অন্দরসজ্জা
লাবিবা ইরম
প্রকাশ : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১২:১২ পিএম
আপনার যদি নিজের একটা ঘর হয় তাহলে সে ঘরটা ঠিক কেমন হবে? চোখ বন্ধ করে একবার ভাবুন তো। আমি তো চোখ বন্ধ করলে দেখতে পাই ছিমছাম একটা ঘর, যে ঘরের বিছানায় খুব হালকা নকশায় ব্লক প্রিন্ট করা, জানালার পর্দাটাও মিষ্টি একটা রঙে ব্লক করা, ডাইনিং টেবিল জুড়ে যে ক্লথটা শোভা পাচ্ছে সেখানেও ব্লক প্রিন্টের ছাপ। এক কথায় আমার পুরো ঘরটা যে মোহময় করে রেখেছে সেখানের পুরোটা জুড়ে ব্লক প্রিন্ট। কখনও কখনও সব জায়গার প্রিন্ট একই রকম, আবার কখনও চাদর, পর্দা, টেবিলে ভিন্ন ভিন্ন নকশা। আমার সাজানো গোছানো ঘরটা আমি ঠিক এভাবেই কল্পনা করি। আমি যেটুকু কল্পনা করছি অনেকের ঘরে সেই বাস্তব চিত্র শোভা পাচ্ছে নান্দনিক রূপে।
শৌখিন মানুষের ঘরজুড়ে নানাভাবে জায়গা করে নিয়েছে ব্লক প্রিন্ট। মন জুড়ানো, নজরকাড়া সেসব নকশায় চোখ আটকে যাবেই। বিছানার চাদর, বালিশের কভার, কুশন কভার, টেবিল ক্লথ, চেয়ারের কভার, টেবিল রানার, পর্দা, কুইল্ট, সোফা কভারসহ নানা কিছুতেই বিভিন্ন প্রিন্টের ব্লক দেখা যাচ্ছে। বর্তমান নকশায় নানা ধরনের ফুলের মোটিফ, জ্যামিতিক প্যাটার্ন, মনস্টেরাসহ বিভিন্ন গাছের পাতা, পলকা ডট, জামদানি প্যাটার্ন শোভা পাচ্ছে।
গ্রাহকের কাছে কেন দিনদিন অন্দরসজ্জার জন্য ব্লকের চাহিদা বাড়ছে এমন প্রশ্নের উত্তরে অনলাইন পেজ ফিওরের স্বত্বাধিকারী ফেরদৌস মাহমুদ বলেন, ‘মানুষ এখন ঘর সাজাতে শৈল্পিকতা পছন্দ করে। এ কাজে মানুষের হাতের স্পর্শ বোঝা যায়, কখনও কখনও কাজে খুঁতও থাকে। এতে যেন সৌন্দর্য আরও বেড়ে যায়। প্রিন্টের চাদরে কিন্তু এ স্পর্শটা বোঝা যায় না। তা ছাড়া নকশা ও রঙ নিজের মতো করে কাস্টমাইজ করা যায় বলে গ্রাহকের মাঝে এসবের চাহিদা দিনদিন বাড়ছে।’
অনেকেই বিছানার চাদরের সঙ্গে পর্দা ও কুশন কভার মিলিয়ে নেন। ঘর সাজাতে এটা এখন বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ফেরদৌস মাহমুদ জানালেন, ‘ফিওরেতে বিছানার চাদর, বালিশের কভার, পর্দা, কোলবালিশের কভার মিলিয়ে সেট করা আছে। পছন্দের যেকোনো নকশা সেট করে মিলিয়ে নেওয়া যাবে এখান থেকে। সে ক্ষেত্রে আমাদের কয়েক দিন সময় দিতে হবে। ফিওরে সব সময় চেষ্টা করে গ্রাহকের মন যেন খুশি হয়ে ওঠে পণ্য দেখলে, এমন কাজ করতে।’
কোথায় পাবেন অন্দরসজ্জার জন্য ব্লক প্রিন্টের পণ্য
একসময় ব্লকের চাদর, কুশন কভার পাওয়া যেত দোকানে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এর চাহিদা এতটাই বেড়েছে যে বর্তমানে ফেসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে অনেক উদ্যোক্তাই নিজস্ব ডিজাইনে চাদর, কুশন কভার, টেবিল ক্লথসহ ব্লক প্রিন্টের বিভিন্ন জিনিস তৈরি করছেন। তারা তাদের নিজস্ব চিন্তায় বিভিন্ন ডিজাইন নিয়ে কাজ তো করছেনই, সঙ্গে রয়েছে গ্রাহকের পছন্দমতো নকশা ও রঙে কাস্টমাইজ করে বানিয়ে নেওয়ার সুযোগ।
ব্লক প্রিন্ট নিজে করতে চাইলে চলে যেতে হবে লেইস ফিতা ও রঙের দোকানগুলোয়। সাধারণত ব্লকের রঙের সেট তৈরিই করা থাকে এখন। এ ছাড়া যেসব দোকান শুধুই ব্লক ও বাটিকের জিনিস বিক্রি করে তারা আপনার পছন্দমতো ডিজাইনে কাঠের ব্লক ডায়েসও তৈরি করে দিতে পারবে।
যদি নিজে না করে কারিগর দিয়ে করাতে চান সে ক্ষেত্রে চলে যেতে পারেন গাউছিয়ার অপজিটে নিউমার্কেটের দ্বিতীয় তলায়। এখানে বেশ কয়েকটি ব্লকের দোকান আছে। তাদের কাছ থেকে ডাইস পছন্দ করে পছন্দের রঙে শৌখিন জিনিসটি নকশা করে আনতে পারেন।
কেমন দাম
বালিশের কভারসহ চাদর কাজ ও কাপড়ের কোয়ালিটির ওপর নির্ভর করে পেয়ে যাবেন ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে, কোলবালিশের কভার যোগ করলে লাগতে পারে আরও ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এ ছাড়া পর্দা প্রতি পিস পাবেন ৪০০ থেকে ৭০০ টাকার মধ্যে, টেবিল ক্লথ ও চেয়ারের কভারসহ সেট পাবেন ২৫০০ থেকে ৩০০০ টাকার মধ্যে। সঙ্গে টেবিল রানার নিলে যোগ হতে পারে আরো ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা। কুশন কভার ১৮০ টাকা থেকে ৩০০ টাকার মধ্যেই পেয়ে যাবেন প্রতি পিস। সবকিছুর দামই নির্ভর করবে কাপড়ের কোয়ালিটি ও কাজের ধরনের ওপর। যদি সেট হিসেবে নেন তাহলে মূল্য কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে।
ব্লকের কাপড়ের যত্ন
ব্লক করা কাপড়ের একটু আলাদা যত্ন নিলে তার রঙ স্থায়ী হয় বেশি। এমনিতেই ব্লকের রঙ কিছুদিন পর ফিকে হতে শুরু করে। সবচেয়ে দ্রুত চলে যায় সোনালি ও রুপালি রঙ, তাই এ রঙ দুটো ব্যবহার না করাই ভালো। ব্লক প্রিন্ট করা কাপড়ের যত্ন যেভাবে নিতে পারেনÑ
ছবি : ফিওরে