মিতু হত্যা মামলা
চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ০৯ আগস্ট ২০২৩ ২২:১৩ পিএম
ফাইল ফটো
মিতু হত্যার পর আত্মীয় কাজী আল মামুনের মাধ্যমে বাবুল আক্তারের কাছ থেকে এক লাখ টাকা নিয়েছিলেন এই হত্যা মামলার আসামি কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা। বুধবার (৯ আগস্ট) চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ মো. জসিম উদ্দিনের আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে মামুন এসব বলেন।
আদালতে কাজী আল মামুন বলেন, ‘২০১৬ সালের জুন মাসের শুরুর দিকে মুছার মোবাইল, যার শেষ দুই ডিজিট ৯১, সেটি থেকে আমাকে ফোন দেন। ফোন করে আঙ্কেল (মুছা) বলেন, তোমার নম্বরে বিকাশ আছে? আমি বলি, আমার দুটি নম্বরই বিকাশ করা। আমি পাল্টা জানতে চাই, আঙ্কেল আমার বিকাশ নম্বর কেন চাচ্ছেন? তখন তিনি বলেন, আমার এসপি স্যারের এক লোক আমাকে কিছু টাকা পাঠাবে। তখন আমি আবার বলি, আপনার টাকা আমার কাছে কেন পাঠাবেন? তখন তিনি (মুছা) বলেন, আমি চিটাগাংয়ে নাই, বাইরে আছি। তিনি বলেন, তুমি ক্যাশ করে রাখিও। আমার কোনো লোক পরে পরিচয় দিয়ে যোগাযোগ করলে (বিকাশ নম্বর দিলে) তুমি টাকাগুলো বিকাশ করে দিও।’
কাজী আল মামুন কামরুল ইসলাম শিকদার মুছা স্ত্রীর বোনের মেয়ে আবেদা জান্নাত মিমের সাবেক স্বামী। তার গ্রামের বাড়ি নড়াইলের লোহাগাড়া থানার খলিসাখালি গ্রামে। তার নাসিম টিউটোরিয়াল নামে একটি কোচিং সেন্টার আছে। পাশাপাশি ‘দৈনিক বাংলাদেশের আলো’ নামে একটি জাতীয় দৈনিকের স্থানীয় প্রতিনিধি তিনি।
কাজী আল মামুন জানান, আত্মীয়তার সুবাদে ২০১৬ সালের শুরুর দিকে মুছা স্বপরিবারে মামুনের গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে যান। তখনই মুছার সঙ্গে মামুন প্রথম দেখা ও পরিচয়।
মামুন বলেন, ‘সেই সুবাদে মাঝে মাঝে মুছা আমার দুটি এবং আমার স্ত্রীর মোবাইল নম্বরে ফোন করতেন।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে কাজী আল মামুন আদালতে বলেন, ‘এরপরে সম্ভবত ২০১৬ সালের ১০ জুন সন্ধ্যার দিকে আমাকে ফোন করা হয়। মোবাইল নম্বরটির শেষ দুই ডিজিট সম্ভবত ৩১। ফোন করে এক লোক বলেন, আমি মুছাকে চিনি কি না? তখন আমি বলি, হ্যাঁ মুছা আমার আত্মীয়, তাকে আমি চিনি। আমি তাকে জিজ্ঞেস করি, আপনি কে? তখন তিনি বলেন, আমি মুছা এবং এসপি বাবুল আক্তার স্যারের পরিচিত লোক।’
মামুন বলেন, ‘তিনি (টেলিফোন করা ব্যক্তি) বলেন, মুছা আপনার কাছে কিছু টাকা পাঠাতে বলেছে, আপনার বিকাশ নম্বর দেন। তখন আমি নিজের দুটো ফোন নম্বর তাকে দেই। উনি বলেন, দুটো নম্বরে তো ২৫ হাজার করে মোট ৫০ হাজার টাকা যাবে। আমি আপনাকে টাকা পাঠাব এক লাখের মতো। আপনি আরও একটি নম্বর দেন। পরে আমার বন্ধু মোস্তাইনের দোকান আছে (বিকাশ এজেন্ট), তার নম্বরটি দেই। সেই নম্বরটি এখন মনে নেই। কিছু সময় পরে, আমার দুটি নম্বরে ২৫ হাজার করে মোট ৫০ হাজার এবং মোস্তাইনের বিকাশ এজেন্ট নম্বরে ৪৯ হাজার টাকা আসে। দোকানের নম্বরে আসা টাকাটা আমি ক্যাশ করে নিয়ে যাই। আমার দুটি নম্বরে থাকা টাকা মোবাইলেই থাকে।’
কাজী আল মামুন আরও বলেন, ‘এর দুই দিন পরে এক লোক মুছার রেফারেন্স দিয়ে বলে আমি চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া থেকে বলছি। নাম বলেছিল, এ মুহূর্তে স্মরণ নেই। তিনি বলেন, তোমার কাছে যে টাকাগুলো পাঠিয়েছিল তা পাঠিয়ে দাও। কয়টা ফোন নম্বর দিয়েছিল এখন তা মনে নেই। আমার নিজের মোবাইলে যে টাকাগুলো ছিল সেগুলো ট্রান্সফার করে দেই। আর নগদ টাকা থেকে ১৮ হাজার ৫০০ টাকা মোস্তাইনের দোকান থেকে আরেকটি ফোন নম্বরে বিকাশ করে পাঠিয়ে দেই। অবশিষ্ট ৩১ হাজারের কিছু বেশি টাকা (ওইদিন বা পরের দিন) আরেকটি নম্বর দিলে সেটিতে পাঠিয়ে দেই।’