প্রবা প্রতিবেদন
প্রকাশ : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৪:৫৯ পিএম
আপডেট : ০১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৬:২২ পিএম
অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি : সংগৃহীত
শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান অধিদপ্তরের করা মামলায় তাকে ৬ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
সোমবার (১ জানুয়ারি) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানা এ রায় ঘোষণা করেন।
আদালতে ড. ইউনূসের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন, সারা হোসেন। অন্যদিকে কলকারখানার পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান।
এদিকে ড. ইউনূসের মামলার রায় ঘিরে শ্রম আদালতে উপস্থিত হয়েছেন আলোকচিত্রী শহিদুল আলম, তার স্ত্রী একটিভিস্ট রেহনুমা আহমেদ, রাজনীতি-বিশ্লেষক ও কলামিস্ট আসিফ নজরুল।
দুপুর পৌনে ২টার দিকে এজলাসে পৌঁছান ড. ইউনূস। এজলাসের দ্বিতীয় সারির বেঞ্চে বসে রায় শোনেন তিনি। গত ২৪ ডিসেম্বর ঢাকার শ্রম আদালতের বিচারক বেগম শেখ মেরিনা সুলতানার আদালত রায়ের জন্য এদিন ধার্য করেন।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গ্রামীণ টেলিকমের ১০১ জন শ্রমিক-কর্মচারীকে স্থায়ী না করা, গণছুটি নগদায়ন না করা, শ্রমিককল্যাণ ফাউন্ডেশনে নির্দিষ্ট লভ্যাংশ জমা না দেওয়া।
রায় ঘোষণার আগে ড. ইউনূসের সর্বোচ্চ সাজা ও জরিমানা দাবি করেন বাদী পক্ষের আইনজীবী সৈয়দ হায়দার আলী। তিনি বলেন, শ্রম আদালতে মামলা শুরুর পর এই মামলাটি রায় পর্যন্ত পৌঁছাতে অন্যসব মামলার তুলনায় বেশি সময় লেগেছে। এই মামলা অনেক দ্রুতগতিতে পরিচালিত হয়েছে বলে তাদের আইনজীবীর অভিযোগ সত্য নয়।
তবে ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন সাংবাদিকদের বলেন, মামলাটি বোয়িং বিমানের চাইতেও দ্রুতগতিতে পরিচালিত হয়েছে।
মামলা চলাকালীন সময় ড. মুহাম্মদ ইউনূস আদালতে হাজির হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করে বক্তব্য দিয়েছেন। ন্যায়বিচার দাবি করে তিনি আদালতকে বলেন, আমি যা করেছি সবই মানুষের জন্য করেছি। ব্যক্তিগত লাভের জন্য কোনো কিছু করিনি। আমি যেসব উদ্যোগ নিয়েছি কোনোটিতেই ব্যক্তিগতভাবে লাভবান হওয়ার জন্য করিনি। সেটা গ্রামীণ ব্যাংক কিংবা অন্য বড় কোনো প্রতিষ্ঠানই হোক।
ড. ইউনূস বলেন, মানুষ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে মুনাফা করার জন্য। আমরাও বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে বড় করেছি। কিন্তু এসব কার্যক্রমকে আমরা সামাজিক ব্যবসা বলি। যেখানে ব্যবসার মাধ্যমে সাধারণ মানুষের উপকার হয়। এর মূল বিষয়টি হলো, এসব ব্যবসায় যিনি বিনিয়োগ করছেন তিনি কোনো মুনাফা নেবেন না। কাজেই আমি হচ্ছি এই সামাজিক ব্যবসার প্রবক্তা। বিশ্বব্যাপী এটি আমি প্রচার করার চেষ্টা করেছি। এসব কার্যক্রমের ভেতরে আমার ব্যক্তিগতভাবে মুনাফা করার কোনো উদ্দেশ্য ছিল না।
ইউনূস ছাড়াও এ মামলার অন্য তিন আসামি হলেন, গ্রামীণ টেলিকমের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফুল হাসান এবং দুই পরিচালক নুরজাহান বেগম ও মো. শাহজাহান। আদালতে তারাও নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন।