জাস্টিস ফর মুনিয়া
প্রবা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১২:১৩ পিএম
আপডেট : ০৬ এপ্রিল ২০২৪ ১৪:০৯ পিএম
শনিবার সকালে সুপ্রিম কোর্টের গেটের বাইরে জাস্টিস ফর মুনিয়ার মানববন্ধন। প্রবা ফটো
বহুল আলোচিত কলেজছাত্রী মোসারাত জাহানা মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামি বুসন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) সায়েম সোবহান আনভীরসহ বাকি আসামিদের অব্যাহতি দিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই)। সেই প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে বাদীর করা নারাজি আবেদন আদালতে খারিজ করার প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘জাস্টিস ফর মুনিয়া।’
শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে সুপ্রিম কোর্টের গেটের বাইরে এক ঝটিকা মানববন্ধন থেকে এ প্রতিবাদ জানানো হয়।
আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধান কাজ ধনী ও ক্ষমতাশালীদের অপরাধ ঢাকা কি না সেই প্রশ্ন তুলে জাস্টিস ফর মুনিয়া বলছে, তা না হলে কেনইবা তারা ধর্ষণ ও হত্যার আলামত থাকা সত্ত্বেও গ্রেপ্তারও জিজ্ঞাসাবাদ ছাড়াই প্রধান আসামিকে অব্যাহতি দেবে?
সংগঠনের নেতারা জানান, পিবিআই কলেজ শিক্ষার্থী মোসারাত জাহান মুনিয়ার প্রেমিক বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যা মামলার চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন দিয়েছে। মামলার প্রধান আসামি আনভীরকে গ্রেপ্তার ও জিজ্ঞাসাবাদ না করেই পিবিআই তার এবং বাকি সাতজনের অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে জমা করে। পিবিআইয়ের তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে মামলার বাদী ভিকটিমের বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়ার নারাজি আবেদনটি গত ২০ মার্চ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল ৮-এর বিচারক খারিজ করেন। জনগণের ট্যাক্সের টাকায় চলা এ প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে বিচাপ্রার্থীরা কতটুকু সেবা পাচ্ছে? সেবা না দিয়ে সম্মানি নিতে লজ্জা লাগে কি না তাও জানতে চান তারা।
২০২১ সালের ২৬ এপ্রিল গুলশানে নিজের ভাড়া করা ফ্ল্যাটে ২১ বছর বয়সি মুনিয়ার ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়। তার বড় বোন নুসরাত জাহান তানিয়া আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) আনভীরের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় মামলা করেন। ওই বছরের ১৯ জুলাই সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গুলশান থানার ওসি আবুল হাসান ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেন। তাতে তিনি আনভীরকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেওয়ার আবেদন করেন। এরপর ওই বছরের ১৮ আগস্ট ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী থানা পুলিশের দেওয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে আনভীরকে মামলার অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেন। একই বছরের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৮-এ মুনিয়াকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগে মামলা করেন।
এ মামলায় আনভীরের সঙ্গে তার বাবা বসুন্ধরা গ্রুপের চেয়ারম্যান আহমেদ আকবর সোবহান, আনভীরের মা আফরোজা সোবহান, স্ত্রী সাবরিনা সায়েম, মডেল সাইফা রহমান মিম, ফারিয়া মাহবুব পিয়াসা ও ইব্রাহিম আহমেদ রিপনকে আসামি করা হয়।
ধর্ষণ ও হত্যা মামলার তদন্ত করে ২০২২ সালের ১৮ অক্টোবর চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেন পিবিআই পরিদর্শক গোলাম মুক্তার আশরাফ উদ্দিন। তাতে বলা হয়, আনভীরসহ অন্যদের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আদালত প্রতিবেদনটি গ্রহণ করেন।
এদিকে বাদী পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার সারওয়ার হোসেন প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আদালত বাদীর নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন। আমরা এ আদেশের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছি।’