকাশনা সংস্থাটির কর্ণধর কবি ও কণ্ঠশিল্পী শতাব্দী ভব।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে এই ঘটনা ঘটে। এর আগে শতাব্দী ভবকে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করা হয় এবং সাময়িক বন্ধ করে দেওয়া হয় স্টলটি। এরপর ভবকে আটক করে নিয়ে যায় শাহবাগ থানা পুলিশ।
শতাব্দী ভবর সহধর্মিণী মেহরান সানজানা প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, গতকাল (রবিবার) রাত থেকে বিভিন্ন পেজ ও অনলাইন মাধ্যম থেকে প্রচার করা হয় ‘সব্যসাচী’র স্টলে তসলিমা নাসরিনের বই পাওয়া যাচ্ছে। এরপর পেজ থেকে তারা আমাদের হুমকিও দেয়। বিষয়টি আমি সকালে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষকে জানাই। আর তসলিমা নাসরিনের বইগুলোও সরিয়ে নিই। এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি ও মেলার দায়িত্বে থাকা পুলিশ কর্মকর্তাদের সাথেও কথা বলি।
তিনি আরও বলেন, সোমবার বিকালে দলবেঁধে কয়েকজন যুবক আমাদের স্টলে এসে সকল বই ছুঁড়ে ফেলে তছনছ করে। এ সময় তারা ‘নারায়ে তাকবির’ বলে স্লোগান দিলে আমার স্বামী ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেয়। পরে মেলার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ এসে ভবকে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, তসলিমা নাসরিনের বই বিক্রি করা দেখে সব্যসাচীর স্টলে ভিড় করে একদল লোক। শতাব্দী ভব তখন সেখানেই বসেছিলেন। তসলিমা নাসরিনের বই কেন বিক্রি করছেন- প্রশ্নকে কেন্দ্র করে তাদের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে শতাব্দী ভব ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিলে উত্তেজিত লোকজন তাকে মারতে যায়। এ সময় তাকে কানে ধরে ক্ষমা চাওয়ার দাবিও ওঠে। এক পর্যায়ে এই লেখক হাতজোড় করেন এবং পুলিশ তাকে নিয়ে চলে যায়।
প্রত্যক্ষদর্শী ইমরান নাজির বলেন, ‘লোকজন ওই লেখককে মারতে গেলে পুলিশ বাধা দেয় এবং তাকে নিয়ে বই মেলার বাইরে চলে যায়। এ সময় শতাব্দী উত্তেজিত শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চান। শিক্ষার্থীদের উত্তেজনার মুখে বই মেলার সব্যসাচী স্টলটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ।’
এ বিষয়ে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ জানায়, সাময়িক বন্ধের পর স্টলটি খুলে দেওয়া হয়েছে। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত টাস্কফোর্সের সভার পর নেওয়া হবে।
বইমেলা টাস্কফোর্সের আহ্বায়ক ড. সেলিম রেজা সাংবাদিকদের বলেন, ‘যে ঘটনাটি ঘটেছে, সেটা অত্যন্ত দুঃখজনক। তবে সব্যসাচী স্টলটি বন্ধ করা হবে কিনা সে বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত হয়নি। স্টলটি কিছুক্ষণ বন্ধ রাখার পর এখন খোলা হয়েছে। বইমেলা কমিটি ও সেখানে থাকা টাস্কফোর্সের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তবে এ ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত।
এ বিষয়ে ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে মেহরান সানজানা লেখেন, ‘বাংলা একাডেমির মেলার মাঠের দায়িত্বে যিনি আছেন, আমাকে কল দিয়ে বললেন, তসলিমা নাসরিনের বই সরিয়ে ফেলতে। শাহবাগ থানার ওসিও একই কথা বললেন। বাধ্য হয়ে সরাতে হচ্ছে তসলিমা নাসরিনের ‘চুম্বন’ বইটি।’