বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক
প্রকাশ : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৩:১৭ পিএম
আপডেট : ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৫:৫০ পিএম
আত্মসমর্পণ করতে রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে আদালতে উপস্থিত হন আমান উল্লাহ আমান। প্রবা ফটো
দুর্নীতির মামলায় ১৩ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানকে আত্মসমর্পণের পর কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১টার দিকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক আবুল কাশেম এই আদেশ দেন।
এদিন দুপুর ১২টা ৩৫ মিনিটের দিকে আদালতে উপস্থিত হন আমান উল্লাহ আমান। পরে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। বিচারক তার আবেদন নাকচ করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
আমানের আইনজীবী ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন বলেন, ‘আমান নির্দোষ। আমরা সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে আপিল করব। তিনি সেখানে ন্যায়বিচার পাবেন। আপিল বিভাগে খালাস পাবেন।’
তিনি বলেন, ‘তিনি (আমান) অসুস্থ। আমরা কারাগারে বিশেষ সুবিধার জন্য আবেদন করেছিলাম। বিচারক বলেছেন তিনি বিষয়টি বিবেচনা করবেন। অসুস্থ থাকায় তাকে অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতালে পাঠানোর আবেদন করেছিলাম। আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।’
এর আগে আমানের আত্মসমর্পণের খবরে সকাল থেকে আদালত চত্বরে জড়ো হতে থাকেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ তাদের দেখান সরে যেতে বলে। তখন তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল নিক্ষেপ করে আদালত চত্বর ত্যাগ করতে অপারগতা দেখায়। এ সময় তাদের সঙ্গে বিএনপিপন্থি আইনজীবীরাও ছিলেন। একপর্যায়ে পুলিশ লাঠিচার্জ করে আদালত চত্বর থেকে তাদের সরিয়ে দেয়।
দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় গত ৩ সেপ্টেম্বর আদালতে আত্মসমর্পণের পর আমানের স্ত্রী সাবেরা আমানকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। ৫ সেপ্টেম্বর সুপ্রিম কোর্টের চেম্বার জজ আদালত তার জামিন দেন। একই সঙ্গে আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ ও নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি দিন নির্ধারণ করেছেন আদালত।
এর আগে গত ৭ আগস্ট বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ ২৮১ পৃষ্ঠার রায় প্রকাশ করে। রায়ে বলা হয়েছে, রায়ের অনুলিপি পৌঁছানোর ১৫ দিনের মধ্যে আমান দম্পতিকে বিচারিক (নিম্ন) আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে আমান দম্পতির বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ৬ মার্চ রাজধানীর কাফরুল থানায় মামলা করে দুদক। ওই বছরের ২১ জুন বিশেষ জজ আদালতের রায়ে আমানকে ১৩ বছর এবং সাবেরাকে তিন বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে এ দম্পতি রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন।
২০১০ সালের ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট আপিল আবেদন মঞ্জুর করে তাদের খালাস দেন। হাইকোর্টের এ রায়ের বিরুদ্ধে দুদক আপিল করলে ২০১৪ সালের ২৬ মে হাইকোর্টের দেওয়া রায় বাতিল করে মামলাটির পুনরায় শুনানির নির্দেশ দেন আপিল বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৪ মে পুনরায় শুনানি শেষ হয়। পরে ৩০ মে হাইকোর্ট এ রায় দেন।
এরপর ৩০ মে হাইকোর্ট এ মামলায় আমানের ১৩ বছর ও তার স্ত্রী সাবেরা আমানের তিন বছরের কারাদণ্ড বহাল রেখে আদেশ দেন।