হট্টগোলের মধ্যে তারেক-জোবাইদার মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ

জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও তার স্ত্রী জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন শাহ আলম নামের একজন।

বুধবার (৩১ মে) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে তিনি সাক্ষ্য দেন। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আদালত বৃহস্পতিবার দিন নির্ধারণ করেন।

দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল বিষয়টি প্রতিদিনের বাংলাদেশকে নিশ্চিত করেছেন।

এই মামলায় চার্জশিটভুক্ত ৫৬ সাক্ষীর মধ্যে এখন পর্যন্ত আটজনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে।

এদিন বেলা ২টার পর আদালতের এজলাসের বাইরে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা। অপরদিকে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরাও আদালতের বাইরে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষের আইনজীবীরা বিভিন্ন স্লোগান দেন। এর মধ্যেই বিচারক এজলাসে বসলে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে আদালতপাড়ায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়। মঙ্গলবার এই মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের সময় আদালতে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ মো. আছাদুজ্জামানের আদালতে সাক্ষ্যগ্রহণের সময় বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা আদালত কক্ষে অবস্থান নিলে অচলাবস্থা তৈরি হয়। তখন বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান। অন্যদিকে আদালতের বাইরে আওয়ামীপন্থি আইনজীবীরা অবস্থান নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। এ ঘটনার জেরে বুধবারও আদালতে পুনরায় হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। 

এদিকে ২১ মে মামলার বাদী দুদকের উপপরিচালক জহিরুল হুদার সাক্ষ্যের মাধ্যমে মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

গত ১৩ এপ্রিল একই আদালত তারেক রহমান ও তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন। এ মামলায় তাদের পলাতক দেখানো হয়েছে। গত বছরের ১ নভেম্বর একই আদালত তারেক ও জোবাইদার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন।

গত বছরের ২৬ জুন হাইকোর্ট তারেক ও জোবাইদাকে ‘পলাতক’ ঘোষণা করে ৪ কোটি ৮২ লাখ টাকার দুর্নীতি মামলা করেন ও তার প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে করা পৃথক রিট আবেদন খারিজ করে দেন। রিট খারিজ করে দেওয়া রায়ে হাইকোর্ট একই সঙ্গে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় করা এ মামলার স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার করে নিয়ে সংশ্লিষ্ট নিম্ন আদালতকে যত দ্রুত সম্ভব বিচার কার্যক্রম শেষ করার নির্দেশ দেন। এ ছাড়া ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটকে এ রায় পাওয়ার ১০ দিনের মধ্যে মামলার রেকর্ড ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠাতে বলা হয়।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, জ্ঞাত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া এবং সম্পদের তথ্য গোপন ও জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা করে দুদক। মামলায় তারেক রহমান, জোবাইদা রহমান ও তার মা ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। তারেক রহমানের শাশুড়ি মারা যাওয়ায় এই মামলা থেকে তাকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।