× ই-পেপার প্রচ্ছদ বাংলাদেশ রাজনীতি দেশজুড়ে বিশ্বজুড়ে বাণিজ্য খেলা বিনোদন মতামত চাকরি ফিচার চট্টগ্রাম ভিডিও সকল বিভাগ ছবি ভিডিও লেখক আর্কাইভ কনভার্টার

আসামি খালাস হলে তদন্ত কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা

আলাউদ্দিন আরিফ

প্রকাশ : ০১ জুন ২০২৩ ১২:৩৭ পিএম

আপডেট : ০১ জুন ২০২৩ ১২:৩৮ পিএম

ফাইল ফটো

ফাইল ফটো

আদালতে পুলিশ অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দেওয়ার পর ২৩ শতাংশ মামলায় আসামির সাজা হয়। আর ৭০ শতাংশ মামলার আসামিই খালাস পান। এ ছাড়া অন্যভাবে নিষ্পত্তি হয় ৬ শতাংশ মামলা। এই পরিপ্রেক্ষিতে সাজার হার বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপ নিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর। 

এ ছাড়া যেসব তদন্ত কর্মকর্তার (আইও) অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়ার পরও আসামি খালাস পেয়ে যান; তাদের মামলার তদন্ত থেকে বিরত রাখা সিদ্ধান্ত হয়েছে। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের তদারকি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়। একই সঙ্গে অভিজ্ঞ কর্মকর্তা অথবা যেসব অভিজ্ঞ পুলিশ কর্মকর্তা অবসরে গেছেন তাদের দিয়ে নতুনদের প্রশিক্ষণের কথা বলা হয়েছে। সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরের ত্রৈমাসিক অপরাধবিষয়ক সভা এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের একাধিক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়।

গত ১৭-১৮ মে অনুষ্ঠিত পুলিশের ত্রৈমাসিক অপরাধবিষয়ক সভায় বলা হয়, সারা দেশে তদন্তাধীন মোট মামলার সংখ্যা ৯৩ হাজার ১৫৬টি। এর মধ্যে অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে ৪৫ হাজার ৮১০টির। মোট মামলার মধ্যে ৪৪ হাজার ৯৮১টি গত বছরের। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত মামলা হয়েছে ৪৮ হাজার ১৭৫টি। মামলার তুলনায় অভিযোগপত্র দাখিলের হার ৯২ দশমিক ৯৩ শতাংশ। চার্জশিটভুক্ত আসামির সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজার ৮৩৬ জন। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৬৭ হাজার ৬১১ জনকে। শতকরা হিসাবে আসামি গ্রেপ্তারের হার ৫৬ দশমিক ৮৯। চার্জ গঠন করা হয়েছে ১৬ হাজার ৬০৯টি মামলার। চূড়ান্ত রিপোর্ট দেওয়া হয়েছে ৩ হাজার ৪৮৬টির। মুলতবি মামলার সংখ্যা ৪৩ হাজার ৮৬০টি। সাজা হয়েছে ৮ হাজার ৪৭টি মামলায়। খালাস পেয়েছেন ২৪ হাজার ৫৮৫ মামলার আসামি। অন্যভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে ২ হাজার ৮৯ মামলা। 

সভায় আরও বলা হয়েছে, মোট মামলার ৯২ দশমিক ৯৩ শতাংশ চার্জশিট, ৭ দশমিক শূন্য ৭ শতাংশ চূড়ান্ত রিপোর্ট ও ২৩ দশমিক ১৮ শতাংশ সাজা, ৭০ দশমিক ৮১ শতাংশ মামলায় আসামি খালাস ও অন্যভাবে নিষ্পত্তি হয়েছে ৬ দশমিক শূন্য ১ শতাংশ। 

সম্প্রতি পুলিশ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত এক সভায় সিদ্ধান্ত হয়, তদন্ত কর্মকর্তাদের মধ্যে যাদের অভিযোগপত্র আদালতে দেওয়ার পর আসামি খালাস পেয়ে যান, তাদের তদন্ত দেওয়া থেকে বিরত রাখতে হবে। সাজার হার কম থাকা দীর্ঘদিনের সমস্যা। এটি বাড়ানোর দিকে গুরুত্ব দিলে দীর্ঘদিনের অচলায়তন থেকে বের হওয়া যাবে। সাজার হার বৃদ্ধি পেলে পুলিশের গ্রহণযোগ্যতা বাড়বে। প্রসিকিউশনে মামলার ডকেট হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখতে হবে।

এ বিষয়ে পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) আতিকুল ইসলাম প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘যেসব কর্মকর্তার তদন্ত প্রতিবেদন আদালতে দেওয়ার পরও আসামি খালাস পেয়ে যায়, সেসব কর্মকর্তাকে তদন্ত থেকে বিরত রাখা হবে। এটা আমাদের অপরাধবিষয়ক সভায় সিদ্ধান্ত হয়। পরে একটি নির্দেশনা পুলিশের সংশ্লিষ্ট সব ইউনিটে পাঠানো হয়েছে।’

যেসব কর্মকর্তার তদন্তে আসামি খালাস পেয়ে যায়, তাদের তদন্তভার না দেওয়া ও পুলিশের মামলায় সাজার হার বাড়ানোর জন্য করণীয় কী- এমন প্রশ্নে অপরাধ বিশ্লেষক ও সাবেক আইজিপি নূর মোহাম্মদ বলেন, থানা পুলিশের মূল কাজ মামলায় মানসম্পন্ন তদন্ত করা। আমরা বলে থাকি ‘প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ প্রশিক্ষণ’। ভালো তদন্তের জন্য উন্নত প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। মানসম্মত প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিতে হবে। সাধারণত এসআই পদমর্যাদার কর্মকর্তারা মামলার তদন্ত করে থাকেন। কিছু ক্ষেত্রে এএসআই বা আলোচিত ও চাঞ্চল্যকর মামলা হলে ইন্সপেক্টর, সহকারী পুলিশ সুপার বা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পদমর্যাদার কর্মকর্তারাও তদন্ত করেন। তদন্তের দুর্বলতার দায়ভার শুধু তদন্ত কর্মকর্তার ওপর চাপালেই হবে না। তার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যারা থাকেন যেমন, সার্কেল এসপি, এসপি তাদেরও জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে। তাদের কোনো অবহেলা আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখা জরুরি। তাদের অবহেলা পাওয়া গেলে শাস্তির আওতায় আনা যায়।

তিনি আরও বলেন, অনেক ক্ষেত্রে মামলার তদন্তকালে আর্থিক লেনদেনের মতো গুরুতর অভিযোগও শোনা যায়। এরকম কোনো অভিযোগ উঠলে সেগুলো খতিয়ে দেখা জরুরি।

সাবেক এই আইজিপি বলেন, যারা দুর্বল, দায়সারা বা উদ্দেশ্যমূলক তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে তাদের শাস্তির আওতায় আনা উচিত। আবার যারা ভালো তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করবে তাদের পুরস্কৃত করতে হবে; প্রশংসাপত্র দিতে হবে। পুলিশে এজন্যই বিপিএম, পিপিএমসহ বিভিন্ন পুরস্কারের ব্যবস্থা চালু হয়েছে। যারা ভুল তদন্ত করবে তাদের কোনোভাবেই পুরস্কৃত করা যাবে না। 

নূর মোহাম্মদ বলেন, শুধু মুখে বললে হবে না, দৃষ্টান্তমূলকভাবে ২/৩টা শাস্তি দিলে সবার কাছে বার্তা চলে যাবে যে, ভুলভাল বা দায়সারা তদন্ত করা যাবে না। 

শেয়ার করুন-

মন্তব্য করুন

Protidiner Bangladesh

সম্পাদক : মুস্তাফিজ শফি

প্রকাশক : কাউসার আহমেদ অপু

রংধনু কর্পোরেট, ক- ২৭১ (১০ম তলা) ব্লক-সি, প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড) ঢাকা -১২২৯

যোগাযোগ

প্রধান কার্যালয়: +৮৮০৯৬১১৬৭৭৬৯৬ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (প্রিন্ট): +৮৮০১৯১১০৩০৫৫৭, +৮৮০১৯১৫৬০৮৮১২ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন (অনলাইন): +৮৮০১৭৯৯৪৪৯৫৫৯ । ই-মেইল: [email protected]

সার্কুলেশন: +৮৮০১৭১২০৩৩৭১৫ । ই-মেইল: [email protected]

বিজ্ঞাপন মূল্য তালিকা