প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ২২:৪৮ পিএম
বাংলা ভাষায় উচ্চ আদালতের রায় লেখার দাবি অনেক দিনের। কিন্তু কাজটা কঠিন জানিয়ে অগ্রসর হননি সব বিচারপতি। তবু যে মাসে বাংলা ভাষার জন্য বাঙালি প্রাণ দিয়েছে, সেই ভাষার মাসের সম্মানে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন সব রায় ও আদেশ বাংলায় লিখেছেন হাই কোর্টের একটি বেঞ্চ। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর বেঞ্চ তাদের এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে বৃহস্পতিবার (১ ফেব্রুয়ারি) সব রায় ও আদেশ বাংলায় লেখেন।
বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক মোস্তফা জামান ইসলাম দিনের কার্যক্রমের শুরুতে আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আজ ভাষার মাসের শুরু। মাতৃভাষা, বাংলা ও ভাষা শহীদদের সম্মানে আজ সব আদেশ ও রায় বাংলায় দেব। যদিও বাংলায় রায় দেওয়াটা কঠিন। তার পরও ভাষার মাসের সম্মানে আজ সব আদেশ ও রায় বাংলা ভাষায় দিতে চাই।’ এরপর কার্তালিকার শুরুতে আদেশের জন্য থাকা রিট মামলাগুলোর রায় ও আদেশ বাংলায় শুরু করেন দুই বিচারপতির বেঞ্চ।
বৃহস্পতিবার ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিন। ১৯৫২ সালের এই মাসের একুশে ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষার অধিকার দাবিতে আন্দোলনে শহীদ হন সালাম, জব্বার, শফিক, বরকত ও রফিক। বাংলাদেশের মানুষের ভাষা দিবস একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের স্বীকৃতি পেয়েছে।
গত শতকের নব্বইয়ের দশক থেকে হাই কোর্টে বাংলায় রায় ও আদেশ দেওয়া শুরু হয়। প্রয়াত বিচারপতি এ আর এম আমিরুল ইসলাম চৌধুরী বাংলায় আদেশ দেওয়া শুরু করেন।
এরপর সাবেক বিচারপতিদের মধ্যে বিচারপতি কাজী এবাদুল হক, বিচারপতি হামিদুল হক, বিচারপতি আবদুল কুদ্দুছ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক, আপিল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বাংলায় বেশ কয়েকটি রায় দেন।
বর্তমানে প্রধান বিচারপিত ওবায়দুল হাসান, আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম, বিচারপতি আবু জাফর সিদ্দিকী, বিচারপতি জাহাঙ্গীর হোসেন হাই কোর্টে থাকাকালীন বেশ কয়েকটি মামলার রায় বাংলায় দিয়েছেন।
বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর ২০১০ সালের এপ্রিল থেকে বাংলায় রায় দিয়ে যাচ্ছেন হাই কোর্টের বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন। বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালও বাংলায় রায় লেখেন। চার বছর আগে দেশের সব নদীকে আইনি অধিকার দিয়ে ‘জীবন্ত সত্তা’ ঘোষণার রায়টি লিখেছেন বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল। সর্বশেষ ২০২২ সালের অক্টোবরে একটি ‘চেক প্রত্যাখ্যান’ মামলার রায় বাংলায় দেন এ বিচারপতি।