বরগুনা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৯:৪৫ পিএম
আপডেট : ১৭ এপ্রিল ২০২৪ ০৮:০৬ এএম
ছবি : সংগৃহীত
বরগুনার তালতলীতে এক তরুণীর বিরুদ্ধে থানায় পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন তালতলী উপজেলার নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু। পরে গোয়েন্দা পুলিশ ওই তরুণী এবং তার ‘সহযোগী’ জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরকে আটক করে। আদালতে তোলা হলে বিচারক তাদের জেলহাজতে পাঠায়। তবে তাকে পরিকল্পিতভাবে ফাঁসানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তরুণীর পরিবার।
সোমবার (১৫ এপ্রিল) আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তরুণীর জামিন আবেদন করা হয়। বিচারক মো. আরিফুর রহমান তার জামিন আবেদন নাকচ করে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর সঙ্গে ঢাকায় একটি রেস্টুরেন্টে বাচ্চুর দেখা হয়। এরপর তাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্পর্কের সুবাদে তারা পারাবাত লঞ্চে পাশাপাশি দুটি কেবিনে চড়েন। রাতে ওই তরুণী বাচ্চুর কেবিনে এসে খাবার খান এক পর্যায়ে সেখানেই শুয়ে পড়েন তিনি।
এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে, এক পর্যায়ে তরুণী বাচ্চুকে জড়িয়ে ধরে মোবাইলের ক্যামেরায় আপত্তিকর ভিডিও ধারণ করেন। বাচ্চু, মামলার সাক্ষী আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও মিনহাজুল আবেদীন মিঠুর আপত্তিকর ভিডিও মামলার অপর আসামি মো. জাহিদুল ইসলাম সবুজ ফকিরের কাছে সংরক্ষিত আছে।
বাদী কামরুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘সুপার এডিটের মাধ্যমে আপত্তিকর ছবি সামাজিকমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালায় ওই নারী। যাদের সঙ্গে এমন প্রতারণা করেছে আমরা সবাই মিলে পর্নোগ্রাফি আইনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করেছি।’
তবে ওই তরুণীর নানা অভিযোগ করে বলেন, ‘নিশানবাড়িয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ড. কামরুজ্জামান বাচ্চু, পঁচাকোড়ালিয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক হাওলাদার ও উপজেলা ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক মিনহাজুল ইসলাম মিঠু আমার নাতনিকে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। এখন উল্টো তারাই মামলার বাদী ও সাক্ষী হয়ে আমার নাতনির বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা দিয়েছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তসাপেক্ষে অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দাবি করছি।’
তালতলী থানার পরিদর্শক রনজিৎ কুমার বলেন, ‘এ ঘটনায় পর্নোগ্রাফি আইনের ৮(১)(২)(৩)(৫)-এর (ক) (৭) ধারায় মামলা করা হয়েছে। মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখায় পাঠানো হয়েছে।’
এ ব্যাপারে বরগুনা জেলা গোয়েন্দা শাখার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. বশির আলম বলেন, ‘এক অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে গেলে সমাজের বিভিন্ন জনপ্রতিনিধিসহ রাজনৈতিক নেতাদের গোপনে আপত্তিকর ভিডিও করার পেনড্রাইভ উদ্ধার করি। এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে তাদের ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসি। জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে তারা দোষ স্বীকার করে। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত অনুসারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’