মেহেরপুর প্রতিবেদক
প্রকাশ : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:১৯ পিএম
আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০২৩ ১৯:৩৬ পিএম
মেহেরপুর সদর উপজেলার সকল বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের সেবা পরিস্থিতিসহ সব দিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন মেহেরপুরের আমলী আদালতের বিচারক এসএম শরীয়ত উল্লাহ।
গত ২২ জানুয়ারি মেহেরপুর সরকারি কলেজের সামনে দারুস সালাম ক্লিনিকে অপারেশন টেবিলে সুমাইয়া নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা নজরে এনে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে সোমবার (৩০ জানুয়ারি) এই আদেশ দেন। মেহেরপুরের সিভিল সার্জনকে সদর উপজেলার সকল বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টারের তালিকা ৯ ফেব্রুয়ারির মধ্যে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন এই আদালত। তাছাড়া আদালত সুমাইয়া খাতুনের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তের আদেশ দিয়েছেন পুলিশকে। আদেশে পুলিশকে আরও বলা হয়েছে, জেলার সকল বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের বৈধতা যাচাই ও যথাযথভাবে কার্যক্রম পরিচালনার সক্ষমতা আছে কি না তা তদন্ত করতে হবে। তদন্ত প্রতিবেদন দিতে হবে আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারির মধ্যে।
প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি রেগুলেশন অধ্যাদেশ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন অনুযায়ী নির্ধারিত মানদণ্ড অনুসরণ না করলে সেটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। এসব স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান আইন অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে কি না তা খতিয়ে দেখতে বলেছেন আদালত। আদালত আদেশে উল্লেখ করেছেন, প্রায়ই মেহেরপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে চিকিৎসায় অবহেলা এবং বিধিবহির্ভূতভাবে ক্লিনিক পরিচালনার অভিযোগ আসে। এর সাথে সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্য জড়িত। একজন অসুস্থ মানুষ চিকিৎসক ও ক্লিনিকের ওপর আস্থা এবং বিশ্বাস স্থাপন করে নিজের শরীরের ওপর হস্তক্ষেপ করার অধিকার দেন। হাসপাতাল, ক্লিনিক বা চিকিৎসকের অবহেলা একজন রোগীর সাথে প্রতারণা এবং বিশ্বাস ভঙ্গের শামিল, যা দণ্ডবিধির ৪০৬ ও ৪২০ অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
আদালতের আদেশে দারুস সালাম ক্লিনিকের লাইসেন্স আছে কি না, যথাযথ কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ক্লিনিকটি অনুমোদিত হয়ে থাকলে সেটা নবায়নকৃত কি না, পরিবেশ অধিদপ্তর ও ফায়ার সার্ভিসসহ সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের ছাড়পত্র এবং অনুমোদন আছে কি না, ক্লিনিকটিতে সার্বক্ষণিক ডাক্তার আছেন কি না, অপারেশন পরিচালনাকারী ডাক্তারের সার্জারি ডিগ্রি ছিল কি না, অপারেশনের সময়ে অ্যানেস্থেসোলজিস্ট হিসেবে কোনো উপযুক্ত ডাক্তার উপস্থিত ছিলেন কি না, প্রি-অ্যানেস্থেটিক চেকআপসহ অপারেশনের জন্য নির্দিষ্ট মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়েছিল কি না, সহায়ক নার্সদের উপযুক্ত ডিগ্রি ছিল কি না, এছাড়া চিকিৎসক অনুশীলন এবং প্রাইভেট ক্লিনিক ও ল্যাবরেটরি রেগুলেশন অধ্যাদেশ এবং বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিল আইন ২০১০ অনুযায়ী নির্ধারণ মানদণ্ড অনুসরণ করা হয়েছে কি না সে সম্পর্কিত বিশেষজ্ঞ মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।