যাপিত জীবন ডেস্ক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:০৭ পিএম
আপডেট : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৪:১৩ পিএম
রাকিব আহমেদ একজন ব্যাংক কর্মকর্তা, চাকরি করেন ঢাকার একটি প্রাইভেট ব্যাংকে। কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের অফিস পলটিকিস, বুলিং এবং বৈষ্যমের শিকার হচ্ছেন তিনি। প্রতিনিয়ত এ ধরনের হয়রানি থেকে তার মধ্যে তৈরি হয় বিষণ্ণতা ও ক্ষোভ। কিন্তু এই ক্ষোভ কি শুধুই রাকিব সাহেবের?
‘বুলিং’ শব্দটির সঙ্গে আমাদের সমাজের বেশির ভাগ মানুষই পরিচিত। বর্তমানে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াসহ পরিবার, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা গণপরিবহনে বিভিন্নভাবে বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে মানুষ। তবে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির মধ্যে বর্তমানে আলোচিত ওয়ার্কপ্লেস বুলিং বা কর্মক্ষেত্রে হয়রানি।
কর্মক্ষেত্রে হয়রানি কী?
বিশেষ কোনো ব্যক্তি কিংবা সহকর্মীকে বিভিন্নভাবে ছোট করা, তুচ্ছতাচ্ছিল্য কিংবা হেয়প্রতিপন্ন করাই বুলিং। কর্মক্ষেত্রে একজন অফিসকর্মী যখন অন্য সহকর্মী বা সহকর্মীদের দ্বারা কোনোভাবে হেনস্থার শিকার হয়, তখন তাকে ওয়ার্কপ্লেস বুলিং বা কর্মক্ষেত্রে হয়রানি বলা হয়। বিভিন্নভাবে এ ধরনের বুলিং বা হয়রানি করা হয়-
আমাদের দেশে নারী-পুরুষ উভয়েই কর্মক্ষেত্রে হয়রানি হয়ে থাকে। বিদ্রূপ বা উপহাস, আক্রমণাত্মক ব্যবহার, নির্দিষ্ট কোনো ব্যক্তিকে উপেক্ষা করা কিংবা তার মতামত না নেওয়া, কারও ব্যাপারে আপত্তিকর মন্তব্য, বডি শেমিং বা শারীরিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে মন্তব্য কিংবা কটূক্তিমূলক কথার মাধ্যমে বুলিং করা হয়, যা করপোরেট কালচারের এক অসুস্থ প্রতিযোগিতা।
এ ছাড়া উচ্চপদস্থ সহকর্মীর দ্বারাও অফিস কর্মীদের বিভিন্নভাবে মানসিক হয়রানির শিকার হতে হয়। যেমন : কর্মীর সফলতা নিজের নামে চালিয়ে দেওয়া, কাজের দায়িত্ব অন্যের ওপর চাপিয়ে দেওয়া, সঠিক প্রশিক্ষণ ছাড়াই অতিরিক্ত কাজের নির্দেশ দেওয়া, অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করানো কিংবা ছুটির দিনে কাজের চাপ দিয়ে মানসিকভাবে হয়রানি করা।
কর্মক্ষেত্রে হয়রানির ফলাফল
কর্মক্ষেত্রে হয়রানির ফলে মানসিক ও শারীরিক, দুভাবেই নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। এর ফলে বিভিন্ন সমস্যা হয়ে থাকে।
হয়রানির সম্মুখীন হলে করণীয়
ওয়ার্কপ্লেস বুলিংয়ের শিকার হলে নিজেকেই প্রথমে এ ব্যাপারে ভূমিকা রাখতে হবে। প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে হিউম্যান রিসোর্স বা মানবসম্পদ বিভাগ থাকে। যারা অফিস কর্মীদের সুযোগ-সুবিধাসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করে। এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হলে অবশ্যই তাদের জানাতে হবে। তবে প্রতিষ্ঠানে এ ধরনের পলিসি না থাকলেও কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে।
১) বুলিং বা হয়রানকারীর সঙ্গে খোলাখুলি কথা বলতে হবে। এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকার জন্য বলতে হবে। তবে হয়রানি চূড়ান্ত পর্যায়ের হলে প্রয়োজনে আইনিব্যবস্থাও নেওয়া যায়।
২) উচ্চপদস্থ সহকর্মীদের বিরুদ্ধে এ ধরনের অভিযোগ পাওয়া গেলে প্রমাণ (স্ক্রিনশট, ভিডিও কিংবা প্রত্যক্ষদর্শী) সংগ্রহ করে রাখা উচিত।
৩) বারবার বুলিংয়ের শিকার হলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে এবং বুলিংয়ের শিকার সহকর্মীর প্রতি সহযোগিতামূলক আচরণ করতে হবে।
সুস্থ এবং সুন্দর কর্মস্থল কাজের সৃজনশীলতা বাড়িয়ে দেয় বহুগুণ। একই সঙ্গে সহকর্মীদের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ তৈরি করে। তাই আমাদের কথা কিংবা কাজে পাশের সহকর্মীর প্রতি এ ধরনের কোনো আচরণ যাতে প্রকাশ না পায় সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত।
প্রবা/দেবি/এমআই/ এসআর