চট্টগ্রাম অফিস
প্রকাশ : ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৭:৩২ পিএম
আপডেট : ২২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৮:১২ পিএম
কঠোর নিরাপত্তায় আসামি বাবুল আক্তারকে নেওয়া হয় আদালতে। ফাইল ফটো
পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানার করা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে রিমান্ড আবেদন নাকচ করেছেন আদালত। একই সঙ্গে বাবুলের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলতে এক ঘণ্টা সময় দিয়েছেন আদালত।
রবিবার (২২ জানুয়ারি) চট্টগ্রামের অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম মোহাম্মদ আব্দুল হালিমের আদালতে শুনানি শেষে এই আদেশ দেওয়া হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) কামরুল হাসাান।
প্রতিদিনের বাংলাদেশকে তিনি বলেন, ‘সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে করা মামলায় সাত দিন রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেছিল পিবিআই। শুনানি শেষে আদালত রিমান্ড আবেদন নাকচ করেছেন। এ ছাড়াও বাবুল আক্তারকে আইনজীবীদের সঙ্গে একান্তে আলাপ করতে এক ঘণ্টা সময় দিয়েছে আদালত। এ আলাপের জন্য আদালত পুলিশের সহকারী কমিশনারের কক্ষ নির্ধারণ করে দেন।’
বাবুল আক্তারের আইনজীবী গোলাম মাওলা মুরাদ প্রতিদিনের বাংলাদেশকে বলেন, ‘আসামিপক্ষে আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলার সুযোগ চেয়ে আবেদন করা হয়েছিল। আদালতের অনুমতিক্রমে বেলা দুটার পর আসামির সঙ্গে মামলার বিষয়ে কথা বলেছি।’
এর আগে গত বছরের ১৭ অক্টোবর রাতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রো অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা খুলশী থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে আদালতে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় ২৪ নভেম্বর আদালত বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার দেখানোর আদেশ দেয়। একই ধরনের আরেকটি মামলা বাবুল ও তার স্বজনদের বিরুদ্ধে করেছেন পিবিআই প্রধান বনজ কুমার মজুমদার। ওই মামলায় ঢাকার একটি আদালতের নির্দেশে বাবুল আক্তারকে ইতোমধ্যে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। চট্টগ্রামের মামলায় বাবুলের সঙ্গে আসামি করা হয়েছে তার ভাই মো. হাবিবুর রহমান লাবু ও বাবা আব্দুল অয়াদুদ মিয়াকে।
মামলার অভিযোগে বাদী উল্লেখ করেছেন, বাবুল আক্তারসহ অন্য আসামিরা মাহমুদা খানম মিতু হত্যা মামলার তদন্ত ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার ষড়যন্ত্র করছেন। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইলিয়াস হোসেনকে দিয়ে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন তথ্য দিয়ে ‘স্ত্রী খুন, স্বামী জেলে, খুনি পেয়েছে তদন্তের দায়িত্ব’ শিরোনামে ফেসবুক ও ইউটিউবে ডকুমেন্টারি ভিডিও প্রচার করেছেন। ভিডিওতে যে বক্তব্য রয়েছে তার মাধ্যমে রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি এবং বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করা হয়েছে।
পিবিআইপ্রধান ও বিশেষ পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা জানান, মামলার আগে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর আদালতে মামলার আর্জি জমা দিয়েছিলেন বাবুল আক্তার। সেই আর্জিতে পিবিআইপ্রধানসহ ছয় পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছিল। শুনানি শেষে আদালত ২৫ সেপ্টেম্বর বাবুলের আবেদন খারিজ করেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালত।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুল বাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। হত্যাকাণ্ডের পর নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতপরিচয় কয়েকজনকে আসামি করে একটি মামলা করেছিলেন তৎকালীন পুলিশ সুপার বাবুল আক্তার। পিবিআইয়ের তদন্তে বাদী বাবুল আক্তার আসামি হিসেবে চিহ্নিত হন এবং পরে কারাগারে যান।