নুসরাত খন্দকার
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৩ ১৪:০৮ পিএম
আপডেট : ১৪ আগস্ট ২০২৩ ১৯:৫৪ পিএম
বর্ষাকালে রুক্ষ, তেলতেলে চুল একটা সাধারণ সমস্যা। আর ইনফেকশন তো আছেই। সব মিলিয়ে স্ক্যাল্প এবং চুলের বারোটা বেজে যায় এ সময়ে। তাই প্রয়োজন সঠিক যত্ন ও একটু সাবধানতা। তাহলেই চুল থাকবে প্রাণবন্ত
এই ভিজে স্যাঁতস্যাঁতে মৌসুমে চুলের চাই বিশেষ যত্ন। নাহলেই চুল পড়া থেকে স্ক্যাল্পের নানা সমস্যায় নাজেহাল অবস্থা দেখা দিবে। রইল ঘরোয়া যত্নের কিছু টিপস
চুল শুকনো রাখুন : চুল শুকনো থাকলে, বর্ষাকালে হওয়া সমস্যাগুলোর অর্ধেকের ওখানেই ইতি ঘটবে। বৃষ্টির পানিতে অ্যাসিডের পরিমাণ সাধারণ পানির তুলনায় বেশি। এতে চুলের বেশ ক্ষতি হয়। তাই চেষ্টা করুন, যতটা সম্ভব চুল শুকনো রাখতে। ছাতার বদলে রেনকোট ব্যবহার করুন। এতেও চুল ভেজার সম্ভাবনা অনেকটা কমবে। এছাড়া চুল ভিজে গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চুল শুকিয়ে ফেলতে হবে।
শ্যাম্পুর নিয়মাবলি : সাধারণত শ্যাম্পু করার ক্ষেত্রে যা নিয়ম থাকে, বর্ষাকালে তাতেও কিন্তু বদল আনা দরকার। কারণ, বর্ষাকালে এমনিই চুলের গোড়া নরম থাকে। তাই অতিরিক্ত শ্যাম্পু বা ঘষাঘষি করলে চুল পড়া বেড়ে যায়। সপ্তাহে দুইদিন শ্যাম্পু করুন। খুব প্রয়োজন পড়লে বা চুল অতিরিক্ত তৈলাক্ত হলে তিন দিন শ্যাম্পু করুন। মাইল্ড অথচ ডিপ ক্লেনজিং শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। শ্যাম্পু করার আগে একবার চুল আঁচড়ে নেবেন। এরপর সামান্য পানিতে অল্প শ্যাম্পু গুলে, অল্প অল্প করে চুলে লাগান। সরাসরি শ্যাম্পু চুলে না লাগানোই ভাল। অ্যান্টি-হেয়ার ফল শ্যাম্পু ব্যবহার করতে পারেন। কারণ বর্ষাকালে এমনিই চুল পড়ার সমস্যা বেশি হয়। প্রতিবার শ্যাম্পু করার সময়, দুইবার শ্যাম্পু করবেন। দ্বিতীয়বার শ্যাম্পু ৩-৪ মিনিট চুলে রেখে ভালভাবে ধুয়ে নেবেন।
কন্ডিশনিং : কন্ডিশনার ব্যবহার করার কথা সকলেই জানেন। তবে অনেকেই ঠিকভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করেন না। ফলে উপকারও পান না। কন্ডিশনিংয়ের মানে একগাদা প্রডাক্ট ব্যবহার করা নয়। এক টাকার কয়েনের সমপরিমাণ কন্ডিশনার নিয়ে শুধু চুলের ডগার দিকে লাগান। চুলে যেন অতিরিক্ত পানি না থাকে। কন্ডিশনার লাগানোর পর একটি বড়া দাঁড়ার চিরুণি দিয়ে চুলের নিচের দিকটা আঁচড়ে নিন। এতে কন্ডিশনার ভালভাবে ছড়িয়ে পড়বে। স্ক্যাল্পে ভুলেও কন্ডিশনার লাগাবেন না। ৩-৪ মিনিট পর ভালভাবে চুল ধুয়ে নেবেন।
তেলকে বন্ধু করুন : তেল চুলের পুষ্টির অন্যতম প্রধান উপায়। তাই চুলকে মজবুত রাখতে, তেল মাসাজ করা আবশ্যক। শ্যাম্পু করার আগের দিন রাতে নারকেল তেল বা অলিভ অয়েল অল্প গরম করে হালকা হাতে মাসাজ করুন। জোরে ঘষবেন না। ত্বক তৈলাক্ত হলে সারারাত তেল লাগিয়ে রাখার প্রয়োজন নেই। সকালে শ্যাম্পু করার আগে ১ ঘণ্টা তেল লাগিয়ে শ্যাম্পু করে নিন। অতিরিক্ত তেল লাগাবেন না। এতে শ্যাম্পুও বেশি ব্যবহার করতে হবে, যা চুলের পক্ষে ভাল নয়।
রুক্ষতা দূর করতে : চুলের রুক্ষতার অনেক কারণ থাকতে পারে। প্রথম এবং প্রধান কারণ হল, সঠিকভাবে চুল না শুকানো। চুল শুকানোর জন্য অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করেন। এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। ড্রায়ারের গরম হাওয়ায় চুলের ফলিকল নিজস্ব আর্দ্রতা হারায় এবং রুক্ষ হয়ে ওঠে। তাই শুধু বর্ষাকাল কেন, যে কোনও মৌসুমেই ড্রায়ারের ব্যবহার কমান। অনেকেই বলবেন, স্বাভাবিকভাবে চুল শুকালেও চুল রুক্ষ লাগে। এরও কারণ আছে। ভিজে চুল গামছা বা অন্যান্য তোয়ালে দিয়ে ঘষলেও চুলের একইরকম ক্ষতি হয়। এখন বাজারে মাইক্রোফাইবারযুক্ত তোয়ালে পাওয়া যায়। এই ধরনের তোয়ালের পানি শোষণের ক্ষমতা অনেক বেশি। দ্বিতীয়ত, প্লাস্টিকের চিরুনির ব্যবহারও চুলের রুক্ষতাকে উসকে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। বড় দাঁড়ার কাঠের চিরুণি ব্যবহার করুন। অথবা কুশন হেয়ারব্রাশ ব্যবহার করুন। এতে স্ক্যাল্পে রক্ত চলাচল ভাল হয়। তৃতীয় কারণ হেয়ার সিরাম ব্যবহার না করা। সিরাম রুক্ষতার অব্যর্থ দাওয়াই। এতে চুল মসৃণ হয়। এতেও যদি রুক্ষতা না কমে, তবে এক চামচ কন্ডিশনার এবং এককাপ পানি মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে রেখে দিন। মাঝে মাঝে চুলে স্প্রে করতে পারেন। তবে স্ক্যাল্পে স্প্রে করবেন না। এছাড়া দুধ এবং মধুর মিশ্রণ খুব ভাল উপায়। চুলের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী দুধ নিয়ে তাতে এক-দু’চামচ মধু মিশিয়ে পুরো চুলে লাগিয়ে রাখুন। এতে স্ক্যাল্প পুষ্টি পাবে এবং রুক্ষতাও কমবে।
চুল পড়ার সমস্যায় : সাধারণত এই মৌসুমে একটু বেশি চুল পড়ে। তাই চুলের গোড়া শক্ত করতে আলাদা যত্ন নেওয়া প্রয়োজন।
টিপস